আগরতলা: প্রদুনোভা নিয়ে যতই আলোচনা হোক না কেন, রিও অলিম্পিকে চতুর্থ হওয়া দীপা কর্মকার এই ভল্টকে আদৌ বিপজ্জনক বলে মনে করেন না। তাঁর মতে, নিয়মিত অনুশীলন করলে প্রদুনোভা ভল্ট সহজ বলেই মনে হয়। সেই কারণে অনুশীলনের মাধ্যমে প্রদুনোভা ভল্টে নিজের দক্ষতা আরও বাড়াতে চাইছেন আগরতলার এই বাঙালি কন্যা। পাশাপাশি তাঁর আরও একটি ইচ্ছা রয়েছে। নিজস্ব একটি ভল্ট উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন দীপা। কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী যদি সায় দেন, টোকিওতে পরের অলিম্পিকে দীপার চমক হতেই পারে ‘কর্মকার ভল্ট’।


সকালে পড়াশোনা, তারপর অফিস, সংবর্ধনা, বাড়িতে সকাল-বিকেল বহু মানুষের আসা-যাওয়ার ঝক্কি সামলেও রোজ সাড়ে তিন ঘণ্টা করে অনুশীলন করে চলেছেন দীপা। রিও অলিম্পিকে ইতিহাস গড়েও তিনি মনে করেন না বিশাল কিছু করে ফেলেছেন। বলছেন, ‘ডিস্ট্রিক্ট মিটেও আমি হেরে যেতে পারি। কিছু বলা যায় না। নির্দিষ্ট দিনের পারফরম্যান্সের উপরেই সবকিছু নির্ভর করে। তাই আমাকে সবসময় আরও ভাল করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

পরের অলিম্পিকের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছেন দীপা। রিও-র সাফল্য তাঁর ফোকাস নষ্ট করতে পারেনি। এই বাঙালি জিমন্যাস্টের কথায়, ‘জিমন্যাস্টিক্সই আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। তাই এটাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তারপর বাকি সবকিছু। এখন আগরতলায় প্র্যাকটিস করছি। কিন্তু এখানে প্রদুনোভা প্র্যাকটিস করা যায় না। তাই ডিসেম্বর থেকে দিল্লিতে গিয়ে প্র্যাকটিস শুরু করব।’

কিছুদিন আগেই বাবা-মায়ের সঙ্গে আন্দামান থেকে ঘুরে এসেছেন দীপা। ফেরার পথে বারাসতে এক আত্মীয়র বাড়িতে উঠেছিলেন। তখন কালীপুজোও দেখেছেন। এখন বাড়িতে থাকায় কড়া ডায়েট সবসময় মানছেন না। মাঝেমধ্যেই লোভনীয় সব খাবার খেয়ে ফেলছেন। দিল্লিতে গিয়ে অবশ্য সেসব বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই কদিন একটু রসনাতৃপ্তি করে নিচ্ছেন দীপা।

রিও অলিম্পিক থেকে প্রাপ্তি কী? দীপার জবাব, ‘সারা বিশ্ব আমার রাজ্য, আমার শহরের নাম জেনেছে। এটাই আমার সবচেয়ে ভাল লাগছে।’ এই সহজ-সরল মনোভাবই দীপার সাফল্যের প্রধান কারণ। সাফল্য তাঁকে বদলে দেয়নি। এই মানসিকতাই ভবিষ্যতে আরও সাফল্য এনে দিতে পারে।