কলকাতা: বলের ঘূর্ণিতে প্রতিপক্ষ ব্যাটারের রাতের ঘুম কেড়ে নিতেন। অধিনায়ক হিসাবেও নতুন পথ দেখিয়েছিলেন শেন কিথ ওয়ার্ন (Shane Warne)।


১৪ বছর কেটে গিয়েছে। সদ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। দেশ জুড়ে টি-টোয়েন্টি হাওয়া। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ঠিক করল, শুরু হবে নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। আইপিএল (IPL)। আট দলের খেলা। রাজস্থান রয়্যালস (Rajasthan Royals) অধিনায়ক করল শেন ওয়ার্নকে। তারপরই শোরগোল। নতুন দল, আনকোরা ক্রিকেটার নিয়ে প্রথম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হল ওয়ার্নের রাজস্থান। আর অধিনায়ক হিসাবে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করে দিলেন ওয়ার্ন।


অজি কিংবদন্তির প্রখর ক্রিকেটবুদ্ধি এখনও মনে গেঁথে রয়েছে পঙ্কজ সিংহের (Pankaj Singh)। রাজস্থানের পেসার প্রথম আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন রাজস্থান রয়্যালস দলের সদস্য়। রাজস্থান রয়্যালসে ওয়ার্নের নেতৃত্বে খেলেছেন দুই মরসুম। শুক্রবার জয়পুর থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি লাইভকে পঙ্কজ বললেন, 'ভীষণ খারাপ খবর। বিশ্বাসই করতে পারছি না।'


কেমন ছিল অধিনায়ক ওয়ার্নের মস্তিষ্ক? পঙ্কজ বলছেন, 'মাঠে প্রতিপক্ষদের চমকে দিত। ঝুঁকি নিতে ভয় পেত না। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যে স্পিনার দিয়ে বোলিং শুরু করা যায়, ওয়ার্নই দেখিয়েছিল। বাঁহাতি স্পিনার দিয়ে পাওয়ার প্লে-তে বল করানো থেকে শুরু করে ফিল্ড প্লেসমেন্ট, সবেতেই ছিল অভিনবত্ব।'


ওয়ার্নের প্রখর ক্রিকেটবুদ্ধির আর একটি গল্প শোনালেন পঙ্কজ। বললেন, 'আইপিএলে নতুন একটা ব্যাপার চালু করেছিল ওয়ার্ন। আইপিএল হয় গ্রীষ্মে। তাই ম্যাচের আগে আমাদের ওয়ার্ম আপ করার ধরন বদলে দিয়েছিল। টসের পর আমরা ওয়ার্ম আপ করতাম। যা ভীষণ অভিনব ছিল। ওয়ার্ন মনে করত, মে-জুনে ভারতে অত গা ঘামানোর দরকার নেই। এনার্জি বাঁচিয়ে রাখতে হয়।' যোগ করলেন, 'ওয়ার্নের কিছু সিদ্ধান্ত বাইরে থেকে মনে হতো হঠকারী। কিন্তু প্রত্যেক সিদ্ধান্তের পিছনে থাকত কৌশল। সুপরিকল্পনা। যাকে ওয়ার্ন নিজে বলত স্মার্ট মুভ। সব সময় জেতার চেষ্টা করত। বুঝিয়ে দিত, আমরা ম্যাচ জিততে এসেছি। শুধু ক্রিকেটার হিসাবে নয়, মানুষ হিসাবেও কিংবদন্তি।'


কিছু বড় নামের পাশাপাশি এক ঝাঁক অজানা-অখ্যাতদের নিয়ে রাজস্থান রয়্যালসকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। পঙ্কজ বলছেন, 'তরুণদের ভীষণ উৎসাহ দিত। আনকোরাদের তুলে এনেছিল। স্বপ্নিল আসনোদকর, রবীন্দ্র জাডেজা, সিদ্ধার্থ ত্রিবেদীদের সমর্থন করে, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে, আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে তারকা তৈরি করেছিল। মেন্টর হিসাবেও ওয়ার্ন অনবদ্য।' কিংবদন্তির প্রাক্তন সহযোদ্ধা যোগ করলেন, 'মাঠের বাইরে জীবন খুব উপভোগ করত। মাঠে একশো শতাংশের বেশি চাইতো। পাশাপাশি বলত, জীবনটাকে বাঁচো। খুশি থাকো।'


ওয়ার্ন-মুগ্ধতা এখনও ঘিরে রেখেছে রাজস্থান পেসারকে।