লর্ডস: সালটা ছিল ২০০২। দিনটা ছিল আজকের দিনেই। অর্থাৎ ১৩ জুলাই। আজ থেকে ২২ বছর আগে এই দিনেই ভারতীয় ক্রিকেটে এক নবজাগরণ হয়েছিল। সেদিন সৌরভ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিতে হারিয়ে দিয়েছিল নাসের হুসেনের ইংল্য়ান্ডকে। শুধু ট্রফি জেতাই নয়। সেদিন খেলার পর একটি ছবি ভারতীয় ক্রিকেটের আইকনিক ছবিও হয়ে গিয়েছিল। লর্ডসের বিখ্যাত গ্য়ালারিতে দাঁড়িয়ে নিজের জার্সি খুলে শূন্যে উড়িয়েছিলেন সৌরভ। এক বাঙালি ছেলের বীর বিক্রমেই চূর্ণ হয়েছিল সেদিন ব্রিটিশ দম্ভ। ভারত যে বিদেশের মাটিতেও চোখে চোখে রেখে লড়াই করে বর্তমানে, তার শুরুটা ছিল সেই ন্য়াটওয়েস্ট সিরিজই।
সেদিন প্রথমে ব্য়াটিং করতে নেমেছিল ইংল্যান্ড। টস জিতেছিলেন নাসের হুসেন। ইংল্যান্ডের হয়ে ওপেনে নেমেছিলেন মার্কাস ট্রেসকোথিক ও নিক নাইট। ১০০ বলে ১০৯ রানের ইনিংস খেলেন ইংরেজ ওপেনার। সাতটি বাউন্ডারি ও দুটো ছক্কা হাঁকান তিনি। নিক নাইট ১৪ রান করে ফিরে যান। তবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেন ১২৮ বলে ১১৫ রানের ইনিংস খেলেন। ১০টি বাউন্ডারি হাঁকান ইংরেজ অধিনায়ক। অ্য়ান্ড্রু ফ্লিনটফ ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। মোট ৩১টি অতিরিক্ত রান দেন ভারতীয় বোলাররা। ৩ উইকেট নেন জাহির খান। ১টি করে উইকেট নেন আশিস নেহরা ও অনিল কুম্বলে। তবে বাকিরা কোনও উইকেট পাননি।
রান তাড়া করতে নেমে সৌরভ ও সহবাগ মিলে দলের স্কোর একশোর গণ্ডি পার করিয়ে দিয়েছিলেন। ১৪ ওভারে ১০৬ রান বোর্ডে তোলার পর প্রথম উইকেট হারায় ভারত। ৪৩ বলে ৬০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তৎকালীন ভারত অধিনায়ক। সহবাগ ৪৫ রান করেন। সচিন, মোঙ্গিয়া ও দ্রাবিড় কেউই রান পাননি। ৩২৬ রান তাড়া করতে নেমে ভাল শুরু করলেও একসময় দ্রুত উইকেট হারিয়ে ভারতের স্কোর হয়ে গিয়েছিল ১৪৬/৫। কিন্তু সেখান থেকে দলের হাল ধরেন মহম্মদ কাইফ ও যুবরাজ সিংহ। যুবরাজ ৬৩ বলে ৬৯ রান করে ফিরলেও কাইফকে আটকাতে পারেননি ইংরেজ বোলাররা। ৭৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ডানহাতি প্রাক্তন মিডল অর্ডার ব্যাটার। হরভজন ও জাহির খানকে সঙ্গে নিয়ে দলের জয় ছিনিয়ে আনেন কাইফ। নিজের অপরাজিত ইনিংসে ৬টি বাউন্ডারি ও ২টো ছক্কা হাঁকান কাইফ।
ম্য়াচ জেতার পরই লর্ডসের ব্যালকনিতে দেখা যায় সৌরভকে জার্সি খুলে শূন্যে ওড়াতে। ২০০০ সালে ভারতে সিরিজ খেলতে এসে সৌরভের ভারতকে হারিয়ে দেশে ফিরেছিল ইংল্য়ান্ড। সেদিন সৌরভের সামনেই জার্সি খুলে ঔদ্ধত্য দেখিয়েছিলেন ফ্লিনটফ। লর্ডসে ফ্লিনটফদের দেশে চ্যাম্পিয়ন হয়ে পাল্টা তা ফিরিয়ে দেন সৌরভ।