ক্যান্ডি: এশিয়া কাপ (Asia Cup) শুরু হয়ে গিয়েছে। একটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ।


তবে সকলের নজর ২ সেপ্টেম্বরের দিকে। সেদিন ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, ভারত ও পাকিস্তান (Ind vs Pak)। মহারণের আগে দেখে নেওয়া যাক দুই দলের শেষ পাঁচ সাক্ষাতের ইতিহাস।


১) ভারত বনাম পাকিস্তান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ, মেলবোর্ন, ২৩ অক্টোবর, ২০২২


আইসিসি-র কোনও টুর্নামেন্টে এরকম হাড্ডাহাড্ডি ভারত-পাক ম্যাচ খুব কমই হয়েছে। যেখানে শেষ বলে রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারত। পাওয়ার প্লে-তে অর্শদীপ সিংহের নেতৃত্বে দুরন্ত বোলিং করেন ভারতীয় বোলাররা। প্রথম ৪ ওভারের মধ্যে বাবর আজম ও মহম্মদ রিজওয়ানকে তুলে নিয়ে পাকিস্তানকে ১৫/২ করে দিয়েছিলেন অর্শদীপ। তবে শান মাসুদ ও ইফতিকার আমেদ ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন ইফতিকার। তাঁকে ফেরান মহম্মদ শামি। অপরাজিত ৫২ রান করেন মাসুদ। ১৫৯/৮ তোলে পাকিস্তান।


জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাক পেসারদের দাপটে চাপে পড়ে যায় ভারত। রোহিত শর্মা, কে এল রাহুল, সূর্যকুমার যাদব ও অক্ষর পটেল ফিরে যান দ্রুত। পাওয়ার প্লে-তে ২ উইকেট নেন হ্যারিস রউফ। নাসিম শাহ নেন ১ উইকেট। তারপর ব্যাট হাতে প্রত্যাঘাত করেন বিরাট কোহলি ও হার্দিক পাণ্ড্য। শেষ ৩ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৪৮ রান। সেই সময় জ্বলে ওঠেন কোহলি। ৫৩ বলে ৮২ রান করেন তিনি। নাটকীয় শেষ ওভারের শেষ বলে ভারতকে ম্যাচ জেতান আর অশ্বিন।


২) ভারত বনাম পাকিস্তান, এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্বের ম্যাচ, দুবাই, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২



গ্রুপ পর্বের ম্যাচের এক সপ্তাহ পরেই সুপার ফোরে মুখোমুখি হয়েছিল দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ফের এক উত্তেজক লড়াইয়ের সাক্ষী হয় ক্রিকেটবিশ্ব। হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে জেতে পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করে জ্বলে ওঠেন রোহিত শর্মা ও কে এল রাহুল। প্রথম ৫ ওভারে ৫৪ রান তোলেন দুজনে। তবে রউফ ও শাদাব খানের বলে রোহিত ও রাহুল পরপর ফেরার পরই রান ওঠার গতি কমে যায়। কোহলি ৪৪ বলে ৬০ রান করেন। ভারত তোলে ১৮১/৭।

 

জবাবে ব্যাট করতে নেমে একটা সময় পাকিস্তানকে ওভার প্রতি ১০ রানেরও বেশি তুলতে হতো। চার নম্বরে নেমে নওয়াজ ম্য়াচের মোড় ঘুরিয়ে দেন। বল হাতে এক উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাটে ঝোড়ো ৪২ রান করেন। আসিফ আলি ও খুশদিল শাহ ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করে নেন।

 

৩) ভারত বনাম পাকিস্তান, এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ, দুবাই, ২৮ অগাস্ট, ২০২২


রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি হাসে ভারত। শুরুতেই বাবর আজমকে ফিরিয়ে দেন ভুবনেশ্বর কুমার। শেষ দিকে বড় শট খেলে পাকিস্তানকে ভদ্রস্থ স্কোরে পৌঁছে দেন শাহনওয়াজ় দাহানি। ১৪৭ তোলে পাকিস্তান।


টি-টোয়েন্টি অভিষেক ম্যাচে দ্বিতীয় বলেই কে এল রাহুলকে ফিরিয়ে দেন নাসিম শাহ। ৮ বলের ব্যবধানে ফিরে যান রোহিত ও কোহলি। চতুর্থ উইকেটে রবীন্দ্র জাডেজা ও সূর্যকুমার যাদব প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সূর্যকুমার যখন ফেরেন, ৩৪ বলে ৫৯ দরকার ছিল ভারতের। ১৯তম ওভারে হ্যারিস রউফকে তিনটি বাউন্ডারি মারেন হার্দিক। শেষ ওভারে দরকার ছিল ৭ রান। শেষ ওভারে জাডেজা ফিরলেও, ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জেতান হার্দিক।


৪) ভারত বনাম পাকিস্তান, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ, দুবাই, ২৪ অক্টোবর, ২০২১


দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের স্মৃতি ভুলতে চাইবে টিম ইন্ডিয়া। কারণ এই মাঠেই প্রথমবারের জন্য বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তানের কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। শাহিন শাহ আফ্রিদির আগুনে গতি ঝলসে দেয় ভারতের ইনিংস। অনবদ্য দুটি ডেলিভারিতে রোহিত ও রাহুলকে ফেরান তিনি। কোহলি ও ঋষভ পন্থ প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। কোহলি হাফসেঞ্চুরি করেন। তবে বাকিরা কেউ বড় রান পাননি। ২০ ওভারে ভারত তোলে ১৫১/৭। 


জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১০ উইকেটে ম্য়াচ জেতে পাকিস্তান। বাবর ও মহম্মদ রিজওয়ানের ওপেনিং জুটিতেই হয় বাজিমাত। অবিচ্ছেদ্য ১৫২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে পাকিস্তানকে জেতান দুজনে।


৫) ভারত বনাম পাকিস্তান, ওয়ান ডে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ, ম্যাঞ্চেস্টার, ১৬ জুন, ২০১৯


ওয়ান ডে বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয় দুই দল। তবে একপেশেভাবে জেতে ভারত। ১১৩ বলে ১৪০ রান করেন রোহিত। হাফসেঞ্চুরি করেন রাহুল ও কোহলি। ৩৩৭ রান তোলে ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ইমাম উল হককে হারায় পাকিস্তান। ফখর ও বাবর পাল্টা লড়াই করেন। সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ গড়েন তাঁরা। বাবরকে ফেরান কুলদীপ যাদব। বৃষ্টিতে পাকিস্তানের সামনে পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪০ ওভারে ৩০২। ২১২/৬ স্কোরে আটকে যায় পাকিস্তান। বিশ্বকাপে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ৭-০ রেকর্ড গড়ে ভারত।




আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন