কলকাতা: প্রয়াত প্রবাদপ্রতিম ফুটবলার চুনী গোস্বামী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের অন্যতম তিনি। বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থতা বোধ করায় এসেছিলেন হাসপাতালে। বিকেল ৫.৩০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। বার্ধক্যজনিত নানা অসুখে ভুগছিলেন, জানিয়েছেন তাঁর ছেলে।


চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ডায়াবেটিসের কারণে অসুস্থ ছিলেন তিনি। শরীর থেকে জল বার করতে হত নির্দিষ্ট সময় অন্তর। সেই কারণেই হাসপাতালে এসেছিলেন।

একদিকে, ফুটবলে এশিয়ান গেমসের সেমিফাইনালে জোড়া গোল করছেন। অন্যদিকে, ক্রিকেটে বল হাতে রোহন কানহাইয়ের মত দুর্ধর্ষ ক্যরিবিয়ান ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠাচ্ছেন। একদিকে, ফুটবলে দেশের অধিনায়ক হিসেবে এশিয়ান গেমসে সোনা, অন্যদিকে ক্রিকেটে বাংলার অধিনায়ক হিসেবে দলকে নিয়ে যাওয়া রঞ্জি ফাইনালে। এমন অবিশ্বাস্য নজির ভারতীয় খেলাধুলোয় তো নেই-ই, আন্তর্জাতিক ক্রীড়ামহলেও বিরল। এই ছিলেন সুবিমল গোস্বামী। খেলার ময়দান যাঁকে প্রবাদপ্রতিম চুনী গোস্বামী বলেই চেনে।

ভারতীয় ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের অন্যতম তিনি। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ পর্যন্ত খেলেছেন মোহনবাগানে। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ পর্যন্ত ৫ টি মরসুমে বাগানের নেতৃত্ব দেন। দেশের হয়ে করেছেন ১১ টি গোল। তাঁর নেতৃত্বে ১৯৬২-এর এশিয়ান গেমসে সোনা জেতে ভারত। ১৯৬৪-এর এশিয়া কাপে তাঁর নেতৃত্বে রুপো জয় করেন। ১৯৬৮-এ ফুটবল থেকে অবসর নেন। তারপর ভারতীয় ফুটবল দলের কোচিংও করেছেন।

জন্ম ১৯৩৮-এর ১৫ জানুয়ারি, অধুনা বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে। আট বছর বয়সে মোহনবাগান জুনিয়র টিমে ফুটবলে হাতেখড়ি। এরপর বাগানের সিনিয়র টিমে খেলা শুরু। আজীবন খেলেছেন সবুজ মেরুনেই।

ক্রিকেটার হিসেবেও নজরকাড়া পারফরমেন্স। অল রাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট। ১৯৬২-৬৩ তে বাংলার হয়ে রঞ্জি অভিষেক। বাংলাকে নেতৃত্ব দিয়ে রঞ্জি ফাইনাল পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন চুনী গোস্বামী।

ভারতীয় ফুটবলের প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। যাঁর প্রয়াণে আর একবার নিঃস্ব হল এদেশের ক্রীড়াজগৎ। তবে, নতুন প্রজন্মের মনে তিনি জেগে থাকবেন অনুপ্রেরণা হয়ে।