কলকাতা: চোট তাঁর অলিম্পিক্স পোডিয়ামের স্বপ্ন কেড়ে নিতে বসেছিল। তবে করোনার প্রাদুর্ভাবে টোকিও অলিম্পিক্স এক বছর পিছিয়ে গিয়েছে। তাঁর সামনেও অলিম্পিক্সের দরজাটা কার্যত বন্ধ হতে হতেও খুলে গিয়েছে। কিছুটা অভাবনীয়ভাবেই।
তিনি, দীপা কর্মকার, নতুন উদ্যমে অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জনের মানসিক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। করোনা লকডাউনের জেরে প্র্যাক্টিস বন্ধ। তবে তার প্রভাব যাতে তাঁর ফিটনেসে না পড়ে, সে জন্য সতর্ক দীপা। অনলাইনেই চলছে তাঁর ফিটনেস ক্লাস!
কীভাবে?
দীপা নিজেই শোনালেন সেই কাহিনি। ত্রিপুরার আগরতলা থেকে মোবাইল ফোনে এবিপি আনন্দকে রিও অলিম্পিক্সে পোলভল্টে চতুর্থ স্থানাধিকারী বললেন, ‘লকডাউনের জেরে জিমন্যাস্টিক্স প্র্যাক্টিস করতে পারছি না। কারণ, বাড়িতে সরঞ্জাম দিয়ে জিমন্যাস্টিক্স প্র্যাক্টিস করা যায় না। অ্যাকাডেমিও বন্ধ। ত্রিপুরায় করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। তাই ঘরবন্দি থাকা ছাড়া উপায় নেই। তবে ফিটনেসের সঙ্গে আপোস করছি না। আমার কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী দুবেলা অনলাইনে ফিটনেসের ক্লাস নিচ্ছেন। আমি ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের জিমন্যাস্টরা স্যারের এই ক্লাস করছে। ফিটনেস আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। ফ্লোরে নেমে পড়লে কোনও সমস্যা হবে না।’
অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করার জন্য ৮টি বিশ্বকাপ থাকে জিমন্যাস্টদের হাতে। দীপা বললেন, ‘৬টি বিশ্বকাপ হয়ে গিয়েছে। আর দুটি বিশ্বকাপ বাকি। মার্চ মাসে দুটি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার জেরে সেই দুটি বিশ্বকাপ পিছিয়ে গিয়েছে। আমার হাতেও কিছুটা সময় বাড়ল। যোগ্যতা অর্জনের জন্য সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাব। বাকি দুটি বিশ্বকাপে ভাল ফল করতেই হবে।’
হাঁটুর অ্যান্টেরিয়র ক্রুসিয়েট লিগামেন্ট (এসিএল)–এর চোটের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই ফ্লোরে নামতে পারছেন না দীপা। হয়েছে অস্ত্রোপচারও। লকডাউন পর্যায়ে জিমন্যাস্টিক্স বন্ধ। তবে ফিটনেস ফিরে পেতে মরিয়া দীপা। বলছিলেন, ‘বিশ্বেশ্বর স্যার আমার শক্তি-দুর্বলতা জানেন। সেই অনুযায়ী আমার ফিটনেস আর ট্রেনিং চার্ট বানিয়েছেন। অনলাইনে স্যার সকল জিমন্যাস্টকেই দেখিয়ে দিচ্ছেন, কীভাবে ফিটনেসের মান বাড়ানো যায়। সকলেই উপকৃত হচ্ছে। স্যারের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’ যোগ করলেন, ‘বাকি দুটো বিশ্বকাপে নিজের সেরাটা দেব। যাতে ভাল ফল করে টোকিও অলিম্পিক্সের যোগ্যতা অর্জন করতে পারি।’