পারথ: অ্যালেক্স ক্যারির উইকেট ভেঙে দুই হাত ছড়িয়ে পরিচিত মেজাজে হর্ষিত রানার সেলিব্রেশন। পারথে স্মরণীয় জয় টিম ইন্ডিয়ার। ২৩৮ রানেই শেষ হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস । ২৯৫ রানে ম্যাচ জিতে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে (Border-Gavaskar Trophy) এগিয়ে গেল ভারতীয় দল।
পারথে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার প্রথম টেস্টের (IND vs AUS 1st Test) চতুর্থ দিনের দ্বিতীয় সেশনেই অস্ট্রেলিয়ার আট উইকেট পড়ে গিয়েছিল। অলৌকিক কিছু না হলে ম্যাচ যে আজকের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে, তা প্রায় নিশ্চিতই ছিল। হলও তাই। অবশিষ্ট দুই উইকেট নিতে খুব একটা বেশি সময় নিলেন না ভারতীয় বোলাররা। মিচেল স্টার্ক আউট হওয়ায় ওয়াশিংটন সুন্দরের ওভারের মাঝপথেই চায়ের বিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। চা বিরতির পর ওভারের শেষ বলেই ন্যাথান লায়নকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরান সুন্দরই।
তবে অস্ট্রেলিয়ানরা বরাবরই শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করার জন্য পরিচিত। অ্যালেক্স ক্যারি ও জশ হ্যাজেলউড সেটাই করার চেষ্টা করেন। কিন্তু খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি সেই লড়াই। শেষ উইকেটে ২৮ বলে ১১ রান যোগ করেন অস্ট্রেলিয়ানরা। হর্ষিতের দুরন্ত বলে ৩৬ রানে ক্যারির স্টাম্প ভাঙতেই ভারতের জয় সুনিশ্চিত হয়ে যায়।
এর আগে দিনের শুরুতেই, মাত্র দ্বিতীয় ওভারেই খাওয়াজাকে ফিরিয়েছিলেন সিরাজ। স্টিভ স্মিথ ও হেড খানিকটা লড়াই করেন বটে। পঞ্চম উইকেটে দুইজনে মিলে ৬২ রান যোগও করে ফেলেছেন। তবে স্মিথকেও সাজঘরে ফেরত পাঠান সিরাজই। হেডের প্রতিআক্রমণে শতরানের গণ্ডি পার করে অস্ট্রেলিয়া। পাঁচ উইকেটের বিনিময়ে ১০৪ রানে শেষ প্রথম সেশন। দ্বিতীয় সেশনে ১২৩ রানের বিনিময়ে ভারতীয় দল আরও তিন উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের একেবারে দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল ভারত।
প্রথম সেশন থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করছিলেন ট্র্যাভিস হেড। ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ ফাইনাল হোক বা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। অতীতে বারংবার ভারতীয় দলের পরাজয়ের কারণ হয়ে উঠেছেন বাঁ-হাতি তারকা ব্যাটার। ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থকরা তাঁর আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে তাই খানিকটা উদ্বিগ্নই ছিলেন। হর্ষিত বল হাতে তেমন প্রভাব ফেলতে পারেননি এবং অপরপ্রান্তে ওয়াশিংটন সুন্দরকেও বেশ সাদামাটা দেখাচ্ছিল। এই সুযোগেই তড়তড়িয়ে এগোয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস।
তবে অতীতে যেমন বারংবার ভারতের ত্রাতা হয়ে উঠেছেন, তেমনই এক্ষেত্রে দলকে বাঁচালেন বুম বুমই। তাঁর বলেই খোঁচা দিয়ে সাজঘরে ফেরেন হেড। ১০১ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মার্শও এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ৪৭ রানে ফেরেন তিনি। নীতীশ রেড্ডি প্রথম টেস্ট উইকেট হন তিনি। বল সামান্য নীচু থাকায় প্লেডঅন হন মার্শ। তবে এটা ছাড়া গোটা দিনে পিচে তেমন কোনও তারতম্য দেখা যায়নি। ব্যাটারদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল না। নবম উইকেটে মিচেল স্টার্ক ও অ্যালেক্স ক্যারির ৪৫ রানের পার্টনারশিপও সেই দিকেই ইঙ্গিত করে।
তবে প্রথম ইনিংসে শতাধিক বল খেললেও, দ্বিতীয় ইনিংসে ততটা টিকতে পারলেন না স্টার্ক। ওয়াশিংটন সুন্দরের বল ডিফেন্ড করতে গিয়ে তা স্টার্কের ব্যাটের কানায় লাগে। ব্যাড-প্যাডে একহাতে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন ধ্রুব জুরেল। ম্যাচ শেষ করতে তৃতীয় সেশনে বেশিক্ষণ সময় লাগেনি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: বিবাদ অতীত! সেঞ্চুরিয়ন কোহলি সাজঘরে ফিরতেই জড়িয়ে ধরলেন গম্ভীর, ভাইরাল ভিডিও