মুম্বই: গুঞ্জন ছিল অনেক দিন ধরেই। ভারত টি-২০ বিশ্বকাপ জেতার পর এবার আরও জোরাল হল সেই সম্ভাবনা।
পাকিস্তানের (IND vs PAK) মাটিতে আয়োজিত হলে আগামী বছর আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (ICC Champions Trophy) খেলবে না ভারত? ভারতীয় ক্রিকেটের অন্দরমহলে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, জল্পনা নয়, হয়তো সত্যিই পাক-ভূমে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাবেন না রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিরা।
তবে ভারতকে ছাড়া কোনও আইসিসি ইভেন্ট অকল্পনীয়। শুধু ভারতীয় দলের ম্যাচ আয়োজন করেই যে বিশাল অঙ্কের লাভ হয় বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার, অন্য কোনও দেশের ম্যাচ থেকে তার সিকিভাগও আসে না আইসিসি-র কোষাগারে। তাই ভারতীয় ক্রিকেট দলকে ছাড়া বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করা ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থার কাছে আর্থিকভাবেও বিরাট লোকসানের।
আর সেই কারণেই ভারত চাইছে টুর্নামেন্ট একেবারে বয়কট না করে বিকল্প কিছু ভাবা হোক। আইসিসিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রস্তাব হল, শুধু পাকিস্তানে নয়, হাইব্রিড মডেলে আয়োজিত হোক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি।
কী এই হাইব্রিড মডেল? এই মডেল মানলে মূল টুর্নামেন্ট পাকিস্তানে হলেও শুধু ভারতের ম্যাচগুলি হতে পারে নিরপেক্ষ কোনও দেশে। ভারত নক আউট পর্বে উঠলে সেই ম্যাচগুলিও হবে নিরপেক্ষ কোনও দেশে। টিম ইন্ডিয়া ফাইনালের যোগ্যতা অর্জন করলে সেই ম্যাচও হবে অন্যত্র। সেক্ষেত্রে দুবাইয়ের নামও ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকর্তাদের মাথায় ঘোরাফেরা করছে বলে খবর। বিকল্প ভেন্যু হিসাবে ভাবনায় রয়েছে শ্রীলঙ্কার নামও।
এর আগে ২০২৩ সালে এশিয়া কাপ আয়োজনের ক্ষেত্রে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দাবি মেনে হাইব্রিড মডেল অনুসরণ করেছিল এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিল। সেবারও টুর্নামেন্টের আয়োজক দেশ ছিল পাকিস্তান। তবে বাবর আজ়মদের দেশে গিয়ে খেলতে রাজি ছিল না ভারত। তাই টুর্নামেন্টে ভারতের ম্যাচ-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আয়োজিত হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। ফাইনালও হয়েছিল শ্রীলঙ্কায়। ভারতই চ্যাম্পিয়ন হয়।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর বসার কথা পাকিস্তানের মাটিতে। তবে ভারত-পাকিস্তানের দ্বৈপাক্ষিক সম্পর্কের শীতলতা টুর্নামেন্টের ওপরই প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করে দিয়েছে। ২০০৮ সালের এশিয়া কাপের পর থেকে আর পাকিস্তানের মাটিতে খেলেনি ভারত। পাকিস্তান শেষবার ভারতের মাটিতে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলেছে ২০১২ সালের ডিসেম্বর ও ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে। তবে বিশ্বকাপ খেলতে ২০১৬ সালে বা গত বছরও ভারতে এসেছে পাক ক্রিকেট দল।
তারপর থেকে দুই দেশের বাইশ গজের সাক্ষাৎ শুধু আইসিসি বা এসিসি-র টুর্নামেন্টেই সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড চেয়েছিল, ভারতের সব ম্যাচ লাহৌরে আয়োজন করতে। যাতে এক শহর থেকে আর এক শহরে যাতায়াতের ঝক্কি না পোহাতে হয় এবং নিরাপত্তাজনিত সমস্তরকম উদ্বেগ দূরে রাখা যায়। যদিও সেই প্রস্তাব ধোপে টিকছে না।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্ল গত মে মাসেই জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের সবুজ সংকেত পেলে একমাত্র তবেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে যাবে ভারত। কেন্দ্রের তরফে সুর নরম করার ইঙ্গিত এখনও নেই।
সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এক বছর আগে থেকেই ভারত ও পাকিস্তান - দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের ঠান্ডা লড়াই শুরু হল বলে...
আরও পড়ুন: পিছিয়ে পড়েও রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে ফাইনালে স্পেনের সামনে ইংল্যান্ড
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।