ম্যাঞ্চেস্টার: বল হাতে জসপ্রিত বুমরাহর দুরন্ত দক্ষতা ভারতকে বিশ্বকাপ জয়ের দারুণ একটা সুযোগ করে দিয়েছ। তেমনি কাপ ধরে রাখার ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার তুরুপের তাস হয়ে উঠতে পারেন ডেভিড ওয়ার্নার। এমনই মত প্রকাশ করেছেন ২০১৫-র অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক।
বিশ্বকাপের তিন দাবিদারের মধ্যে কেন ভারত ও অস্ট্রেলিয়া রয়েছে, সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে প্রাক্তন অজি অধিনায়ক ক্লার্ক তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কেভিন পিটারসেন ও মাইকেল ভনের মতো প্রাক্তন ইংরেজ ক্রিকেটাররা আশা করলেও ট্রফি এবারও আয়োজক দেশের ঘরে নাও আসতে পারে।
গত দুই বছরে বুমরাহর দুরন্ত বোলিং নিয়ে উচ্ছ্বসিত ক্লার্ক। তিনি বলেছেন, ওর হাতে সব ধরনের অস্ত্র মজুত রয়েছে। ও ফিট ও স্বাস্থ্যবান। আমি আশা করছি এভাবে খেললে বিশ্বকাপে ভারতের সাফল্যের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করবে বুমরাহ।
কিন্তু ক্লার্ক মনে করেন, অস্ট্রেলিয়া, বিশেষ করে, ওয়ার্নারের কাছে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন বুমরাহ। ওয়ার্নার ইতিমধ্যেই ছয় ম্যাচে দুটি সেঞ্চুরি সহ ৪৪৭ রান করেছেন।
ক্লার্ক বলেছেন, আমি ডেভিডের কাছ থেকে ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স আশা করি, কারণ ও ব্যতিক্রমী খেলোয়াড়। ও খামখেয়ালি। ও দলের পক্ষে এক্স-ফ্যাক্টর। অস্ট্রেলিয়া যদি বিশ্বকাপ জেতে তাহলে আমার মতে ওয়ার্নার সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী হবে।
এই দুই খেলোয়াড়কে এতটা বিশেষ কেন তিনি মনে করছেন, সে বিষয়েও পৃথকভাবে বিশ্লেষণ করেছেন ক্লার্ক।
ব্যাটসম্যানদের পক্ষে বুমরাহকে খেলা এতটা কঠিন কেন, সে ব্যাপারে ক্লার্ক বলেছেন, নতুন বলে বুমরাহ সুইং ও সিম করতে পারে। মাঝের ওভারগুলি বল যখন কিছুই করে না, তখন ও অতিরিক্ত পেসে ব্যাটসম্যানদের বিপাকে ফেলে। ও প্রায় ১৫০ কিমি গতিতে বল করে এবং ডেথ ওভারগুলিতে ও খুব ভালো ইয়র্কার দিতে পারে। আর যদি রিভার্স সুইং হয়, তাহলে ও একজন প্রতিভা।
ক্লার্ক বলেছেন, একজন অধিনায়কের বুমরাহর মতো কোনও বোলারের প্রয়োজন, যার হাতে যখন উইকেট দরকার তখন বল তুলে দেওয়া যায়।ও বোলিং ওপেন করতে পারে, যখন কিছুই হচ্ছে না তখন ৩৫ ওভারে এসেও বল করে যেতে পারে বা একেবারে শেষে চার ওভারও বোলিং করতে পারে। আর এটাই ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিতে পারে।
দুটি নতুন বলের পরিবর্তে একটি বলে খেলা হলে বুমরাহকে ওয়াসিম আক্রমের মতোই ভালো হতেন? এই প্রশ্নের উত্তরে ক্লার্ক বলেছেন, আমার এমনটাই মনে হয়। ও এতটাই ভালো যে, মানিয়ে নেওয়ার পথ ও ঠিক খুঁজে নিতে পারত।
সমস্ত বিতর্ক পিছনে ফেলে ওয়ার্নারকে চেনা ছন্দে ফিরে আসতে দেখে তিনি খুব খুশি বলেও জানিয়েছেন ক্লার্ক। ভারতের বিরুদ্ধে স্লো ইনিংসের জন্য সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ওয়ার্নারকে। এখন সেই ধাঁচে খেলেই ওয়ার্নার অন্য দলগুলির বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের সুযোগ করে দিচ্ছেন। ক্লার্ক বলেছেন, টি ২০-র থেকে ওডিআই ভিন্ন। ওডিআই ফর্ম্যাটে ফিরতে ওর কিছুটা সময় লেগেছে। ইনিংসের শুরুতে ওকে ধৈর্য্য ধরতে দেখা যাচ্ছে।
ক্লার্ক বলেছেন, অনেকেই বলেছেন, নিজের সেরা ফর্মে নেই ওয়ার্নার। কিন্তু দুটি দেড়শ-র বেশি রানের ইনিংস খেলেছে ও। এভাবে ওয়ার্নার দেখিয়ে দিয়েছে যে ও কতটা ভালো প্লেয়ার। টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক রানসংগ্রহকারী ও।