কলকাতা: বেনজির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল কল্যাণীতে বেঙ্গল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির মাঠে (Bengal Cricket Academy)। ম্যাচের সময় বৃষ্টি হয়নি। বরং ঝলমলে রোদ ছিল কার্যত চারদিনই। অথচ বাংলা বনাম বিহার রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy) ম্যাচ ভেস্তে যায় ভিজে মাঠের কারণে। এমনকী, ম্যাচের টস করাও সম্ভব হয়নি। ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়াররা। গ্রুপের দুর্বলতম দলের বিরুদ্ধে ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে অনুষ্টুপ মজুমদারদের। বাংলা শিবিরের কারও কারও আশঙ্কা, নক আউট পর্বে ওঠার চূড়ান্ত দৌড়ে এই ম্যাচই না অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।


তবে সিএবি প্রশাসনকে আরও অস্বস্তিতে পড়তে হতে পারে। কারণ, কল্যাণীর মাঠ নিয়ে ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের রিপোর্ট। যে রিপোর্টে ভাল তো কিছু লেখা নেই-ই, বরং বোর্ডের বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, নেতিবাচক কথাবার্তাই লেখা হয়েছে। যা মানা হলে কল্যাণীর মাঠকে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে বোর্ডের তরফে।


বাংলার রঞ্জি ট্রফি অভিযান শুরু হয়েছিল অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে। লখনউয়ের একানায় অটলবিহারী বাজপেয়ী ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার সুবাদে তিন পয়েন্ট পায় বাংলা। তারপর পরপর দুটি হোম ম্যাচ ছিল বঙ্গ ব্রিগেডের। যে দুটি ম্যাচই প্রথমে আয়োজিত হওয়ার কথা ছিল ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামে। কিন্তু বোর্ডের নির্দেশ মেনে নৈশালোকে সিনিয়র মহিলাদের টি-২০ বোর্ড ম্যাচ ফেলা হয় ইডেনে। বাংলা বনাম বিহার রঞ্জি ম্যাচ সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় কল্যাণীতে বিসিএ অ্যাকাডেমির মাঠে।


যদিও বাংলা বনাম বিহার ম্যাচ পণ্ড হয়। ম্যাচের সময়ে বৃষ্টি নেই, কিন্তু ম্যাচের আগের বৃষ্টিতে মাঠে এমনই জল জমে যে, চারদিনের রোদেও কাদা শুকায়নি। দফায় দফায় মাঠ পরীক্ষা করার পর চতুর্থ দিন দুপুরে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বাংলা ও বিহার - দুই দলের মধ্যে এক পয়েন্ট করে ভাগাভাগি হয়ে যায়। যে দলের বিরুদ্ধে বোনাস সহ সাত পয়েন্ট অর্জনের অঙ্ক কষছে সব দল, সেই বিহারের সঙ্গে মাত্র এক পয়েন্ট পায় বাংলা।


তবে সিএবি-র ভোগান্তির শেষ এখানে নাও হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, নিয়ম মেনে প্রত্যেক ম্যাচের পর বোর্ডকে যে রিপোর্ট পাঠাতে হয় ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের, সেই রিপোর্টে কল্যাণীর মাঠ নিয়ে বিরূপ পর্যবেক্ষণ জানানো হয়েছে। লেখা হয়েছে, মাঠ ভাল ক্রিকেটের অনুপযুক্ত। ম্যাচ রেফারি ও আম্পায়ারদের 'নেগেটিভ' রিপোর্ট মানে ভবিষ্যতে বড় কোনও ম্যাচ আয়োজনের দায়িত্ব না-ও পেতে পারে কল্যাণী।


যদিও সিএবি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এরকম কোনও রিপোর্টের কথা বলা হচ্ছে না। সিএবি-র প্রধান কিউরেটর তথা বোর্ডের পিচ কমিটির সদস্য সুজন মুখোপাধ্যায় বলছেন, 'বৃষ্টি বা ভেজা মাঠের জন্য খেলা না হওয়াটা হামেশাই হয়। যদিও ম্যাচ ভেস্তে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। তবে নেগেটিভ কোনও রিপোর্ট বোর্ডকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা নেই। আমরা বাংলার পরের ম্যাচে পুরো মাঠ ঢাকার বন্দোবস্ত করেছি।'


ঘটনা হচ্ছে, বিহার ম্যাচের বিপর্যয়ের পর বাংলা দলের অনিচ্ছা সত্ত্বেও কেরলের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচ কল্যাণী থেকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে সল্ট লেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে। সেই মাঠ পুরোটাই ঢাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।


কিন্তু তাতে কল্যাণীর কলঙ্ক ঢাকা যাবে কি?


আরও পড়ুন: সৌরভের মানবিক উদ্যোগ, অভাবী শিশুদের পড়াশোনায় সাহায্য, বয়স্কদেরও পাশে দাঁড়ালেন


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।