কলকাতা: তাঁর বিরুদ্ধে স্বার্থের সংঘাতে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল। বলা হয়েছিল, সিএবি-র ফিনান্স কমিটির সদস্য হয়েও নিজের হোটেলই সিএবি-কে ভাড়া দিয়ে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকা রোজগার করেছেন। সিএবি-র ফিনান্স কমিটির সদস্য, বেলগাছিয়া ক্লাবের প্রতিনিধি সেই সুব্রত সাহার বড় অঙ্কের জরিমানা হল। সঙ্গে জরিমানা করা হল সিএবিকেও!

গত মাসে সিএবি-র (CAB) ওম্বাডসম্যান ও এথিক্স অফিসারের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা পড়েছিল। অভিযোগপত্রটি দিয়েছিলেন সিএবি-র অ্যাপেক্স কাউন্সিলের বিদায়ী সদস্য মহাদেব চক্রবর্তী। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, গড়িয়াহাটের একটি হোটেলের ঘরভাড়া বাবদ গত দু'বছরে ৩৫ লক্ষ ৭৮ হাজার ৪০ টাকা মিটিয়েছে সিএবি। বিতর্ক শুরু হয়েছিল কারণ, যে হোটেলের জন্য গত দু'বছরে প্রায় ৩৬ লক্ষ টাকার বিল মিটিয়েছে সিএবি, সেই হোটেলের অন্যতম মালিক সিএবি-রই ফিনান্স সাব কমিটির সদস্য সুব্রত সাহা। সিএবি-র সমস্ত খরচ দেখা, বিল পাশ করা, বরাদ্দ ঠিক করা, বাজেট কষা ফিনান্স সাব কমিটির দায়িত্ব।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিল, সিএবি-র ফিনান্স কমিটির সদস্য নিজের হোটেলই ভাড়া দিচ্ছে সিএবি-কে, এটা স্বার্থের সংঘাত। এ বিষয়ে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করার জন্য সিএবি-র ওম্বাডসম্যান, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও এথিক্স অফিসার, প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল।

শুনানির শেষে রায় ঘোষণা করেছেন সিএবি-র এথিক্স অফিসার, প্রাক্তন বিচারপতি অসীম কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছেন, নতুন সাব কমিটি গঠন না হওয়া পর্যন্ত ফিনান্স সাব কমিটির কাজ করতে দেওয়া হবে না অভিযুক্ত সুব্রত সাহাকে। নতুন কমিটিতে তাঁকে রাখা হলেও হলফনামা জমা দিতে হবে। জানাতে হবে যে, এএসএল প্রাইম বা অন্য কোনও বাণিজ্যিক সংস্থার সঙ্গে তাঁর অর্থনৈতিক বা অন্য সম্পর্ক নেই। সেই সঙ্গে এক সপ্তাহের মধ্যে সুব্রত সাহাকে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে সিএবি-কেও ২ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি অসীম কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় রায়ে জানিয়েছেন, সুব্রত সাহা ও সিএবি-র ২ লক্ষ টাকা করে মিলিয়ে মোট চার লক্ষ টাকা ক্রিকেটের উন্নতির জন্য দান করা হবে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমিকে।

তবে মহাদেব চক্রবর্তী অভিযুক্ত সুব্রত সাহাকে সবরকম ক্রিকেটীয় কার্যকলাপ থেকে নির্বাসিত করার আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন নাকচ করেছেন প্রাক্তন বিচারপতি।

এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য সুব্রত সাহার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, 'আমি রায়ের কপি হাতে পাইনি এখনও। তবে শুনেছি। বিচারপতি যা নির্দেশ দিয়েছেন, দেখে তারপর প্রতিক্রিয়া দেব। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব কি না, এখনও জানি না। কপি পড়ে তারপর জানাব।'