রায়পুর: চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে (IND vs AUS 4th T20I) ২০ রানে চতুর্থ ম্যাচ জিতে সিরিজ় জিতে নিয়েছে সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। এই জয়ের ফলে শুধু সিরিজ় জেতা নয়, বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেলল টিম ইন্ডিয়া (Team India)।


টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ভারতীয় দল এখনও পর্যন্ত মোট ২১৩টি ম্যাচ খেলেছে। ৬৭টি ম্যাচে হারতে হয়েছে ভারতীয় দলকে, টাই হয়েছে একটি ম্যাচ, অমীমাংসিত শেষ হয়েছে তিনটি ম্যাচ। অজ়িদের বিরুদ্ধে রায়পুরে জয়টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটে ভারতীয় দলের ১৩৬তম জয়, যা সর্বকালের সর্বাধিক। বিশ ওভারের ক্রিকেটে জয়ের বিচারে টিম ইন্ডিয়া চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান দলকে পিছনে ফেলল। পড়শি দেশের দখলে এই ফর্ম্যাটে ১৩৫টি ম্যাচ (২২৬টি ম্যাচ খেলে) জেতার কৃতিত্ব রয়েছে।


ভারত ও পাকিস্তানের পর তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে নিউজ়িল্যান্ড। ২০০টি ম্যাচ খেলে কিউয়িরা ১০২টি ম্যাচ জিতেছে। চতুর্থ স্থানে কিউয়িদের পড়শি অস্ট্রেলিয়া (১৮১টি ম্যাচে ৯৫টি জয়)। দক্ষিণ আফ্রিকাও অস্ট্রেলিয়ার সমসংখ্যক ম্যাচ জিতেছে। তবে অজ়িদের থেকে ১০টি ম্যাচ কম খেলেছে প্রোটিয়া।


অজ়িদের বিরুদ্ধে ভারত বাজিমাত করেছে মূলত অক্ষর প্যাটেল ও রবি বিষ্ণোইয়ের ঘূর্ণি কামালে ভর করে। প্রথম ব্যাট হাতে দলকে লড়াইয়ের শক্ত-পোক্ত মঞ্চটা তৈরি করে দিয়েছিলেন রিঙ্কু সিংহ-জিতেশ শর্মা। তারপর বল হাতে বাকি কাজটা সারেন স্পিনাররা। প্রশংসা প্রাপ্য প্রথমবার দেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করা সূর্যকুমার যাদবের বোলিং পরিবর্তনেরও। প্রথমে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৭৪ রানে থেমে গিয়েছিল ভারতের ইনিংস। জবাবে অজিদের ১৫৪ রানেই থামিয়ে দেন ভারতীয় বোলাররা।


বিশ্বকাপের ফাইনালে আসমুদ্রহিমাচলের স্বপ্ন ভেঙে দেওয়া ট্রাভিস হেড (৩১) চতুর্থ টি ২০ ম্যাচেও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠারই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তাঁকে ও আরও দু'জন অজি টপ অর্ডারের ব্যাটার মোট ৩ টি উইকেট নেন অক্ষর। ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানের ব্যবধানে। উইকেটের খতিয়ানে রবি বিষ্ণোইয়ের নামের পাশে একটি উইকেট থাকলেও রান তাড়া করতে নামা অজিদের প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে অক্ষরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে করে গিয়েছেন দুরন্ত বোলিং। শুরুর দিকে দীপক চাহারের একটি ওভারে ২২ রান তুলেছিলেন হেড। পরের দিকে তাঁকে ব্যবহার করে ২ উইকেট তুলে নেওয়ার কাজে সফল হন সূর্য।


প্রথমে ব্যাট করতে নেমে যশস্বী জয়সওয়াল (৩৭) ঝোড়ো শুরু করলেও ইনিংসের মাঝপর্বে অজি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে বোলিং ও অভিজ্ঞ ব্যাটারদের বাজে শটের খেশারতে পরপর উইকেট খুইয়ে বসেছিল ভারত। কিছুটা চাপের পরিস্থিতি তৈরি হলেও সেটা শেষপর্যন্ত সামলে দিতে সক্ষম হয়েছে টিম ইন্ডিয়া। যশস্বী ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই দলে ফেরা শ্রেয়স আইয়ার (৮), সূর্যকুমার যাদব (১) সাজঘরে ফিরে যান। তারপর রিঙ্কুকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানতে শুরু করেন রুতুরাজ গায়কোয়াড় (৩২)।


৪৮ রানের যে পার্টনারশিপ ভাঙলেও লড়াই জারি রাখেন রিঙ্কু সিংহ (Rinku Singh)। ৪ টি চার ও ২ টি ছক্কার সাহায্যে ২৯ বলে ৪৬ রান হাঁকান তিনি। দলে সুযোগ পেয়ে ঝোড়ো ইনিংস খেলে ভারতের ইনিংসকে আরও শক্তপোক্ত জায়গায় নিয়ে যান জিতেশ শর্মা (Jitesh Sharma)। ১ বাউন্ডারি ও ৩ টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১৯ বলে ৩৫ রান হাঁকান তিনি। শেষপর্বে আর সেভাবে বড় রান না হাঁকাতে পারলেও শেষপর্যন্ত ১৭৪ রানের লড়াকু স্কোর খাড়া করে ভারত। আর বোলারদের দাপটে যে স্কোর সামলে রেখে ২০ রানে ম্যাচ ও সিরিজ জেতে ভারত।


প্রসঙ্গত, সিরিজের প্রথম দুটো ম্যাচে জিতে দারুণভাবে শুরু করেছিল ভারত। গত ম্যাচে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দাপটে অজিরা ম্যাচ জিতে সিরিজ জমিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু চতুর্থ ম্যাচে জিতেই ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ পকেটে পুরে ফেলল ভারত। শেষ ম্যাচে মাঠে নামার আগেই। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


https://whatsapp.com/channel/0029VaCBCh6545uwkeNBg11y


আরও পড়ুন: ইরফান পাঠানের সঙ্গে সম্পর্কে থাকাকালীন ফোন করতেন গম্ভীর, অভিযোগ বাঙালি অভিনেত্রীর