ODI World Cup 2023 Live: ঘরের মাঠে লজ্জার হার ভারতের, ৬ উইকেটে জিতে ষষ্ঠবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া
ODI World Cup 2023, IND Vs Australia Final: দুই দশক আগে এক ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল সৌরভের ভারতের। মুম্বইয়ে সেই হারের বদলা নিতে পারবে রোহিতের ভারত?
১২০ বলে ১৩৭ রান করলেন হেড। ৬ উইকেটে ভারতকে হারিয়ে ষষ্ঠবারের জন্য ওয়ান ডে-তে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হল অস্ট্রেলিয়া।
৯৫ বলে সেঞ্চুরি ট্র্যাভিস হেডের। ৩৫ ওভারের শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কের ১৯২/৩। জয়ের কাছাকাছি অস্ট্রেলিয়া।
২৮ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রান বোর্ডে তুলে নিল ভারতীয় দল। ট্রাভিস হেড ৮৪ ও মার্নাস লাবুশেন ৩৫ রান করে ক্রিজে অপরাজিত রয়েছেন।
অর্ধশতরানের গণ্ডি পেরলেন ট্রাভিস হেড। ২৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান বোর্ডে তুলে নিল অস্ট্রেলিয়া।
ট্র্যাভিস হেড ও মার্নাস লাবুশেনের ব্যাটে প্রতিরোধ অস্ট্রেলিয়ার। ১৬ ওভারের শেষে স্কোর ৮৭/৩।
বুমরার বলে এলবিডব্লিউ স্মিথ। ৭ ওভারের শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৪৭/৩।
যশপ্রীত বুমরার বলে কট বিহাইন্ড মিচেল মার্শ (১৫ বলে ১৫ রান)। ৫ ওভারের শেষে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৪১/২।
প্রথম ধাক্কা মহম্মদ শামির। ৩ বলে ৭ রান করে ফিরলেন ডেভিড ওয়ার্নার। প্রথম স্লিপে দুরন্ত ক্যাচ বিরাট কোহলির। ১.৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ১৮/১।
ষষ্ঠবারের জন্য বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে গেলে অস্ট্রেলিয়াকে তুলতে হবে ২৪১ রান। ভারতীয় বোলারদের চাই ১০ উইকেট। গোটা টুর্নামেন্টে দারুণ ছন্দে থাকা ভারতীয় বোলিং আক্রমণের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।
২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজলউডের শিকার সূর্যকুমার। কুলদীপ ১০ রানে আউট হলেন। ৯ রান করে অপরাজিত সিরাজ়। ৫০ ওভারে ভারত তুলল ২৪০।
মিচেল স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ড মহম্মদ শামি (৬ রান)। অ্যাডাম জ়াম্পার বলে এলবিডব্লিউ বুমরা (১)। ৪৫ ওভারের শেষে ভারতের স্কোর ২১৫/৮।
১০৭ বলে ৬৬ রান করে স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ড রাহুল। ৪২ ওভারের শেষে ভারতের স্কোর ২০৭/৬। ক্রিজে সূর্যকুমার যাদব ও মহম্মদ শামি।
২২ বলে ৯ রান করে হ্যাজলউডের বলে কট বিহাইন্ড জাডেজা। ৩৮ ওভারের শেষে ভারতের স্কোর ১৮২/৫।
৬৩ বলে ৫৪ রান করে প্যাট কামিন্সের বলে বোল্ড বিরাট কোহলি। ৩১ ওভারের শেষে ভারতের স্কোর ১৫৮/৪।
চাপের মুখে ফের অনবদ্য বিরাট। ৫৬ বলে নিজের অর্ধশতরান পূরণ করলেন ভারতের মহাতারকা। দেখেশুনে ব্যাটিং করছেন কেএল রাহুল। তিনি ৫৮ বলে ২৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন। দুইজনে অর্ধশতরানের পার্টনারশিপও গড়ে ফেললেন। ২৬ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ১৩৫/৩।
পরপর ধাক্কার পর ভারতের ইনিংস সামলাচ্ছেন বিরাট কোহলি ও কেএল রাহুল। ইতিমধ্যেই চতুর্থ উইকেটে দুইজনে মিলে ৪৪ রান যোগ করে ফেলেছেন। ২৩ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ১২৫/৩। কোহলি ৪৫ ও কেএল রাহুল ২৩ রানে ব্যাট করছেন।
১৬তম ওভার শেষে শতরানের গণ্ডি পার করল ভারতীয় ক্রিকেট দল। বড় রানের দিকে এগোচ্ছেন বিরাট। ৩৪ রানে ব্যাট করছেন তিনি। কেএল রাহুল খেলছেন ১০ রানে। ১৬ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ১০১/৩।
