আমদাবাদ: মাথার ওপর ২১৪ রানের বোঝা। আইপিএলের ১৫ বছরের ইতিহাসে ফাইনালে কোনও দল এত রান তোলেনি, যা তুলেছে গুজরাত টাইটান্স (GT vs CSK)। নিজেদের চতুর্থ আইপিএল খেতাব জয়ের স্বপ্ন সফল করতে ২১৫ রান তুলতে হবে চেন্নাই সুপার কিংসকে।
আর রান তাড়া করতে নেমেই মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের কাঁটা হয়ে দাঁড়াল বৃষ্টি। ৩ বলে সিএসকে-র রান তখন বিনা উইকেটে ৪ রান, ঝমঝমিয়ে নামল বৃষ্টি। এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে, তখন বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। তবে মাঠ ভিজে থাকায় খেলা শুরু করা যায়নি। রাত পৌনে এগারোটায় ফের মাঠ পর্যবেক্ষণ করবেন আম্পায়াররা।
বৃষ্টি থেমে গেলেও প্রধান কাঁটা এখন মূল পিচের পাশের একটি বাইশ গজ। জলে ভিজে যা প্রায় কাদা হয়ে রয়েছে। সেই অংশ শুকনোই মাঠকর্মীদের এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। চলছে সুপার সপার। দর্শকরা অধীর আগ্রহে ম্যাচ শুরুর জন্য অপেক্ষা করে রয়েছেন। স্টেডিয়ামের মিউজিক সিস্টেমে বাজা গানের সঙ্গে কোমর দোলাতে দেখা যাচ্ছে অনেককেই।
নিয়ম বলছে, ওভার সংখ্যা কমে যদি ৫ ওভারের ম্যাচ হয়, তাহলে সিএসকে-র লক্ষ্য দাঁড়াবে ৬৬। ১০ ওভারের খেলা হলে ১২৩ রান তুলতে হবে সিএসকে-কে। ১৫ ওভারের ম্যাচ হলে ১৭১ রান তুলতে হবে।
সোমবার আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে তুষার দেশপাণ্ডের (Tushar Deshpande) বলে যখন শুভমনের লোপ্পা ক্যাচ ফেলে দিলেন দীপক চাহার, গুজরাত টাইটান্সের ওপেনার করেছিলেন (GT vs CSK) মাত্র ৩ রান। তিনি, বহু যুদ্ধের নায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (MS Dhoni) কি প্রমাদ গুনেছিলেন? যদি গিল-ঝড়ে তাঁদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।
কিন্তু মুম্বই ম্যাচের মতো বিধ্বংসী হওয়ার সুযোগ পাননি শুভমন। বাঁহাতি স্পিনারের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্বলতার কথা মাথায় রেখে রবীন্দ্র জাডেজাকে (Ravindra Jadeja) দিয়ে ছক কষলেন ধোনি। জাডেজার বাইরের দিকে বেরনো বলের হদিশ না পেয়ে স্টাম্পড হলেন গিল। ২০ বলে ৩৯ রান করে। উইকেটের পিছনে ধোনির ক্ষিপ্রতা দেখে অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করলেন। ভদ্রলোকের বয়স কি সত্যিই একচল্লিশ পেরিয়েছে?
কে জানত যে, শুভমন ঝড় দানা বাঁধার আগে ফিরলেও, অজানা এক প্রতিপক্ষ আতঙ্ক তৈরি করবেন চারবারের চ্যাম্পিয়নদের শিবিরে! তিনি সাই সুদর্শন। ৪৭ বলে ৯৬ রান করলেন। ৮টি চার ও ৬টি ছক্কা মেরেছেন। এবারের আইপিএলের আবিষ্কার বলা হচ্ছে মাথিশা পাথিরানাকে। শ্রীলঙ্কার পেসার ডেথ ওভারে বিপজ্জনক। সেই পাথিরানার ১৪ বলে ৩৪ রান নিলেন সুদর্শন।
পাল্টা আক্রমণের শুরুটা করেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। মাত্র ৩৯ বলে ৫৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন বঙ্গ উইকেটকিপার-ব্যাটার। শুভমনের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৪২ বলে ৬৭ রান যোগ করলেন। দ্বিতীয় উইকেটে সুদর্শনের সঙ্গে ৪২ বলে ৬৪ রান যোগ করলেন। শেষ দিকে চালিয়ে খেলে ১২ বলে ২১ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন হার্দিক পাণ্ড্যও। ২০ ওভারে ২১৪/৪ তুলল গুজরাত। ম্যাচ জিততে ২১৫ রান তুলতে হবে চেন্নাইকে। আইপিএলের ফাইনালে এটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ স্কোর। এর আগে ২০১৬ সালে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্য়াট করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ তুলেছিল ২০৮/৭। সেই রেকর্ডও ছাপিয়ে গেল গুজরাত।