সন্দীপ সরকার, সল্ট লেক: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সল্ট লেক ক্যাম্পাসটি মূল রাস্তা থেকে বেশ কিছুটা দূরে। চিংড়িঘাটা বাইপাস থেকে প্রায় পাঁচ-সাতশো মিটার ভেতরে ঢুকতে হয়। মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। মাঠ থেকে দেখা যায় নবনির্মিত স্টেশনও।

Continues below advertisement


শুক্রবার দুপুরে সেই মাঠে আচমকা দেখা মিলল এক এক্সপ্রেসের। যে এক্সপ্রেস একটা সময় গোটা দেশকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল। কিন্তু তারপর পথভ্রষ্ট হয়। নতুন চেহারায় প্রত্যাবর্তন ঘটাল কলকাতার মাটি থেকেই।


এই এক্সপ্রেস ভারতের দ্রুততম ফাস্টবোলারদের মধ্যে একজন। উমরন মালিক (Umran Malik)। জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটার আইপিএলে ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার গতিতে বল করে সকলের চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর বলের গতি আতঙ্কিত করে তুলত ব্যাটারদের। জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। তবে ভারতীয় দলের জার্সিতে ২০২৩ সালের জুলাইয়ে শেষবার খেলেছেন। আইপিএলে শেষবার দেখা গিয়েছে ২০২৪ সালে। ঊরুর চোটের জন্য প্রায় দেড় বছর মাঠের বাইরে ছিলেন।


বাইশ গজে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন উমরন। আর ফিরেই ফের গতির আগুন ছোটাচ্ছেন। শুক্রবার সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-২০ টুর্নামেন্টে তাঁর গতির সামনে নাকানিচোবানি খেল উত্তর প্রদেশের ব্যাটাররা। ৪ ওভারে ৩৭ রানে ৩ উইকেট নিলেন ডানহাতি ফাস্টবোলার। শিকারের তালিকায় আরিয়ান জুয়েল, করণ শর্মা ও রিঙ্কু সিংহ। জম্মু ও কাশ্মীর উত্তর প্রদেশের তোলা ১৯৩/৬ তাড়া করতে নেমে ৮৪ রানে অল আউট হয়ে ১০৯ রানে হারলেও ম্যাচের বেশ কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত উমরনের বোলিং নিয়ে চলল চর্চা।


ঘণ্টায় ফের দেড়শো কিলোমিটার গতিতে বল করছেন জম্মু ও কাশ্মীরের ফাস্টবোলার। তাঁর গতি সামলাতে পারলেন না কেকেআর তারকা রিঙ্কুও। উত্তর প্রদেশ ম্যাচের শেষে উমরনের মুখে যেন আত্মবিশ্বাসের হাসি। বললেন, 'কিছুই পাল্টায়নি। কঠিন পরিশ্রম করেছি। চোটের জন্য একটা মরশুম খেলিনি। তবে ফিরে ছন্দ খুঁজে পেয়েছি।'


এতদিন মাঠের বাইরে থাকা কতটা কঠিন? উমরনের উপলব্ধি, 'সবটাই মনের ব্যাপার। ইতিবাচক থাকলে সমস্যা হয় না। চোট পাওয়ার পর প্রথমেই জানতে চেয়েছিলাম, কতদিন মাঠের বাইরে কাটাতে হবে, কীভাবে চোট লাগল আর সেরে উঠতে গেলে কী করতে হবে। সেই অনুযায়ী রিহ্যাব করেছি। এখন আমার লাইন-লেংথ আগের চেয়েও ভাল।'


চোটের জন্য কি গতির সঙ্গে আপোস করবেন? যেমন করে থাকেন বেশিরভাগ ফাস্টবোলার? উমরনের হুঙ্কার, 'গতিই তো আমার প্রধান অস্ত্র। গতি কমানোর প্রশ্নই ওঠে না। টেনিস বলে যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখনও গতিই ছিল আমার সম্পদ। চোট আঘাত ফাস্টবোলারদের কেরিয়ারের অঙ্গ। আমি যদি দশ বছর ক্রিকেট খেলি, একাধিকবার চোট লাগবেই। মনের জোর হারালে চলে না। সব নেতিবাচক ভাবনাকে সরিয়ে মাটে নামতে হয়। নেতিবাচক মানুষের থেকেও দূরে থাকতে হয়। এখন বল যেভাবে হাত থেকে বেরচ্ছে, তাতে আমি আশাবাদী।'


ভারতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখেন? উমরন যেন আত্মবিশ্বাসে ফুটছেন। বললেন, 'আমিই দেশের একমাত্র ফাস্টবোলার যে ঘণ্টায় দেড়শো কিলোমিটার গতিতে বল করি। জাতীয় দলে আমি ফিরবই। বোলিংয়ে বৈচিত্র যোগ করার চেষ্টা করছি। স্লোয়ার করছি। বাকি নির্বাচকদের ওপর।'


অজিত আগরকররা শুনছেন?