কাতার: জুনিয়র স্তরে তিনি ভারতের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন ঠিকই। কিন্তু সিনিয়র দলের হয়ে এর আগে কখনও নামেননি। কখনও ভাবেনওনি যে এখনই জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার সুযোগ চলে আসবে। কিন্তু শনিবার সিনিয়র দলে যে রকম অভিষেক হল, তা বেশ অবাক করে দেয় দীপক টাঙরিকে।


আন্তর্জাতিক সিনিয়র ফুটবলে অভিষেক, তাও আবার এএফসি এশিয়ান কাপের ম্যাচে, একজন ভারতীয় ফুটবলারের কাছে এর চেয়ে স্মরণীয় অভিষেক আর কী হতে পারে? 


শনিবার কাতারে আল রায়ানের আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে বিশ্বের ২৫ নম্বর ও এশিয়ার চার নম্বর দল অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে অসাধারণ রক্ষণাত্মক ও ভয়ডরহীন ফুটবল খেলে ভারতের যে দল, তার প্রথম এগারোয় মাঝমাঠ সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় টাঙরিকে। যা তাঁর কাছে ছিল বেশ অপ্রত্যাশিত। 


''যখন সম্ভাব্য তালিকায় নিজের নাম দেখি, তখন ভেবেছিলাম, ধাপে ধাপে এগোতে হবে আমাকে। ২৬ জনের মধ্যে থাকতে গেলে ক্লাবের হয়ে ভাল খেলতে হবে আমায়। যখন ২৬ জনের তালিকায় চলে এলাম, তখন প্রস্তুতি শিবিরে নিজের সেরাটা দেওয়াই ছিল আমার লক্ষ্য'', সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে বলেছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মিডফিল্ডার। 


তিনি বলেন, ''ভেবেছিলাম অনুশীলনে ভাল করলে আমাকে হয়তো প্রথমে পরিবর্ত খেলোয়াড়দের তালিকায় রাখা হবে এবং পরে কোনও ম্যাচে প্রথম এগারোয় সুযোগ পাব। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই যে শুরু থেকে খেলার সুযোগ পেয়ে যাব, ভাবতে পারিনি।'' 


অস্ট্রেলিয়ার মতো বিশ্বমানের দলের বিরুদ্ধে তাঁর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পাঞ্জাবের বিলগা থেকে উঠে আসা তরুণ ফুটবলার জানান, “মাঠে নেমে দেখলাম, সবাই আমাদের নামে জয়ধ্বনি দিচ্ছে। চার দিকে জাতীয় পতাকা। মনে হল যেন দেশের মাঠেই খেলতে নেমেছি। এই স্তরে খেলা, আমার কাছে এ এক সম্পূর্ণ অন্য রকমের অভিজ্ঞতা। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দলের শেপ ধরে রাখার জন্য আমরা খুব পরিশ্রম করেছি। কিন্তু ওরা এমন একটা দল যে, বিপক্ষের সামান্যতম ভুলও ওরা কাজে লাগিয়ে নেয়। আমাদের ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে”। 


দলের সিনিয়ররা, যেমন সুনীল ছেত্রী, গুরপ্রীত সিং সান্ধু, সন্দেশ ঝিঙ্গন, রাহুল ভেকেদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন ও অনেক সাহায্য পেয়েছেন বলে জানালেন টাঙরি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ''ওদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। ছেত্রী ভাই আমাদের বলেন, কোন পরিস্থিতিতে কী রকম প্রতিক্রিয়া দেখাতে হয়। সন্দেশ পাজি সোজাসাপ্টা কথা বলতে ভালবাসেন। আমাদের কার কী ভুল হচ্ছে, উনি তা ধরিয়ে দেন এবং কী বলে দেন, কী করলে সেই ভুলগুলো আর হবে না। ওঁরা সবাই খুব ভাল নেতা ও সিনিয়র এবং আমরা ওঁদের কাছ থেকে প্রচুর শিখি।'' 


পুত্রের এমন গর্বের দিনেও অবশ্য তাঁর ব্যবসায়ী বাবা দীপকের খেলা দেখেননি। “আমার বাবা কোনও দিনই আমার খেলা দেখেন না। কারণ, উনি খুব নার্ভাস হয়ে যান। ম্যাচের পর বাবাকে ফোন করেছিলাম। তবে ততক্ষণে মায়ের সব বলা হয়ে গিয়েছে”, বলেন টাঙরি।                                    তথ্য: আইএসএল মিডিয়া