ডারউইন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ় সফরে দুরন্ত ছন্দে ছিলেন তিনি। দেশে ফিরেও সেই ফর্ম অব্যাহত রাখলেন টিম ডেভিড (Tim David)। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ের প্রথম ম্যাচেই (AUS vs SA 1st T20I) দুরন্ত ৮৩ রানের ইনিংস খেললেন টিম ডেভিড। সেই ইনিংসেই ভর করেই প্রোটিয়াদের হারাল অস্ট্রেলিয়া। রাজস্থান রয়্যালসের তরুণ তুর্কি কিউইনা মাফাকার (Kwena Maphaka) ঐতিহাসিক বোলিং স্পেলও দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয় এনে দিতে পারল না।

প্রথমে ব্যাটে নেমে বিধ্বংসী মেজাজে শুরুটা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে একদিকে যেখানে চার, ছক্কা ফুলঝুরি দেখা যাচ্ছিল, সেখানে অপরদিকে একের পর এক অজ়ি ব্যাটাররাও সাজঘরে ফিরছিলেন। ট্র্যাভিস হেড (২), জশ ইংলিস (০), মিচেল মার্শ (১৩), ক্যামেরন গ্রিনরা (৩৫) সকলেই পাওয়ার প্লের মধ্যেই সাজঘরে ফেরেন। দুই অজ়ি ওপেনারকে সাজঘরে ফেরান কাগিসো রাবাডা। জর্জ লিন্ডের বলে খাতা খোলার আগেই আউট হন ইংলিস। আর বিধ্বংসী গ্রিনকে ফেরান লুঙ্গি এনগিদি। মিচেল ওয়েন (২) ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১) বড় রান পেতে ব্যর্থ হন। ৭৫ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া।

এই পরিস্থিতিতে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ভরসা ছিলেন টিম ডেভিড। তিনিই বেন ডরস্যুইসকে নিয়ে পাল্টা লড়াই শুরু করেন। দুই জনে সপ্তম উইকেটে হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপও গড়েন। মাফাকা ডরস্যুইকে ফেরালেও ডেভিড নিজের দুরন্ত ইনিংস অব্যাহত রাখেন। দুরন্ত অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। মাফাকার বলে অবশেষে যখন ডেভিড আউট হলেন তখন তাঁর নামের পাশে লেখা ৮৩ রান। তৃতীয় ইনিংসে দ্বিতীয় শতরান হাতছাড়া হলেও, ডেভিডের ইনিংস অস্ট্রেলিয়াকে লড়াইয়ের জায়গা করে দেয়। নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৮ রানে অল আউট হয়ে যায় অজ়িরা। ২০ রানের বিনিময়ে চার উইকেট নেনে মাফাকা। এটিই অজ়িদের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে কোনও দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারের সেরা বোলিং।

জবাবে ব্যাটে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকাও শুরুটা খুব একটা ভালভাবে করেনি। এডেন মারক্রাম (১২) প্রথম ওভারেই আউট হন। লুয়ান ডি প্রিটোরিয়াস (১৪), ডেওয়াল্ড ব্রেভিসরা (২) বড় রান পারেননি। পাওয়ার প্লেতে অর্ধশতরানের গণ্ডি পার করার আগেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে রায়ান রিকেলটন ক্রিজে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে সঙ্গ দেন ট্রিস্টান স্টাবস। চলে পাল্টা লড়াই। দুই তারকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ম্যাচে এখনও ট্যুইস্ট বাকি ছিল।

ট্রিস্টান স্টাবসকে ৩৭ রানে জশ হ্যাজেলউড আউট করতেই বদলে যায় ছবিটা। ১২০ রানে তিন উইকেট থেকে মুহূর্তেই ১২৩ রানে সাত উইকেট হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। হ্যাজেলউড ও অ্যাডাম জাম্পার বোলিংয়ে তখন বিরাট চাপে প্রোটিয়া বাহিনী। দলের দায়িত্ব তাঁর কাঁধে বুঝতে পেরে রিকেলটন দায়িত্ব নিয়ে ব্যাট করেন। অর্ধশতরানের ইনিংস খেলেন। রাবাডা তাঁকে সঙ্গ দেন। তবে বাউন্ডারি লাইনে ম্যাক্সওয়েল-ম্যাজিকে শেষ হয় রিকেলটনের ৭১ রানের ইনিংস। তিনি আউট হওয়ার পরে অস্ট্রেলিয়ার জয় কার্যত সুনিশ্চিত ছিল। হলও তাই ১৭ রানে ম্য়াচ জিতে তিন ম্যাচের সিরিজ়ে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। হ্যাজেলউড ও ডারস্যুইস তিনটি করে উইকেট নেন। তবে ৮৩ রানের ইনিংস খেলে ডেভিডই ম্যাচ সেরা হন।