রাঁচি: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে রাঁচিতে চতুর্থ টেস্টে (IND vs ENG 4th Test) যশপ্রীত বুমরাকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। ব্যস্ত সূচির কথা মাথায় রেখেই লম্বা সিরিজ়ের ফাঁকে তারকা ভারতীয় বোলারকে বিশ্রাম দেওয়ার পরিকল্পনা করেন ভারতীয় নির্বাচকরা। সিরিজ়ের সর্বোচ্চ উইকেটসংগ্রাহক বুমরার অনুপস্থিতিতে ভারতীয় দলের বোলিং বিভাগ দুর্বল হয়ে যাবে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছিলেন। তবে আকাশ দীপের (Akash Deep) বিধ্বংসী বোলিং তাঁদের আশ্বাস জোগাবে।


বুমরার বদলি হিসাবে ভারতীয় একাদশে সুযোগ পাওয়ার দৌড়ে ছিলেন বাংলার দুই ফাস্ট বোলার মুকেশ কুমার ও আকাশ দীপ। ম্যাচের আগে অবশ্য অনুশীলনেই আকাশ দীপের খেলার পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছিল। সেইমতোই রাঁচিতে নিজের অভিষেক ঘটান আকাশ দীপ। ৩১৩তম ভারতীয় ক্রিকেটার হন আকাশ দীপ। চতুর্থ ভারতীয় হিসাবে চলতি সিরিজ়ে অভিষেক ঘটান তিনি।


শুরুটা কিছুটা দুর্ভাগ্যজনকই হয় ডান হাতি ফাস্ট বোলারের। জ্যাক ক্রলি স্টাম্প ভাঙলেও, আম্পায়ার সেটিকে নো দেন। ফলে অল্পের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেট হাতছাড়া হয় আকাশের। কিন্তু তিনি হতাশ হননি। আগ্রাসী ক্রলি ও বেন ডাকেটের হু হু করে বেড়ে চলা ওপেনিং পার্টনারশিপে বিরাম লাগান আকাশ দীপই। ডাকেটকে আউট করেন তিনি। ২৭ বছর বয়সি ফাস্ট বোলার একই ওভারে অলি পোপকেও আউট করেন। অল্পের জন্য রক্ষা পান জো রুট।


তবে প্রথমবার জীবনদান পেলেও আকাশের বলেই বোল্ড হন সেট ক্রলি। নো বলে প্রথমবারের বোল্ড এবং এই বোল্ড কার্যত একে অপরের কার্বন কপি। দুরন্ত ইনসুইংয়ে ক্রলির অফস্টাম্প ছিটকে দেন আকাশ। প্রথম সেশনেই ইংল্যান্ড টপ অর্ডারকে নাস্তানাবুদ করেন তিনি। তবে বিহারের দেহরিতে জন্ম নেওয়া আকাশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পর্যন্ত সফরটা কিন্তু একেবারেই মসৃণ ছিল না। দুর্গাপুরে টেনিস বল ক্রিকেট খেলে উঠে আসা আকাশ দীপের পরিবারে এক সময় অভাব, অনটন ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।


ছয় মাসের ব্যবধানে বাবা ও ভাইকে হারিয়ে আকাশের মাথায় বাজ ভেঙে পড়লেও, তিনি কিন্তু হার মানেননি। দুর্গাপুর থেকে কলকাতার ক্লাব ক্রিকেট এবং তারপর ২০১৯ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে ইডেন গার্ডেন্সে ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার হয়ে অভিষেক ঘটান তিনি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আকাশ দীপ ২৯ ম্যাচে ১০৩ টি উইকেট নিয়েছেন। বাংলার হয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স তো ছিলই, এরপর ভারতীয় এ দলের ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধেও বেশ নজর কাড়েন ডান হাতি ফাস্ট বোলার। চার ম্যাচে ১২ উইকেট নেন তিনি। 


এই পারফরম্যান্সই তাঁকে জাতীয় দলে জায়গা পাইয়ে দেয়। আর প্রথম সুযোগেই বিধ্বংসী বোলিং। ক্রলির উইকেট ছিটকে আকাশের লাফের মধ্যে ছিল কঠিন সময়ে হার না মেনে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সুফলের উচ্ছ্বাস। তাঁর বোলিং কিন্তু ভারতীয় দলের জন্য ভীষণই ইতিবাচক। স্বপ্নের অভিষেকে বাংলার ফাস্ট বোলার পাঁচ উইকেট তুলতে পারেন কি না, এখন সেটাই দেখার। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে


আরও পড়ুন: ব্যক্তিগত কারণে দেশে ফিরছেন, ভারত- ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ থেকে সরলেন রেহান