নয়াদিল্লি: হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদকে ভারতরত্ন খেতাব দেওয়ার দাবিতে রবিবার দিল্লিতে যন্তরমন্তরে অবস্থানে বসলেন তাঁর পুত্র অশোককুমার সহ প্রাক্তন হকি তারকারা। তাঁদের দাবি, সচিন তেন্ডুলকরের আগেই ধ্যানচাঁদকে ভারতরত্ন খেতাব দেওয়া উচিত ছিল।


 

এই অবস্থানে যোগ দিয়েছিলেন অজিত পাল সিংহ, জাফর ইকবাল, দিলীপ তিরকেরা। জাফর বলেন, ‘আমাদের আশা, সরকার আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনে দাদা ধ্যানচাঁদকে সম্মান জানাবে। তবে আমরা আশা করলেই তো আর হবে না, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকাও দরকার। যেটা সচিন তেন্ডুলকরকে ২০১৪ সালে ভারতরত্ন সম্মান দেওয়ার সময় ছিল। দাদা (ধ্যানচাঁদ) ভারতরত্ন খেতাব পেলেন কি না, তাতে কিছু এসে যায় না। কিন্তু তিনি এটা পাওয়ার যোগ্যতম ব্যক্তি। তাই তাঁর ভারতরত্ন পাওয়া উচিত।’

 

অজিত পালও মনে করেন, ভারতের প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে ধ্যানচাঁদেরই ভারতরত্ন খেতাব পাওয়া উচিত ছিল। তিনি বলেছেন, ‘ধ্যানচাঁদ হকির জাদুকর হিসেবে পরিচিত। আমরা তাঁর সম্বন্ধে অনেক কথা শুনেছি। তিনি যে সময় তিনবার অলিম্পিক সোনা জিতিয়েছিলেন দেশকে, সেই সময় চরম দারিদ্র্য ছিল। ভারতীয় হকি দল গরুর গাড়িতে চড়ে খেলতে যেত। খেলার জন্য ধ্যানচাঁদ প্রচুর আত্মত্যাগ করেছিলেন। আগের সরকার তাঁকে ভারতরত্ন না দিয়ে ভুল করেছে। আশা করি এই সরকার সেই ভুল শুধরে নেবে।’

 

সচিনের ভারতরত্ন পাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ অজিত পাল। তিনি ধ্যানচাঁদের সঙ্গে অন্য কোনও ক্রীড়াবিদের তুলনাই করতে চান না। ১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের অধিনায়ক বলেছেন, ‘ধ্যানচাঁদ হকি খেলতেন ব্রিটিশ আমলে। তখন পদক পাওয়ার পর আর্থিক পুরস্কার পাওয়া যেত না। শুধু প্রশংসা পাওয়ার জন্যই খেলতেন ধ্যানচাঁদ। তাই ধ্যানচাঁদকে আর অশ্রদ্ধা না করে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া উচিত।’

 

অশোক কুমার বলেছেন, ‘আমার বাবা আমাদের সবারই অনুপ্রেরণা। বহু খেলোয়াড় তাঁকে দেখেই খেলা শুরু করেছেন। এখনও ভারতের হকি খেলোয়াড়রা ১৯২৮, ১৯৩২, ১৯৩৬ অলিম্পিকে বাবার খেলার কথা স্মরণ করেন। তা সত্ত্বেও আমার বাবাকে ভারতপত্ন দেওয়ার দাবিতে আমাদের এখানে আসতে হওয়ায় খারাপ লাগছে। সরকারের অনেক আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত ছিল।’

 

দিলীপ তিরকের মতে, ধ্যানচাঁদের ভারতরত্ন না পাওয়ার কারণ তাঁকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি জানাতে হচ্ছে, এটা আরও দুঃখজনক। ধ্যানচাঁদ হকি খেলে কিছুই পাননি। সরকারের উচিত তাঁকে সম্মান জানানো।