মুম্বই: আইপিএলের জন্য কোয়ারেন্টিনে যেতে হয়েছিল সেই অগাস্টে। দেশেই নিভৃতবাস পর্ব কাটিয়ে প্রত্যেকে উড়ে গিয়েছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। সেখানে ত্রয়োদশ আইপিএলে অংশগ্রহণ করেছেন অজিঙ্ক রাহানে, রোহিত শর্মারা। তারপর দুবাই থেকেই অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে উড়ে গিয়েছিলেন রাহানে, পৃথ্বী শ-রা। রোহিত চোটের শুশ্রূষার জন্য মাঝে একবার দেশে ফিরলেও তারপর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেন।

দীর্ঘদিন জৈব সুরক্ষা বলয়ে কাটানো ক্রিকেটারেরা অস্ট্রেলিয়া থেকে সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছেন। নতুন করে তাঁদের যেন নিভৃতবাসে কাটাতে না হয়, তার জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। আর কোয়ারেন্টিনে কাটাতে হচ্ছে না রাহানে, রোহিত, রবি শাস্ত্রীদের।

ব্রিসবেনে অস্ট্রেলিয়াকে চতুর্থ টেস্টে পর্যুদস্ত করে সিরিজ জিতে ফিরেছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। মুম্বইয়ে ফিরেছেন রাহানে, রোহিত, পৃথ্বী শ, শার্দুল ঠাকুর ও কোচ রবি শাস্ত্রী। ভারতীয় সময় বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বইয়ের ছত্রপতি বিমানবন্দরে নামেন তাঁরা। এমনিতে নিয়ম হচ্ছে, বিদেশ থেকে মুম্বইয়ে এলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিং পর্ব কাটাতে হবে। তবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার কর্তারা শরদ পওয়ারের কাছে আবেদন করেন, ক্রিকেটারদের যাতে কোয়ারেন্টিনের কড়াকড়ির মধ্যে না পড়তে হয়, সে ব্যাপারে সাহায্য করতে। প্রসঙ্গত, পওয়ার শুধুমাত্র হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতাই নন, তিনি ভারতীয় বোর্ডের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টও। মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার এক কর্তা বলেছেন, 'নিভৃতবাসের নিয়ম এই ক্রিকেটারদের জন্য শিথিল করার ব্যাপারে পওয়ারের কাছে আর্জি জানিয়েছিলাম। ওঁরা প্রায় সকলেই সেই অগাস্ট থেকে কোয়ারেন্টিনে আছে। প্রচুর করোনা পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। অবশেষে বুধবার প্রায় মাঝরাত নাগাদ ওদের জন্য কোয়ারেন্টিনের নিয়ম শিথিল করা হয়।'

রূপকথার লড়াই! হ্যাঁ, ডনের দেশে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতের ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়কে এভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়। বিরাট এক টেস্ট খেলে দেশে ফিরবেন! সরকারিভাবে এই ঘোষণার পরই ক্রিকেটপণ্ডিতরা ভারতকে ০-৪ হোয়াইটওয়াশ হতে দেখেছিলেন! সেখানেই বিরাটের নেতৃত্বে অ্যাডিলেডে ভারতের ৩৬ রানে অলআউটের মহাবিপর্যয়! সেই বিপর্যয় যদি ইতিহাসে স্থান পায় তবে মহাপ্রত্যাবর্তনটা আরও বড় করে লেখা থাকবে। যেখানে বিরাট দেশে ফেরার পর শামি-উমেশদের চোটে জর্জড়িত পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটন সুন্দর-শার্দুল ঠাকুর-নভদীপ সাইনি-মহম্মদ সিরাজদের মতো একঝাঁক তরুণদের কাঁধে চেপে ইতিহাস লিখল ভারত। ৩৬ এর ধ্বংস দেখে যারা ভারতের উপর আস্থা হারিয়েছিলেন, রাহানের নেতৃত্বে তরুণদের নয়া ভারতই যেন তাঁদের নতুন রূপকথার প্রত্যাবর্তন দেখাল। ডনের দেশে এ যেন নতুন ভারতের 'দাদাগিরি'।