রোহিত শর্মা আউট হওয়ার ঠিক পরের ওভারেই প্যাট কামিন্স মাত্র চার রানে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন শ্রেয়স আইয়ারকে। ৮১ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল ভারতীয় ক্রিকেট দল।
সপ্তম ওভারে অর্ধশতরানের গণ্ডি পার করে ভারতীয় দল। ৩১ বলে ৪৭ রানে আউট হলেন রোহিত শর্মা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে বড় শট হাঁকাতে গিয়েই সাজঘরে ফিরতে হল রোহিতকে। ৭৬ রান দ্বিতীয় উইকেট হারাল ভারত। পিছনে ছুটে অনবদ্য ক্যাচ ধরলেন ট্র্যাভিস হেড।
ভারতকে প্রথম ধাক্কা দিলেন মিচেল স্টার্ক। পুল শট মারতে গিয়ে মিড অনে অ্যাডাম জাম্পার হাতে ধরা দিলেন শুভমন গিল। ৫ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ৩৭/১। তবে ছন্দে রোহিত শর্মা। তিনি ৩১ রানে ব্যাট করছেন। বিরাট কোহলির সংগ্রহ এক রান।
তিন ওভার শেষে ভারতের স্কোর বিনা উইকেটে ১৮ রান। গিল তিন ও রোহিত ১৪ রানে ব্যাট করছেন। শুরু থেকইে অনবদ্য ফিল্ডিং করছে অস্ট্রেলিয়া। ইতিমধ্যেই একাধিক বাউন্ডারি বাঁচিয়েছেন ম্যাক্সওয়েলরা।
ভারতের একাদশ- রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়স আইয়ার, কে এল রাহুল (উইকেটকিপার), সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাডেজা, মহম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদব ও মহম্মদ সিরাজ়।
ফাইনাল ম্যাচে টস জিতলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ার। তবে টস হারলে ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট খুশিই হবে। রোহিত জানান তিনি টস জিতলে এমনিও ব্যাটিং নিতেন।
বেশ খানিকটা সময় আগেই মাঠে পৌঁছে গিয়েছে ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া দুই দলই। মাঠে পৌঁছে অনুশীলনও শুরু করে দিয়েছেন দুই দলের তারকা ক্রিকেটাররা।
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল ম্যাচে বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই। দিনের বেলায় তাপমাত্র সর্বোচ্চ ৩৩ ডিগ্রি থেকে থাকলেও, রাতে বেলায় তা ২০ ডিগ্রিতে নেমে যেতে পারে। আর যদি আজ বৃষ্টি হয়ও, তাহলেও ম্যাচের জন্য একটি রিজার্ভ ডে রয়েছে।
আর কয়েক ঘণ্টা পরেই আমদাবাদে শুরু হতে চলেছে বিশ্বকাপ ফাইনাল। ফাইনাল ঘিরে উৎসবের আমেজ গোটা দেশজুড়ে। তবে আকাশচুম্বী টিকিটের দামের পাশাপাশি গোটা আমদাবাদ জুড়েই মহার্ঘ হোটেল। বিমান, রেলের টিকিটের হাহাকার চারিদিকে। এরই মাঝে সমর্থকদের মুশকিলআসানে এগিয়ে এল ভারতীয় রেল। সমর্থকরা যাতে ম্যাচ দেখতে যেতে পারেন, তার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করল ভারতীয় রেল। মুম্বই থেকে আমদাবাদ পর্যন্ত চলল বিশেষ বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সময়ে আমদাবাদ পৌঁছে উচ্ছ্বাস এবং কৃতজ্ঞতার সুর সমর্থকদের গলায়।
বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে হারতে হয়েছিল অস্ট্রলিয়াকে। তবে তারপর থেকে অস্ট্রেলিয়া অপরাজিত। টানা আট ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছেন প্যাট কামিন্সরা।
চলতি বিশ্বকাপের শুরুটা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই করেছিল ভারতীয় দল। অজ়িদের বিরুদ্ধে ছয় উইকেটে ম্যাচ জিতেছিল ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে ১৯৯ রানে অল আউট করার পর কেএল রাহুলের ৯৭ রানের ইনিংসে ম্যাচ জেতে ভারত। সেই ম্যাচের আরও টানা নয় ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছেছে টিম ইন্ডিয়া। এবার সেই অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েই বিশ্বকাপ খেতাব জিতে টুর্নামেন্ট শেষ করার হাতছানি ভারতের সামনে।
আবার বছর ২০ পর...ফের বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি ভারত-অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে। আজ বিকেলে আমদাবাদে পৌঁছবেন প্রধানমন্ত্রী। স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ দেখবেন অস্ট্রেলিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। আমদাবাদে পৌঁছে গেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের বাইরে উন্মাদনা তুঙ্গে। ফাইনাল উপলক্ষে দিল্লি থেকে আমদাবাদ বিশেষ ট্রেন চালাচ্ছে ভারতীয় রেল। আমদাবাদে বিশ্বকাপ ফাইনালের আঁচ কলকাতাতেও। বিভিন্ন ক্লাবে উদ্যাপনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে সকাল থেকেই।
রবিবাসরীয় আমদাবাদে ফাইনাল ম্যাচ শুরু হবে দুপুর দু'টো নাগাদ। টস দুপুর দেড়টা নাগাদ। এরপরেই শুরু হবে একগুচ্ছ অনুষ্ঠান। টসের পর ১টা ৩৫ থেকে ১টা ৫০ পর্যন্ত ভারতীয় এয়ার ফোর্সের সূর্যকিরণ অ্যাক্রোব্যাটিক দল পারফর্ম করবে। ইনিংসে মাঝে থাকবে গানের অনুষ্ঠান। প্রীতম চক্রবর্তী, জোনিতা গাঁধী, অমিত মিশ্ররা পারফর্ম করবেন দুই ইনিংসের মাঝে। এগুলি তো রয়েইছে। তবে শুধু ম্যাচ শুরুর আগে এবং ইনিংসের মাঝেই নয়, বিনোদনের বন্দোবস্ত থাকছে জলপানের স্বল্প দৈর্ঘ্যের বিরতির সময়ও। প্রথম ইনিংসের জলপানের বিরতির সময় আদিত্য গাঁধভী পারফর্ম করবেন। দ্বিতীয় ইনিংসের বিরতির সময় থাকছে বিশেষ লেজার এবং লাইট শো।
ভারত-নিউজ়িল্যান্ড সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে পিচ বদলকে কেন্দ্র করে বেশ শোরগোল পড়ে যায়। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ফাইনাল ম্যাচও নজরে পিচ। পিটিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী ভারী রোলার ব্যবহার করে ফাইনালের জন্য স্লো ট্র্যাক তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে যারা ব্যাট করবে তারা অপর পক্ষের থেকে এগিয়ে থাকতে পারে। যদিও রিপোর্টে এটা বলা হয়নি, নতুন পিচ থাকবে নাকি কোনও ব্যবহৃত পিচ। পিচ প্রস্তুতির দায়িত্বে দিই বাঙালি। আশিস ভৌমিক ও তাপস চ্যাটার্জি।
চলতি বিশ্বকাপে বল হাতে আগুন ঝরাচ্ছেন মহম্মদ শামি। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটসংগ্রাহক তিনি। ফাইনালের আগে সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় পেসারকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন অজ়ি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। বললেন, "আমি বলতে চাইছি, ওঁরা প্রত্যেকেই সব ডিপার্টমেন্টে অসাধারণ অবস্থায় রয়েছেন। তবে, টুর্নামেন্টের শুরুতে সুযোগ না পাওয়া মহম্মদ শামি সত্যিই অসাধারণ খেলছেন। ডান ও বাঁ হাতিদের বিরুদ্ধে ও একজন ক্লাস বোলার। তাই হ্যাঁ, শামিকে সমীহ করতেই হয়।"
ম্যাচের আগে রোহিত শর্মা খোলসা করে জানিয়ে দিলেন, তাঁরা দলের হেড কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের জন্য জিততে চান এই বিশ্বকাপ। রোহিত বলেন, "দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে স্বচ্ছতা আনতে বিশাল ভূমিকা নিয়েছেন রাহুল দ্রাবিড়। ২০২৩-এর বিশ্বকাপে টানা ১০ ম্যাচে জিতেছে ভারত। তৃতীয়বারের জন্য খেতাব জেতার লক্ষ্যে কাল নামবে।" রোহিত বলেন, "ওঁর বিশাল ভূমিকা রয়েছে। স্বচ্ছতা রয়েছে, যার কথা আমি বারবার উল্লেখ করি। কিন্তু হয়তো ধরুন, আমি কিছু একটা ভাবছি, কিন্তু কোচ তাতে রাজি হচ্ছেন না। আপনারা জানেন, রাহুল ভাই কীভাবে ক্রিকেট খেলেছেন এবং আমি কীভাবে খেলি। অবশ্যই পুরো বিষয়টা ভিন্ন মেরুর। অথচ, এই পরিস্থিতিতেও উনি আমাদের যে স্বাধীনতাটা দিয়েছেন বা বলা ভাল আমরা যেভাবে খেলতে চাই সেভাবে খেলার স্বাধীনতা দিয়েছেন, সেটাই ওঁর সম্বন্ধে অনেক কিছু বলে দেয়। এই বিশাল মুহূর্তের অংশ থাকতে চান দ্রাবিড় এবং এখন ওঁর জন্য খেতাব জেতা উচিত দলের।"
ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে কিন্তু অজ়িরাই। ৮৩ টি ম্যাচ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ৫৩টি জয় এসেছে ভারতের ঝুলিতে। ১০টি ম্যাচ অমীমাংসিতই শেষ হয়েছে।
প্রেক্ষাপট
আমদাবাদ: আজ বিশ্বকাপের (ODI World Cup Final) ফাইনাল। দেড় মাস ধরে চলা বাইশ গজের বিশ্বযুদ্ধের পরিসমাপ্তি। মুখোমুখি ভারত ও অস্ট্রেলিয়া (IND vs AUS)। এক দলের সামনে ১২ বছর পর ফের ঘরের মাঠে বিশ্বজয়ের সুযোগ। অন্য দলের সামনে হেক্সা করার হাতছানি। কেউ কেউ আবার ফাইনাল ম্যাচের গায়ে জড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিশোধের প্রলেপ। বলছেন, অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে হারিয়ে কাপ জয় মানে শুধু ক্রিকেটীয় শ্রেষ্ঠত্বের যুদ্ধে বিজয়ী তকমা ছিনিয়ে নেওয়াই নয়, ২০ বছর পুরনো শাপমোচনের মঞ্চও। ২০০৩ সালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়াকে ফাইনালে নাস্তানাবুদ করে ট্রফি জিতেছিল রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়া। এবার ভারতের সামনেও তাই 'মওকা মওকা' বাজিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এই দেড় মাসে ক্রিকেট বিশ্বও কত বদলে গিয়েছে। বিরাট কোহলি ওয়ান ডে ক্রিকেটে সেঞ্চুরির হাফসেঞ্চুরি করে ভেঙে দিয়েছেন সচিন তেন্ডুলকরের কীর্তি। বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির নজির গড়েছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাড-ম্যাক্সের ১২৮ বলে অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংসকে তো অনেকে ওয়ান ডে ক্রিকেটে সর্বকালের সেরা বলে চিহ্নিত করেছেন। নিউজ়িল্যান্ডের ফের নক আউট থেকে বিদায়। পাকিস্তানের গ্রুপ পর্বেই বিপর্যয় আর সে দেশের ক্রিকেটে খোলনলচে বদলে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু। শাকিব আল হাসানের বাংলাদেশের হাত ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম টাইমড আউটের দৃষ্টান্ত। সরকারি হস্তক্ষেপের জন্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে আইসিসি-র নির্বাসন। আফগানিস্তানের উত্থান। সব মিলিয়ে জমজমাট থেকেছে ক্রিকেট বিশ্ব।
এবার টুর্নামেন্টের নাটকীয় পরিসমাপ্তির অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। একটা ব্যাপারে সকলে একমত যে, ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে টুর্নামেন্টের সেরা দুই দলই। একদিকে ভারত টানা ১০ ম্যাচ জিতে, অপরাজিত থেকে ফাইনালে। অন্যদিকে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে টানা আট ম্যাচ জিতে চূড়ান্ত যুদ্ধে নামার সুযোগ অস্ট্রেলিয়ার। ফেভারিট তকমা পাচ্ছে ভারতই। পাবে নাই বা কেন? চলতি বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাট করলে ভারত গড়ে ১৭৫ রানে জিতেছে ম্যাচ। আর রান তাড়া করলে গড়ে ৬৪.৪ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতেছেন রোহিত শর্মারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে একপেশেভাবে হারিয়েছিল ভারত। ফলে আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রবিবার দুপুরে যে কাপ জয়ের প্রধান দাবিদার হিসাবেই টস করতে নামবেন রোহিত শর্মা, বলার অপেক্ষা রাখে না।
