কলকাতা: ভারতের মতো ক্রিকেটপাগল দেশের ছোটবেলায় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেনি, এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তবে স্বপ্ন দেখে এক জিনিস এবং তা সার্থক করার জন্য নিজের সর্বস্বটা উজাড় করে দেওয়া আরেক বিষয়। শাহবাজ আমেদও (Shahbaz Ahmed) স্বপ্ন দেখতেন ক্রিকেটার হওয়ার। কিন্তু বেশিরভাগ ব্যক্তি যেখানে পিছিয়ে আসেন, সেখানে নিজের দক্ষতার প্রতি আস্থা এবং সাহসিকতায় ভর করেই শাহবাজ কিন্তু নিজের স্বপ্নপূরণে সফল হয়েছেন। স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে অটল শাহবাজ বাবার বকুনিও থামাতে পারেনি। 


২৪৭তম ক্রিকেটার হিসাবে গত বছরই শাহবাজ আমেদ ভারতীয় জাতীয় ওয়ান ডে দলের হয়ে নিজের অভিষেক ঘটান। ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলা দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ তিনি, আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলেরও নিয়মিত সদস্য এই তারকা অলরাউন্ডার। তবে আজ খ্যাতির অভাব না হলেও, এক সময় শাহবাজ স্বপ্নপূরণের লক্ষ্য ছাড়তে হয়েছিল বাড়ি, মাঝপথেই থামাতে হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াও। তবে সেইসব প্রতিকূলতাকে জয় করেই শাহবাজ ক্রিকেটীয় জগতে আজ নিজের এক ভিন্ন পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।


হরিয়ানা জন্মগ্রহণ করা শাহবাজ চোখে ছিল ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন, সেই স্বপ্ন সত্যি করার লক্ষ্য স্থির করেই তিনি পরিবার-পরিজন ছেড়ে চলে আসেন কলকাতায়। অবশ্য পরিবার ছেড়ে আসলেও, পার্থ প্রতিম চৌধুরী কিন্তু শাহবাজ কোনও পরিবারের অভাব টের পেতে দেননি। পার্থর হাত ধরেই শাহবাজের স্বপ্নকে সত্যি করার পথচলা শুরু। শাহবাজের দক্ষতায় মুগ্ধ পার্থ, অচেনা শহরে শাহবাজ আগলে রাখেন। তাঁর হাত ধরেই টাউন ক্লাবের হয়ে খেলার সুযোগ পান শাহবাজ। পার্থর বাড়িই হয়ে উঠে তাঁর ঠিকানা।


২০১৮-১৯ মরসুমে লিস্ট এ ক্রিকেটে বাংলার হয়ে অভিষেক ঘটানোর চার বছরের মধ্যেই শাহবাজের জন্য জাতীয় দলের দরজাও খুলে যায়। এটাই ২৮ বছর বয়সি অলরাউন্ডারের দক্ষতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। অথচ এক সময় এই ক্রিকেটকে পেশা হিসাবে বেছে নেওয়ার জন্যই বাবার কাছে বকুনিও খেতে হয়েছিল শাহবাজ। পেশাদার ক্রিকেটার হওয়ার লক্ষ্যে মাঝপথে মেধাবী হয়েও শাহবাজের ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দেওয়াটাকে প্রথমে তাঁর বাবা-মা একেবারেই মেনে নিতে পারেননি।শাহবাজের বাবা তো তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, সাফল্য না পেলে বাড়ি ফেরারও কোনও প্রয়োজন নেই।


তিনটি আন্তর্জাতিক ওয়ান ডে, ২৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ, ৩৬টি লিস্ট এ ম্যাচ খেলা শাহবাজ যে নিজের নাম করতে সক্ষম হয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য। শাহবাজ নিজের স্বপ্নপূরণে সফলই হয়েছেন, গর্বিত করেছেন তাঁর বাবা-মাকেও। 


আরও পড়ুন: দাদা ঈশান অনুপ্রেরণা, এবার দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে আইপিএল মাতাতে পারবেন অভিষেক?