দুবাই: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপের (Asia Cup 2022) প্রথম ম্যাচে ভারতীয় (IND vs PAK) বোলাররা দুরন্তভাবে শুরু করলেও, ফের একবার শুরুতেই গত বছরের ম্যাচের দুঃস্বপ্ন উঁকি দিচ্ছিল। প্রথম ওভারেই শূন্য রানে বোল্ড হন কেএল রাহুল। নাসিম শাহের বলে একই ওভারে বিরাট কোহলিও ক্যাচ তোলেন। তবে স্লিপে তা ধরতে পারেননি ফখর জামান। শুরুতেই প্রথম উইকেট হারানোর পর কোহলি এবং রোহিত শর্মা দেখেশুনে ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কোহলিকে ভাল ছন্দে দেখালেও, রোহিত শুরুর দিকে রান করতে বেশ চাপে পড়েন।


পাণ্ড্য-জাডেজার পার্টনারশিপ


শেষমেশ মহম্মদ নওয়াজকে ছক্কা মারতে গিয়ে ১৮ বলে ১২ রানেই ফেরেন রোহিত। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রোহিতকে অনুসরণ করে ৩৫ রানে সাজঘরে ফেরেন বিরাটও। ৫৩ রানে তিন উইকেট হারিয়ে বেশ চাপেই পড়ে গিয়েছিল ভারত। সূর্যকমার যাদব ১৮ রানে আউট হলে ভারতের স্কোর ৮৯/৪ হয়ে যাওয়ায় চাপ আরও বাড়ে। তবে হার্দিক পাণ্ড্য (Hardik Pandya) ও ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া রবীন্দ্র জাডেজা কিন্তু হাল ছাড়ার পক্ষে একেবারেই ছিলেন না। দুই অলরাউন্ডার মিলেই ভারতকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান।


পঞ্চম উইকেটে ৫২ রানের পার্টনারশিপ গড়েন হার্দিক ও জাডেজা। হার্দিক নিজের ইনিংসের শুরুতেই নিজের মনোভাব স্পষ্ট করে দেন। আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করেন তিনি। ১৯তম ওভারে হার্দিকের দৌলতেই উঠা ১৪ রান ম্যাচের মোর ঘুরিয়ে দেয়। তবে দুইজনে ম্যাচ শেষ করতে অবশ্য় পারেননি। শেষ ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ৩৫ রানেই ফিরতে হয় জাডেজাকে। কিন্তু পাণ্ড্য ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন। ছক্কা মেরে পাঁচ উইকেটে ভারতকে জেতান তিনি। ফলে জয় দিয়েই এশিয়া কাপ শুরু করল ভারত। 


প্রথম ইনিংসে ফাস্ট বোলারদের দাপট


এদিন ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সবাইকে চমকে দিয়ে ঋষভ পন্তকে দলের বাইরেই রাখা হয়। বদলে বাড়তি বোলার হিসাবে আবেশ খানকে দলে সুযোগ দেওয়া হয়। ম্যাচের প্রথম ওভারেই মহম্মদ রিজওয়ানের প্যাডে বল লাগায় আম্পায়ার তাঁকে আউট দিলেও, রিভিউয়ের জেরে সিদ্ধান্ত বদল হয়। গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাবর আজম ও রিজওয়ানই ভারতকে দায়িত্ব নিয়ে হারিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁদের ওপেনিং পার্টনারশিপটা ভাঙা তাই খুব জরুরি ছিল। রিজওয়ান প্রথম ওভারে বেঁচে গেলেও, ভুবনেশ্বর কুমারের বিরুদ্ধে বাবর বাঁচলেন না।


দারুণ বাউন্সারে বাবরকে মাত্র ১০ রানেই সাজঘরে ফেরত পাঠান ভুবি। ১৫ রানে ভাঙে পাকিস্তানের ওপেনিং পার্টনারশিপ। তিনে নামা ফখর জামানও ১০ রানেই ফেরেন। আবেশ খানের মাঝ পিচের বলে কাট মারতে গিয়ে খোঁচা দিয়ে আউট হন তিনি। এই দুই উইকেট হারানোর পর অবশ্য রিজওয়ান এবং ইফতিখার তৃতীয় উইকেটের পার্টনারশিপে ৪৫ রান যোগ করেন। বেশ দেখেশুনে এগোচ্ছিলেন তাঁরা। তবে হার্দিক পাণ্ড্য নিজের দ্বিতীয় স্পেলে ফিরেই ভারতকে সাফল্য এনে দেন। সৌজন্যে সেই শর্ট বল।


হার্দিকের সঠিক ঠিকানায় ফেলা শর্ট বলে পুল মারতে গিয়ে ২৮ রানে সাজঘরে ফেরেন ইফতিখার। ভাল ছন্দে দেখানো রিজওয়ানকেও ৪৩ রানে বাউন্সারেই কুপোকাত করেন হার্দিক। শেষের দিকে শাহনওয়াজ দাহানি ছয় বলে ব্যাট চালিয়ে ১৬ রান করায় পাকিস্তান শেষ উইকেটে ১৯ রান যোগ করে। তবে পাকিস্তান ১৪৭ রানেই গুটিয়ে যায়। প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে ভারতীয় ফাস্ট বোলাররাই দশ উইকেট নিলেন। ভুবনেশ্বর কুমারের চার উইকেট নেন। তিনি বাদে হার্দিক পাণ্ড্য তিন, অর্শদীপ সিংহ দুই ও আবেশ খান এক উইকেট নিয়েছেন।


আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইতিহাস গড়েও অখুশি ভুবনেশ্বর, কারণটা কী?