কলকাতা: বাবা সিএবি-র হয়ে স্থানীয় ক্রিকেটের ম্যাচে আম্পায়ারিং করেন। তাঁর জন্যই গোটা পরিবারে ক্রিকেটের প্রতি উন্মাদনা। তাঁর হাত ধরেই ক্রিকেটের প্রেমে পড়া বাড়ির ছোট মেয়ের।
সেই মেয়েই এবার খেলতে চলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ! হরমনপ্রীত কৌর-স্মৃতি মান্ধানাদের সঙ্গে।
তার চেয়েও আশ্চর্যজনক তথ্য হচ্ছে, কেরিয়ারে প্রথমবার জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেল রিচা ঘোষ। এবং সেটা সরাসরি বিশ্বকাপে। স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনায় ফুটছে বাংলার ১৬ বছরের প্রতিভা।
রবিবার দুপুরে মুম্বইয়ে যখন জাতীয় নির্বাচকেরা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করছেন, স্থানীয় ক্রিকেটের ম্যাচ খেলতে চন্দননগরে ছিল রিচা। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সেখান থেকে ফেরার সময় মোবাইল ফোনে রিচা বলল, ‘তখন আমাদের ফিল্ডিং শেষ হয়েছিল সবে। দুই ইনিংসের বিরতিতে ড্রেসিংরুমে গিয়ে ফোন চেক করার সময় খবরটা পেলাম। এই সুযোগ আমার কাছে স্বপ্নের মতো। এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না জাতীয় দলে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছি, এবং সেটাও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মতো এত বড় মঞ্চে।’
ষোড়শী রিচা জানাল, তার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ সিএবি-র আম্পায়ার। ‘বাবা সিএবি-র ম্যাচ খেলান। বাবার জন্যই ছোট থেকে ক্রিকেটের প্রতি ভালবাসা। বাবাই আমার প্রথম কোচ। আমার এই সুযোগে বাবা ভীষণ খুশি,’ বলছে রিচা। মানবেন্দ্র নিজেও ক্রিকেট খেলতেন। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। রিচারও ক্রিকেটে হাতেখড়ি সেই বাঘাযতীন ক্লাবেই।
শিলিগুড়ি থেকেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন ঋদ্ধিমান সাহা। ছিনিয়ে নিয়েছেন বিশ্বের সেরা উইকেটকিপারের স্বীকৃতি। সেই শিলিগুড়ি থেকে ফের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে এক বঙ্গ ক্রিকেটার। রিচা বলছে, ‘পাপালিদার (ঋদ্ধির ডাকনাম) সঙ্গে বারকয়েক কথা হয়েছে। হাতের সামনে এত বড় উদাহরণ পেলে সকলেই অনুপ্রেরণা পায়। আমিও ব্যতিক্রমী নই।’
দশম শ্রেণির পড়ুয়া রিচার নির্বাচকদের নজরে আসা সদ্যসমাপ্ত চ্যালেঞ্জার্স ট্রফিতে। যে টুর্নামেন্টে স্মৃতি মান্ধানার নেতৃত্বাধীন ভারতীয় বি দলের হয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেছিল বাংলার খুদে প্রতিভা। চাপের মুখে ভারত সি দলের বিরুদ্ধে তার ২৫ রানের ইনিংস সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছিল। ভারত সি-র বিরুদ্ধে আর একটি ম্যাচে ২৬ বলে ঝোড়ো ৩৬ রান করেছিল রিচা। এই ইনিংসগুলোই নির্বাচনের রাস্তা তৈরি করে দিয়েছে গত মরসুমে বাংলার হয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেটে নজরকাড়া রিচার।
চ্যালেঞ্জার্স ট্রফিতে মিডল অর্ডারে ব্যাট করলেও রিচা জানাল, তাঁর পছন্দের জায়গা ওপেনিং। ‘তবে দলের প্রয়োজনে যে কোনও জায়গায় ব্যাট করতে পারি। মিডল অর্ডারেও আমি স্বচ্ছন্দ,’ আত্মবিশ্বাসী জবাব রিচার। যোগ করল, ‘টি-টোয়েন্টিতে পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলতে হয়। তাই মানসিক দিক থেকে খুব শক্তিশালী হতে হয়। আমি সেই দিকটাতেই জোর দিচ্ছি।’
দেশের বাইরে কখনও যায়নি রিচা। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই হবে তার প্রথম বিদেশ সফর। রিচা বলছে, ‘অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশ-পরিস্থিতি আলাদা হবে। দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সহজ বলে কিছু হয় না। প্রথম একাদশে সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেব।’
সিএবি-র ম্যাচ থাকলে গড়িয়ায় থাকে রিচা। রবিবার সেখান থেকেই চন্দননগরে খেলতে গিয়েছিল। ক্রিকেট ছাড়াও ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, সাইক্লিং ভাল লাগে। পছন্দ মায়ের হাতের রান্না। প্রিয় অভিনেতা? রিচা বলছে, ‘অনেককেই ভাল লাগে। তবে টাইগার শ্রফকে খুব পছন্দ। সময় পেলে বন্ধু বা সতীর্থরা মিলে সিনেমা দেখতে যাই। টাইগারের ওয়ার সিনেমাটিও দেখেছি।’
বাবা সিএবি-র আম্পায়ার, টাইগার শ্রফের ভক্ত মেয়ের সুযোগ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
12 Jan 2020 06:55 PM (IST)
ঋদ্ধির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মঞ্চে ফের শিলিগুড়ির প্রতিনিধিত্ব
NEXT
PREV
খেলা (sports) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -