সৌমিত্র রায়, কলকাতা : বাংলার জলকন্যা সায়নী দাসের মুকুটে নতুন পালক। এবার স্পেনে জিব্রাল্টার প্রণালী জয় করলেন কালনার মেয়ে। এই নিয়ে নর্থ চ্যানেল, ইংলিশ চ্যানেল, ক্যাটালিনা চ্যানেল, মলোকাই ও কুক প্রণালীর পর এবার জিব্রাল্টার প্রণালী--৬টি চ্যানেল জয়ের নজির গড়লেন সায়নী দাস। জিব্রাল্টার পেরোতে সময় নিলেন ৩ ঘণ্টা ৫১ মিনিট। বামে আইবেরীয় উপদ্বীপ ও ডানে উত্তর আফ্রিকা। আর মাঝে জিব্রাল্টর প্রণালী। ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রস্থ অবস্থানভেদে ১৩ থেকে ৩৯ কিলোমিটার । এই জিব্রাল্টরই জয় করলেন বঙ্গতনয়া। পূর্বে ভূমধ্যসাগর আর পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগরের সঙ্গে সংযোগ গড়ে দিয়েছে এই সমুদ্র প্রণালী। দেশ হিসেবে মরক্কো ও স্পেনকে পৃথক করেছে জিব্রাল্টর।
খেতাবের পর খেতাব
এর আগে ৩০ অগাস্ট দেশের মধ্যে প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মাঝে ৩৫ কিমি দূরত্বের নর্থ চ্যানেল সাঁতরে পার করেন তিনি। একইসঙ্গে এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে পঞ্চসিন্ধু জয়ের রেকর্ডও গড়েন। গত বছরের এপ্রিলেই সায়নী জয় করেন নিউ জিল্যান্ডের কুক প্রণালী। ইতিপূর্বে ২০১৯ সালে আমেরিকার ২০ মাইল দীর্ঘ ক্যাটলিনা চ্যানেলটি পার করেন ১২ ঘন্টা ৪৬ মিনিটে। বুলা চৌধুরীর পর দ্বিতীয় বাঙালি মহিলা হিসাবে ক্যাটালীনা জয় করেন তিনি। শুধু তাই নয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ইংলিশ চ্যানেল এবং ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার রটনেস্ট চ্যানেলও জয় করেন। উল্লেখ্য ২১ মাইল দূরত্বের ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার কাটতে সায়নী দাসের সময় লেগেছিল ১৪ ঘণ্টা ৩ মিনিট। এবার বাকি রইল সুগারু । জয় করতে পারলেই সায়নীর মাথায় উঠবে ওশেন সেভেন মুকুট। সেরা বাঙালির সম্মান
বাড়ি কালনার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বারুইপুর। বাবা রাধেশ্যাম দাস পেশায় শিক্ষক। ৬ বছর বয়সেই সাঁতারে হাতেখড়ি। প্রতিভার আঁচ মিলেছিল জাতীয় স্তরের টুর্নামেন্টেও। তবে, শর্ট ডিসটেন্সের চেয়ে লং ডিসটেন্সের সাঁতারেই বেশি মন সায়নীর। পাখির চোখ ছিল ইংলিশ চ্যানেল। যেজন্য প্রয়োজন ছিল ১২ লক্ষ টাকার। সেই টাকা জোগাড় করতে কম কাঠ-খড় পোড়াতে হয়নি! স্ট্রাগলকে সঙ্গী করেই এগিয়েছেন। ২০২৪ সালে এবিপি আনন্দ সায়নীকে সেরা বাঙালির সম্মান জানায়।