মুম্বই: দেখা হলেই বহুদিনের ওপেনিং পার্টনার সুনীল গাওস্করকে জড়িয়ে ধরতেন চেতন চৌহান। আর বলতেন, ‘আজা আজা গলে মিল। আফটারঅল আমরা সকলেই জীবনের সীমিত ওভারে খেলছি!’ গত দু-তিন বছর ধরে এটাই চলে আসছিল।


দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে পিচ তৈরির দায়িত্বে ছিলেন চেতন। গাওস্কর স্টেডিয়ামে গেলেই দেখা হয়ে যেত। গাওস্কর বলতেন, ‘আমরা আবার একটা একশো রানের পার্টনারশিপ করব, দেখ।’ তাঁকে থামিয়ে দিয়ে চেতন বলতেন, ‘আরে বাবা তুমি হলে গিয়ে সেঞ্চুরি মেকার, আমি তো নই!’ করোনা আক্রান্ত হয়ে সদ্য প্রয়াত চেতনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বললেন গাওস্কর।

জীবন যে সীমিত ওভারের খেলা, আর ওর সে খেলা যে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না গাওস্কর। তিনি আটের দশকে অস্ট্রেলিয়া সফরের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, অ্যাডিলেডের সেই ম্যাচে চেতন যখন ৯৭ রানে ক্রিজে, তিনি স্নায়ুর চাপে ভুগছিলেন। ড্রেসিংরুম থেকে বেরোতে পারেননি। যদি ব্যালকনি থেকে দেখলে চেতন আউট হয়ে যান, এই অমঙ্গল চিন্তা করছিলেন। তবুও টিমমেটরা তাঁকে ব্যালকনিতে জোর করে আনতে চান। আর ডেনিস লিলির বলে কট-বিহাইন্ড হয়ে যান চেতন। আরও একবার অস্ট্রেলিয়ার প্লেয়ারদের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন সানি। মাঠ ছেড়ে চলে আসতে চান। সেই কথা মনে করে গাওস্কর জানান, ‘সেদিনও চেতন নব্বইয়ের ঘরে ছিল। আমার ঝগড়ার জন্য মনসংযোগ নষ্ট হয়েই ও আউট হয়েছিল সম্ভবত।’

গাওস্করকে নিয়ে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ভেঙ্কটরমণের সঙ্গে দেখা করেছিলেন চেতন। খেলোয়াড়দের করছাড়ের জন্য আবেদন করেন তাঁরা। অনেকখানি করছাড়ের ব্যবস্থা করেন অর্থমন্ত্রী, যার সুবিধা আজও ভোগ করছেন বর্তমান খেলোয়াড়রা।

গাওস্কর জানিয়েছেন, ‘মুসকুরা লাডলে মুসকুরা’ গানটা বড্ড প্রিয় ছিল ওর। চাপের মধ্যে থাকলেই গাইত। কিন্তু আমার ওপেনিং পার্টনার চলে গেল, কেমন করে আমি হাসি!’