লিডস: টেস্টের চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশন। হাতে ১ উইকেট। চাই ৭৩ রান। ব্যাটে তখন চলতি ক্রিকেট বর্ষের ‘বর্ষসেরা’ ব্রিটিশ ক্রিকেটার বেন স্টোকস। তাঁকে সঙ্গত দিচ্ছেন এম জে লিচ। সামলাতে হবে জশ হ্যাজেলউড, প্যাট কামিন্স, জেমস প্যাটিনসনদের মতো অস্ট্রেলীয় স্পিডস্টারদের। সঙ্গে আবার নাথান লিয়ঁ। এমনিতেই চলতি অ্যাশেজে ১-০-তে পিছিয়ে তাঁরা। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৫৯ রান তাড়া করে জেতার স্বপ্ন দেখার সাহস ঘোরতর ব্রিটিশ ফ্যানরাও করেননি। ক্যাঙ্গারু ব্রিগেডের সামনে তখন আবার ২-০ এগিয়ে অ্যাশেজ কব্জা করার স্বপ্ন একেবারে ঝলমল করছে। ঘরের মাঠে পরপর হার ব্রিটিশদের, এই শিরোনাম লেখার প্রস্তুতি যখন হচ্ছে, তখন লেখা বদলে ফেলতে বাধ্য করলেন বেন স্টোকস।
অপরাজিত ১৩৫। শেষ উইকটে দলের স্কোরবোর্ডে যোগ করলেন ৭৬ রান। যার মধ্যে কেবল ১ রান এসেছে একাদশে ব্যাট করতে আসা লিচের ব্যাট থেকে। খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়া ব্রিটিশ দলকে একা কাঁধে করে বয়ে নিয়ে যাওয়ার যে রূপকথা স্টোকস রবিবার লিখে রাখলেন, তা নিঃসন্দেহে অ্যাশেজের অন্যতম সেরা টেস্টের শিরোপা পাবে। কারণ, এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৩৫৯ রান তাড়া করে কোনও টেস্ট জিতল ইংল্যান্ড। সৌজন্যে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক বেন স্টোকস।
ম্যাচ জয়ের পর নায়ক বলে গেলেন, “আমি কখনও হার মানিনি। লিচ ক্রিজে আসার পরই ছবিটা আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। আমি জানতাম আমি কী করতে চলেছি। জানিয়ে দিয়েছিলাম, নিজে ৫ বল খেলে ওকে ১টা ডেলিভারি দেব। আমার অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ শুধু বলে যাচ্ছিল, শেষ না হওয়া পর্যন্ত খেলে যাও। সর্বোচ্চ উচ্চতায় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছ। এখান থেকে শেষ করে আসার চেয়ে ভাল কিছু হবে না।”
বেন স্টোকস শেষ করলেন। শেষ করলেন ঐতিহাসিক ভাবেই। লিডসে জিতে চলতি অ্যাশেজে সমতা ফেরাল ইংল্যান্ড। ফলাফল ১-১। অ্যাশেজ এখনও ‘ওয়াইড ওপেন’।