আর সেটাই না শাপে বর হয় অস্ট্রেলিয়ার কাছে, আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। বিশ্বকাপের ঠিক আগে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারতের কাছে সিরিজ হেরেছিলেন অজ়িরা। বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ৯১/৭ হয়ে গিয়েছিলেন। ম্যাক্সওয়েলের সেই অবিশ্বাস্য ইনিংস না থাকলে হয়তো সেই ম্য়াচেই বেইজ্জত হতে হতো অস্ট্রেলিয়াকে। ফাইনালে প্যাট কামিন্সরা কালো ঘোড়া হিসাবেই নামবেন। চাপমুক্ত হয়ে মাঠে নামা না আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়ায় অজ়ি শিবিরের কাছে।
তবে নির্লিপ্ত থাকার চেষ্টা করছেন ভারতীয় ক্রিকেটারেরা। শনিবার রোহিত বলেছেন, 'আমরা জানি কী পরিমাণ প্রত্যাশা রয়েছে। চাপ, সমালোচনা সব কিছু নিয়েই ওয়াকিবহাল। তবে সেটা আজ তৈরি হয়নি প্রথম ম্যাচ থেকেই রয়েছে। আমরা ড্রেসিংরুমের পরিবেশ শান্ত, সংযত রাখার চেষ্টা করে গিয়েছি। এমনকী মাঠে চাপের মুখে পড়লেও শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি। চাপ অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি।' ঝড়ের আগের নিস্তব্ধতা?
গোটা বিশ্বকাপে ভারতীয় দল গর্ব করার মতো একাধিক মুহূর্ত তৈরি করেছে। প্রতিপক্ষকে একবার অল আউট করেছে ৮৩ রানে, আর একবার ৫৫-তে। পাঁচ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে তিনবার সাড়ে তিনশোর ওপর রান তুলেছে। এক ম্যাচে তুলেছে ৩২৬/৫। ফিল্ডিংয়ে নিশ্ছিদ্র। টপ অর্ডার ব্যাটিংয়ে পাঁচজনের মধ্যে চারজন চলতি বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। শুভমন গিল সেঞ্চুরি না পেলেও ব্যাটিং গড় রেখেছেন ৫০!
সঙ্গে রয়েছে জনতা জনার্দনের সমর্থন। রবিবার আমদাবাদে এক লক্ষ ৩২ হাজার মানুষ গলা ফাটাবেন রোহিত, বিরাট কোহলিদের জন্য। তবে অস্ট্রেলিয়া যে প্রতিপক্ষ হিসাবে বিপজ্জনক, তা ভালই জানে টিম ইন্ডিয়া। প্রতিপক্ষের জন্য বিপুল জনসমর্থনও যাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না। কামিন্স তো সাফ বলে দিয়েছেন, 'এক তরফা সমর্থন পাবে ভারত। তবে কানায় কানায় ভরা গ্যালারিকে চুপ করিয়ে দেওয়ার মতো তৃপ্তি আর কিছুতেই নেই।' সে যতই ডেভিড ওয়ার্নার পুষ্পা দ্য রাইজিং সিনেমার জনপ্রিয় গান শ্রীবল্লির তালে নেচে মাঠ মাতান না কেন। বা ম্যাক্সওয়েল আইপিএল সতীর্থ কোহলিকে দেখে যতই আলিঙ্গন করুন না কেন, তাঁরা যে পেশাদারিত্বের বর্ম গায়ে চাপিয়ে মাঠে নামবেন, আর সামান্যতম সুযোগেও ভারতকে চুরমার করতে চাইবেন, ভালমতোই জানেন টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকরেটারেরাও। রবিবার অস্ট্রেলিয়ার প্রথম একাদশের পাঁচজন ২০১৫ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য ছিলেন। তাই বড় মঞ্চে কীভাবে খেলতে হয়, সেই অভিজ্ঞতা রয়েছে।
ফাইনালের উইকেট নিয়েও চর্চা চলছে। পিচে হেভি রোল করা হয়েছে। যে উইকেটে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল, সেই বাইশ গজেই রবিবারের মহারণ। পরের দিকে স্পিনাররা সাহায্য় পেতে পারেন। আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, শপিং মল থেকে শুরু করে বাজার, রোহিতদের টিমহোটেল শুরু করে স্টেডিয়ামের পথ, একটাই প্রার্থনা। একটাই রিংটোন। কাপ দাও রোহিত... সবরমতীর তীরে ফেরাও ১২ বছর আগের আরব সাগরের পাড়ের সুখস্মৃতি...
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -