নয়াদিল্লি: দানিশ কানেরিয়ার বিস্ফোরক দাবি ঘিরে আলোড়ন। হিন্দু বলে ধর্মীয় বিভেদের শিকার হতে হয়েছে, প্রাক্তন পাকিস্তানি স্পিনারের এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় গৌতম গম্ভীর বললেন, এটাই পাকিস্তানের আসল চেহারা! তিনি হিন্দু হওয়ায় পাক ক্রিকেট টিমের সহ খেলোয়াড়রা দুর্ব্যবহার করতেন, তাঁকে পাশে নিয়ে খেতে চাইতেন না, কানেরিয়ার দাবির পর প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার তথা বর্তমান বিজেপি এমপি গম্ভীর বলেছেন, দীর্ঘদিন আমাদের ভারতীয় দলের মাথায় ছিল মহম্মদ আজহারউদ্দিনের মতো অধিনায়ক। আর যে ইমরান খান নিজে ক্রিকেটার, তাঁর শাসনেই দেশে এমন চলছে! মহম্মদ কাইফ, ইরফান পাঠান, মুনাফ পটেলকে কী গভীর শ্রদ্ধা করে ভারত। পটেল আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুও। আমরা সবসময় আমাদের দেশকে গর্বিত করার জন্য টিম হিসাবে খেলেছি। কিন্তু পাকিস্তান থেকে যে খবর শুনছি, সেটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। দেশের হয়ে ৫৫-৬০টা টেস্ট খেলা সত্ত্বেও কানেরিয়ার এমন নির্যাতনের মুখোমুখি হওয়া ‘সত্যিই লজ্জাজনক’। গম্ভীর আরও বলেন, একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে এমন আচরণ হলে, কল্পনা করতে পারি, সেখানে (পাকিস্তান) হিন্দু, শিখ, অন্য সংখ্যালঘুদের কী সহ্য করতে হয়।
কানেরিয়ার সঙ্গে ধর্মীয় পরিচিতির জন্য খারাপ ব্যবহারের বিষয়টি প্রথম গতকাল ফাঁস করে বোমা ফাটান আরেক প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার শোয়েইব আখতার। ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ পাকিস্তানের একটি চ্যানেলে ‘গেম অন হ্যায়’ শো-তে বলেন, আমার কেরিয়ারে করাচি, পঞ্জাব, পেশোয়ারের মতো ব্যাপারে কতবার যে তর্কাতর্কি হয়েছে, ভাবলে রাগ হয়। অনেকে দানিশ কানেরিয়ার মতো প্লেয়ারদের বলত, কেন এখানে (আমাদের সঙ্গে) বসে খাচ্ছ?
এ প্রসঙ্গে কানেরিয়ার প্রতিক্রিয়া, শোয়েইব প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেটার। ওর বোলিংয়ের মতো সোজাসাপ্টা ওর কথাবার্তা। সত্যিটাই বলেছে। নিজে যখন খেলতাম, এসব বলার সাহস ছিল না, কিন্তু শোয়েইব ভাই বলার পর এবার মুখ খুলব। ও আমায় সবসময় সমর্থন করেছে, ইঞ্জি ভাই, মহম্মদ ইউসুফ, ইউনিস ভাইও করেছে। যারা পাশে দাঁড়ায়নি, তাদের নাম শীঘ্রই প্রকাশ করব। তবে এটাও বলব, পাকিস্তানের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান, সম্মানিতও মনে করি। আমার ধর্মীয় আনুগত্য জেনেও আমার পাশে দাঁড়ানো মিডিয়া, প্রকৃত ক্রিকেট প্রশাসক, পাকিস্তানের নাগরিকদের ধন্যবাদ। যে মহান তারকারা ক্রিকেটার হিসাবে সমর্থন করেছেন, তাদের সবার প্রতিও কৃতজ্ঞ।
পাকিস্তানের হয়ে ৬১টি টেস্ট খেলা কানেরিয়া ইংল্যান্ডের এসেক্স ক্লাবে খেলার সময় ম্যাচ গড়াপেটায় দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর নির্বাসিত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে বলেছেন, আমার জীবন ভাল কাটছে না। পাকিস্তান, বিশ্বের অনেকের কাছেই গিয়েছি যাতে আমার সমস্যাগুলি মেটানো যায়, কিন্তু কোনও সাহায্যই পাইনি, অথচ পাকিস্তানের অন্য অনেক ক্রিকেটারের সমস্যার মীমাংসা হয়ে গিয়েছে। পাকিস্তানের জন্য একজন ক্রিকেটার হিসাবে যা যা সম্ভব, সব দিয়েছি, সেজন্য খুব গর্বিতও। আমার প্রয়োজনের সময় পাকিস্তানের মানুষের সাহায্য পাওয়ার আশা রাখছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সহ পাকিস্তানের সব প্রবাদপ্রতিম ক্রিকেটার, পাকিস্তান ও অন্য সব দেশের ক্রিকেট প্রশাসকদের সাহায্য চাই, যাতে সঙ্কট থেকে মুক্তি পাই। দয়া করে এগিয়ে এসে আমায় সাহায্য করুন।