কলকাতা: মাঝে আর মাত্র দু’দিন। তার পরেই, শনিবার সন্ধ্যায় গোয়ার ফতোরদায় চলতি হিরো আইএসএলের খেতাবী লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে কলকাতার এটিকে মোহনবাগান ও বেঙ্গালুরু এফসি। এর আগে হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে যে কয়েকবার দুই দলের দ্বৈরথ হয়েছে, প্রতিবারই তুমুল লড়াই হয়েছে তাদের মধ্যে।


তিন মরসুমে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ছ’বার। তার মধ্যে চারবারই জিতেছে এটিকে মোহনবাগান, একবার বেঙ্গালুরু ও একটি ম্যাচে ড্র হয়। এ বার প্রথম মুখোমুখিতে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের গোলে জেতে কলকাতার দল। গত মাসে ফিরতি লিগে ২-১-এ জিতে মধুর প্রতিশোধ নেয় বেঙ্গালুরু।


গত মরশুমে সুনীল ছেত্রী-হীন বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ৩-৩-এ ম্যাচ অমীমাংসিত রেখে মাঠ ছাড়ে সবুজ-মেরুন বাহিনী। প্রথমার্ধে ২৫ মিনিটের মধ্যে চারটি গোল হয় ও দ্বিতীয়ার্ধে ১৪ মিনিটের মধ্যে দু’টি গোল করে দুই দল। হাফ ডজন গোলের মধ্যে পাঁচটিই আসে সেট পিস মুভ থেকে। সেবার দ্বিতীয় লিগে মনবীর সিং ও লিস্টন কোলাসোর গোলে জেতে কলকাতার দল। ২০২০-২১ মরসুমে প্রথমে এটিকে মোহনবাগান ডেভিড উইলিয়ামসের গোলে জেতে ও পরেরবার রয় কৃষ্ণা ও মার্সেলো পেরেরার গোলে জেতে।


হায়দরাবাদকে হারিয়ে ফাইনালে এটিকে মোহনবাগান


সোমবার রাত সোয়া দশটাতেও যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের গ্যালারিতে বাহান্ন হাজারেরও বেশি মানুষ। বেশিরভাগের হাতেই সবুজ-মেরুন পতাকা, গায়ে সবুজ-মেরুন জার্সি। টানটান উত্তেজনায় তখন কাঁপছে সারা স্টেডিয়াম। সবার মনেই একই প্রশ্ন, হিরো আইএসএলের ফাইনালে উঠবে কারা? গতবারের চ্যাম্পিয়ন হায়দরাবাদ এফসি, না গত মরসুমে এই হায়দরাবাদের কাছে হেরেই সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়া এটিকে মোহনবাগান?


নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের ওপেন প্লে-তে কোনও গোল না হওয়ার পর হায়দরাবাদের জোয়াও ভিক্টর গোল করে শুরু করেন রুদ্ধশ্বাস টাই ব্রেকার। কিন্তু ডানদিকে ঝাঁপিয়ে হাভিয়ে সিভেরিওর শট আটকে দেন গোল্ডন গ্লাভজয়ী বিশাল কয়েথ। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ গোলদাতা বার্থোলোমিউ ওগবেচের শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তখনই জয়ের সেলিব্রেশন শুরু হয়ে যায় গ্যালারিতে। এটিকে মোহনবাগানের দিমিত্রিয়স পেট্রাটস, ফেদরিকো গায়েগো ও মনবীর সিং জালে বল জড়িয়ে দিলেও ব্রেন্ডান হ্যামিল গোলের বাইরে বল পাঠানোয় উত্তেজনার পারদ চরমে ওঠে।


হায়দরাবাদের দুই তরুণ সদস্য রোহিত দানু ও রেগন সিং ভুল না করায় শেষ শট নিতে যাওয়া সবুজ-মেরুন অধিনায়ক প্রীতম কোটালের ওপরই এসে পড়ে যাবতীয় চাপ। কিন্তু গোলে বল রাখতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি অভিজ্ঞ প্রীতম এবং তাঁর এই গোলের পরই আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে শব্দের বিষ্ফোরণ ঘটে যুবভারতীতে। হিমাচলের বিশালের সেভ ও বঙ্গসন্তান প্রীতমের এই গোলই বহু আকাঙ্খিত জয় এনে দেয় সবুজ-মেরুন বাহিনীকে।