কলকাতা: সারাদিনে খেলা হল ৮২.৪ ওভার। বাংলার দরকার ছিল ৭ উইকেট। কিন্তু কল্যাণীতে সারাদিন চেষ্টা করেও সেটাই পারলেন না মহম্মদ শামি, ঈশান পোড়েল, সূরয সিন্ধু জয়সওয়াল, রাহুল প্রসাদরা। বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে অসমকে কোণঠাসা করে ফেলেও তিন পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে বাংলাকে। রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) বাংলার মুঠো থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নিল অসম। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থায় বুধবার, ম্যাচের শেষ দিন দুরন্ত লড়াই করে ম্যাচ ড্র করে দিলেন অসমের ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ায় ৩ পয়েন্ট পেল বাংলা। অসমের ঝুলিতে এক পয়েন্ট গেল।
ম্যাচ ড্র হওয়ার পর বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির পিচ ও আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বাংলা শিবিরে। ইডেনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ভারতকে ডুবিয়েছিল বাইশ গজ। স্পিন সহায়ক উইকেটের স্ট্র্যাটেজি ব্যুমেরাং হয়ে ঘায়েল করেছিল টিম ইন্ডিয়াকেই। কল্যাণীতেও বাংলার জয়ের পথে কাঁটা হয়ে উঠল পিচ। সাদা ফ্যাটফ্যাটে উইকেট। সকালের একঘণ্টা কিছুটা আর্দ্রতা থাকছিল বলে পেসাররা সামান্য সাহায্য পাচ্ছিলেন। বাকি সারাদিন বোলাররা কার্যত মাথা চাপড়েও সাফল্য পাননি কোনওদিনই। বল না ঘুরেছে, না লাফিয়েছে। শামি নিজের দক্ষতায় আঁচড় কাটলেও বাকিরা এই হাইওয়ে-সম পিচে কিছু করতে পারেননি। ম্যাচের শেষে পিচ নিয়ে বাংলা শিবিরেও অসন্তোষ। এরকম পিচে ম্যাচে ফয়সালা হওয়া কঠিন, মত দলের সকলেরই। বোলারদের কেউ কেউ তো এমনও বলছেন যে, কাঁধ খুলে যাওয়ার জো হচ্ছে, তাও কোনও সাহায্য মিলছে না পিচ থেকে।
শেষ দিন ম্যাচ বাঁচাতে অসমসাহসী ব্যাটিং করলেন অসমের মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারের ব্যাটাররা। মঙ্গলবার অবিচ্ছেদ্য চতুর্থ উইকেটে ৯০ রান যোগ করেছিলেন দেনিশ দাস ও সুমিত ঘাদিগাওঙ্কর। হাফসেঞ্চুরি করে অপরাজিত ছিলেন দেনিশ। ৩০ রানে ক্রিজে ছিলেন সুমিত। তিনিও বুধবার হাফসেঞ্চুরি করেন। দেনিশ ৭৩ ও সুমিত ৬৭ করেন। বুধবারের খেলার ত্রয়োদশ ওভারে দেনিশকে ফিরিয়ে কিছুটা আশার আলো তৈরি করেছিলেন ঈশান। তবে ছ'নম্বরে ব্যাট করতে নেমে শিবশঙ্কর রায়ও হাফসেঞ্চুরি করেন।
অসমের বোলাররাও ব্যাট হাতে জীবন বাজি রেখে ব্যাট করছিলেন যেন। ঋতুরাজ বিশ্বাস থেকে শুরু করে আকাশ সেনগুপ্ত, আয়ুষ্মান মালাকার - প্রত্যেকে ক্রিজে মূল্যবান সময় কাটান। কোনও রান না পেলেও ২৪ বল ক্রিজে টিকে ছিলেন মুক্তার হুসেন। আব্দুল কুরেশি ৬৮ বলে ২৩ রানে ক্রিজে ছিলেন। অসমের স্কোর যখন ২৮২/৯, বাংলার চেয়ে ৪০ রানে এগিয়ে, তখন দুই দলের অধিনায়ক করমর্দন করে ড্র মেনে নেন।
ম্যাচের পর আম্পায়ারিং নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে বাংলা শিবিরে। অভিযোগ, বেশ কয়েকবার নিশ্চিত এলবিডব্লিউ দেননি আম্পায়ার। রঞ্জি ট্রফির গ্রুপ পর্বে ডিআরএস নেই বলে সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেনি বাংলা। শাহবাজ তো মাঠেই আম্পায়ারিং নিয়ে প্রবল অসন্তোষ দেখান।
গ্রুপের দুর্বলতম দুই দল - অসম ও ত্রিপুরার বিরুদ্ধেই আটকে গেল বাংলা। তবে ৫ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে এখনও গ্রুপ শীর্ষে বাংলা। কোয়ার্টার ফাইনালও কার্যত নিশ্চিত।
সেঞ্চুরির পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসে চার উইকেট নেওয়া শাহবাজই ম্যাচের সেরা হয়েছেন।