চট্টগ্রাম: দীর্ঘদিন চোট ও অফ ফর্মের কারণে ভারতীয় দলের (Team India) বাইরেই সময় কাটাতে হয়েছে কুলদীপ যাদবকে (Kuldeep Yadav)। তবে তিনি ফের ফর্মে ফিরেছেন। দীর্ঘ সময় পরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চলতি ম্যাচেই টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন তিনি। আর প্রত্যাবর্তনেই পাঁচ উইকেট। লাল বলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকলেও সাদা বলের ক্রিকেটে জাতীয় দলের অংশ হওয়ায় তিনি এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে বাড়তি চাপ অনুভব করেননি বলেই জানান কুলদীপ।


কুলদীপের মন্তব্য


ভারতের তারকা চায়নাম্যান বোলার বলেন, 'চোটের পর আমি কোনওরকম ক্রিকেট না খেললে, তখন সেটা চাপের বিষয় হতো। তবে বিগত এক বছর ধরে আমি নিরন্তরভাবে (ভারতের হয়ে) সাদা বলের ক্রিকেট খেলছি এবং সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের (এ দল) বিরুদ্ধে লাল বলের সিরিজও খেলি। ওই সিরিজে আমি দীর্ঘ সময় বল করেছি। দলের সঙ্গে যদি থাকি, যদি দলের হয়ে তা সে যে ফর্ম্যাটই হোক না কেন, খেলার সুযোগ পাই, তাহলে আমি অন্তত চাপ অনুভাব করি না।' এই নিয়ে আটটি  টেস্ট ম্যাচে ৩১টি উইকেট নিয়ে ফেললেন কুলদীপ।


তবে এক ফর্ম্যাট থেকে অন্য ফর্ম্য়াটের বদলটাও তো বেশ চ্যালেঞ্জিং। এই পরিবর্তনের সঙ্গে সুন্দরভাবে মানিয়ে নিতে তাঁর বোলিং স্টাইল তাঁকে সাহায্য করেছে বলে জানাচ্ছেন কুলদীপ। 'আমার বোলিং স্টাইলটা এমনই যে ফর্ম্যাট বদল হলেও আমার মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয় না। হ্যাঁ, টেস্ট ম্যাচে উইকেট নিতে হলে বাড়তি পরিশ্রম করতে হয়, কারণ ব্যাটারদের হাতেও নিজেদের সেট করে পরিবেশ, পরিস্থিতি বুঝে শট খেলার যথেষ্ট সময় থাকে। ফিল্ডিং পজিসনেও বদল ঘটে এবং এই ফর্ম্যাটে ধারাবাহিকভাবে এক জায়গায় বল করতে হয়ে যেটা নিঃসন্দেহে বেশ চ্যালেঞ্জিং।' বলেন কুলদীপ।


তৃতীয় দিনের বিবরণ


দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলাদেশ আট উইকেটের বিনিময়ে ১৩৩ রান তুলেছিল। তৃতীয় দিনের শুরুতে ১৫০ রানেই শেষ হয়ে গেল বাংলাদেশের ইনিংস। বল হাতে পাঁচ উইকেট নেন কুলদীপ যাদব। তিন উইকেট নেন মহম্মদ সিরাজ। উমেশ যাদব ও অক্ষর পটেল একটি করে উইকেট নেন।  বাংলাদেশের হয়ে মুশফিকুর রহিমই সর্বাধিক ২৮ রান করেন। দ্বিতীয় ইনিংস ব্যাট করতে নেমে ভারতীয় দলের দুই ওপেনার কেএল রাহুল ও গিল শুরুটা বেশ ভালভাবেই করেন। ওপেনিংয়ে টিম ইন্ডিয়া ৭০ রান যোগ করেন।


তবে কেএল রাহুল শুরুটা ভাল করলেও ব্যক্তিগত ২৩ রানেই সাজঘরে ফেরেন। রাহুল সাজঘরে ফিরলে ইনিংসের হাল ধরেন গিল ও পূজারা। প্রথম ইনিংসে পূজারা অল্পের জন্য শতরান হাতছাড়া করেছিলেন। ৯০ রান করেছিলেন তিনি। তবে অবশেষে এই ইনিংসে নিজের দীর্ঘ শতরানের খরা কাটাতে সক্ষম হলেন পূজারা। ৫১ ইনিংস পর আসল শতরান। শুরুটা পূজারাচিত ভঙ্গিমায় করলেও, ইনিংস যত এগোয়, ততই আগ্রাসী শট খেলতে থাকেন তিনি। ১৩০ বলে ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন পূজারা।


অপরদিকে নিজের কেরিয়ারের প্রথম শতরান হাঁকান গিলও। ১১০ রানের দৃষ্টিনন্দন এক ইনিংস খেলেন গিল। ১৯ রানে বিরাট কোহলি অপরাজিত থাকেন। ভারত দুই উইকেটের বিনিময়ে ২৫৮ রানেই নিজেদের ইনিংস ঘোষণা করে দেয়। বাংলাদেশের হয়ে খলিল আমেদ ও মেহেদি হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট নেন। প্রথম ইনিংসে প্রভাবিত করা ইবাদত হোসেন চোটের কারণে এই ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে বলই করতে পারেননি, যা দলকে বেশ সমস্যায় ফেলে দেয়। 


ভারতের ইনিংস ঘোষণার পর দিনের বাকি খেলায় বাংলাদেশ কিন্তু এক উইকেটও হারায়নি। কোনও দল ইনিংস ঘোষণার পর অপরদলের জন্য দিনের শেষ ১০-১১ ওভার ব্যাট করাটা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং হয়। সেই চ্যালেঞ্জটা দারুণভাবে সামলালেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার জাকির হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাঁরা যথাক্রমে ১৭ ও ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশকে ম্যাচের শেষ দুই দিনে জয়ের জন্য আরও ৪৭১ রান তুলতে হবে।


আরও পড়ুন: চোট সারিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ভারতকে নেতৃত্ব দিতে তৈরি রোহিত শর্মা?