জয়পুর ও নয়াদিল্লি: আইপিএলের ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের ব্যাটসম্যান জস বাটলারকে কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের অধিনায়ক আর অশ্বিনের মাঁকড়ীয় আউট ঘিরে বিতর্ক। এভাবে ব্যাটসম্যানকে আউট করা খেলার স্পিরিটের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ক্রিকেট বিশ্ব।  গতকাল সোমবার পঞ্জাব ও রাজস্থানের ম্যাচে এই ঘটনা ঘিরে। রাজস্থানের ইনিংসের ১৩ তম ওভারে বল করছিলেন অশ্বিন। নন স্ট্রাইকার প্রান্তে ছিলেন বাটলার। অশ্বিনের বল ছোঁড়ার আগের মুহূর্তে ক্রিজ ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন বাটলার। ওই সময় অশ্বিন বল না করে স্ট্যাম্প ভেঙে বাটলারকে রান আউট করেন।ব্যাটসম্যানকে কোনও রকম সতর্ক না করে এভাবে আউট করা নিয়ে দানা বেঁধেছে জোর বিতর্ক। ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওই সময় ভালো অবস্থায় ছিল রাজস্থান। তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ১০৮। বাটলার ৪৩ বলে ৬৯ রানে ব্যাটিং করছিলেন। শেষপর্যন্ত রাজস্থান ১৪ রানে হেরে যায়।




অশ্বিন যেভাবে বাটলারকে আউট করেছেন তা ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ভিনু মাঁকড়ের নামে পরিচিত।অবশ্যই তা প্রচলিত, আউটের আনুষ্ঠানিক নাম নয়। ১৯৪৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মাঁকড় এক ব্যাটসম্যানকে আউট করেছিলেন। বল করার সময় ব্যাটসম্যান ক্রিজের বাইরে থাকলে বেল ফেলে দিয়ে রান আউট করা মাঁকড়িং হিসেবে পরিচিত।

আইপিএলের গতকালের ম্যাচের আগে এ ধরনের আউট আরও হয়েছে। কিন্তু এরপরও গতকালের ঘটনা নিয়ে বিতর্ক থামছে না। অশ্বিনকে সমর্থন করেছেন প্রাক্তন দুই অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটার মিচেল জনসন ও ডিন জোন্স। জনসন বলেছেন, তিনি এমনটা করার আগে ব্যাটসম্যানকে সতর্ক করতেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, ব্যাটসম্যানেরও দায়িত্ব রয়েছে নিয়ম মেনে চলার। তাদের ক্রিজের মধ্যেই থাকা উচিত। তাই এই আউটকে ক্রিকেটের স্পিরিটের বিরুদ্ধে বলে মানতে নারাজ জনসন।  জোন্স বলেছেন, খেলার আইনেই তো রয়েছে এই আউট। তাহলে কীভাবে এই আউটকে ক্রিকেটের স্পিরিটের বিরুদ্ধে বলা যায়? জোন্সের মতে, এক্ষেত্রে অশ্বিনকে নয়, দায়ী করা উচিত প্রশাসকদের, যারা এই নিয়ম তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, ইয়োম মর্গ্যান, জেসন রয় এবং মাইকেল ভনের মতো ইংল্যান্ডের বর্তমান ও প্রাক্তন ক্রিকেটাররা এই আউটকে ক্রিকেটীয় স্পিরিটের পরিপন্থী বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এটা খুবই হতাশা জনক। ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে একেবারেই ভালো নজির রাখলেন না অশ্বিন।

অশ্বিনের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব শেন ওয়ার্ন। তিনি বলেছেন, অশ্বিন এভাবে আউট করায় হতাশ। এই আউট ক্রিকেটীয় স্পিরিটের পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। ওয়ার্ন বলেছেন, আইপিএলের প্রত্যেক অধিনায়কই ক্রিকেটীয় স্পিরিট মেনে খেলার অঙ্গীকার করেছে। অশ্বিনের তো বল ডেলিভারি করার  উদ্দেশ্য ছিল না। তাই ডেড বল ঘোষণা করা উচিত ছিল।

দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার ডেইল স্টেইনও অশ্বিনের সমালোচনা করেছেন। প্রাক্তন কিউই ক্রিকেটার স্কট স্টাইরিস মনে করেন, টিভি আম্পায়ার সঠিক সিদ্ধান্ত নেননি।  ডেড বল ঘোষণা করা উচিত ছিল।

রাজস্থান রয়্যা়লসের অধিনায়র আজিঙ্কা রাহানে অবশ্য ভারতীয় দলে তাঁর সহ খেলোয়াড় অশ্বিনের মাঁকড়িং নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার ম্যাচ রেফারির ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

রাজস্থানের কোচ প্যাডি আপটন ঘটনায় ক্ষুব্ধ।