সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তাঁকে তিন ফর্ম্যাটেই বিশ্বের সেরা ফাস্টবোলার মনে করা হয়। খেলেনও তিন ফর্ম্যাটেই। তবু, তাঁর ফিটনেস নিয়ে নিরন্তর প্রশ্ন ওঠে। কখনও আতসকাচের তলায় ফেলা হয় তাঁর ফিটনেসকে। কখনও তাঁর ওয়ার্কলোড নিয়ে বোর্ডের এত সতর্কতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
যশপ্রীত বুমরা অবশ্য সেসব নিয়ে ভাবতে নারাজ। নিখুঁত ইয়র্কারে যেরকম ব্যাটারদের মনে আতঙ্ক তৈরি করেন, সেভাবেই সমালোচনাকে ক্লিন বোল্ড করছেন বুম বুম। ইডেনে কোনও টেস্ট ম্যাচ খেলেননি। কেরিয়ারে প্রথমবার ইডেনে টেস্ট খেলতে নেমেই ২৭ রানে পাঁচ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ের ওপর দিয়ে বুলডোজার চালিয়ে দিলেন বুমরা।
প্রথম দিনের খেলার শেষে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিন ফর্ম্যাটে সাফল্যের পরেও ফিটনেস নিয়ে এত কথা বলা হয়, তারপর এই সাফল্য কি বাড়তি খুশির? বুমরার চাঁচাছোলা জবাব, 'নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুব খুশি। যে ফর্ম্যাটেই খেলি না কেন, নিজের সেরাটা দিই। তারপরেও ফিটনেস নিয়ে যে সমস্ত প্রশ্ন তোলা হয়, সেগুলো আমার নিজের প্রশ্ন নয়। আমি সেগুলোর জবাব দেব না। আমি যত বেশি সম্ভব ম্যাচ খেলার চেষ্টা করি। প্রত্যেক ফর্ম্যাটেই সেরা খেলাটা খেলতে চাই। সেভাবেই কেরিয়ারকে দেখেছি। ভবিষ্যতেও সেভাবেই খেলব। বাকি প্রশ্ন তোলা বা উত্তর দেওয়া, যে যা খুশি করতে পারে। আমি যতদিন দলের কাজে লাগতে পারছি, ততদিন খুশি। নতুন নতুন জিনিস শিখতে চাই আর দলের হয়ে অবদান রাখতে চাই।'
ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর ইডেনের পিচ নিয়ে তির্যক মন্তব্য করেছেন অ্যাশওয়েল প্রিন্স। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং কোচ বলেছেন, এই পিচে শট খেলা সহজ নয়। অসমান বাউন্স রয়েছে। কোনও বল নীচু হচ্ছে, কোনওটা লাফাচ্ছে। কে এল রাহুলের মন্থর ব্যাটিংয়ের দিকেও আঙুল তুলেছেন প্রিন্স।
যা শুনে বুমরার পাল্টা, 'উইকেট নিয়ে আমরা কিছু বলি না। দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে পাঁচ সেশনে ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছে। আমরা তো কিছু বলিনি। আমরা দক্ষ ক্রিকেটার আর আমাদের কাজই হল সব পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেওয়া। আমরা অস্ট্রেলিয়া কিংবা ইংল্যান্ডে গেলেও বিভিন্নরকম পরীক্ষার মুখে পড়ি। এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য।'
তাঁর সাফল্যের মন্ত্র কী? বুমরা বলছেন, 'টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম পাঠটাই হল ধৈর্য। সফল হতে গেলে ধৈর্য ধরতেই হবে। এখানে যেরকম পিচ, মাঠ দ্রুত গতির, উইকেটচ হার্ড। দারুণ একটা ম্যাজিক বল করার চেষ্টা করলে দ্রুত রান বেরিয়ে যাবে। তাই লোভ সংবরণ করতে হয়। চাপ তৈরি করতে হয়। যাতে রান সহজে না বেরিয়ে যায়।'