এজবাস্টন: বাজবল কী?
ক্রিকেটপ্রেমীদের জিজ্ঞেস করুন। এক একজন এক একরকম ব্যাখ্যা দেবেন। তবে বাজবল যে ঠিক কী, শুক্রবার এজবাস্টনে তা প্রমাণ করে দিলেন ইংরেজ ক্রিকেটারেরা। কীভাবে? অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কার্যত ওয়ান ডে ক্রিকেটের ভঙ্গিতে খেলে। মাত্র ৭৮ ওভারে ৩৯৩/৮ স্কোর তুলে ডিক্লেয়ার করে দিল ইংল্যান্ড। বেন স্টোকসদের যে সিদ্ধান্ত হইচই ফেলে দিল। অনেকে যেমন প্রশংসা করলেন সাহসী সিদ্ধান্তের, অনেকে সমালোচনাও। বলা হল, প্রতিপক্ষ যখন অস্ট্রেলিয়ার মতো শক্তিশালী দল, যারা সদ্য টেস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে, তখন এই সিদ্ধান্ত বেশি তাড়াহুড়ো করে হয়ে গেল না তো?
ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালাম। নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকে আরও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে শুরু করেছে ইংল্যান্ড। যার নমুনা দেখা গেল শুক্রবার এজবাস্টনে। ওভার প্রতি ৫.০৩ রান করে তুলল ইংল্যান্ড। সেঞ্চুরি করলেন জো রুট। ১৫২ বলে ১১৮ রানে অপরাজিত রইলেন। আরও বড় ইনিংস খেলার সুযোগ ছিল তাঁর সামনে। কিন্তু শেষ বেলায় অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠিয়ে কয়েকটি উইকেটের জন্য ঝাঁপানো অনেক বেশি প্রাধান্য পেল ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্টের কাছে।
চর্চা চলছে হ্যারি ব্রুকের আউট নিয়েও। ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার আজব কায়দায় আউট হন। আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছিলেন ব্রুক। ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ জিতিয়েছিলেন। অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শুক্রবার পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিনি। নাথান লায়নের বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। যদিও তাঁর বোল্ড হওয়ার ধরন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।
কেন? লেগ স্টাম্প গার্ড নিয়েছিলেন ব্রুক। বল করছিলেন অফস্পিনার নাথান লায়ন। তাঁর বলে ব্যাক ফুটে খেলতে যান ব্রুক। বলটি বাড়তি লাফিয়েছিল। ব্রুকের থাইপ্যাডে লেগে তা ওপরে উঠে যায়। অজি উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারি ভেবেছিলেন, বল ব্যাটে লেগেছে এবং সেটি তালুবন্দি করার জন্য উদ্যত হন। কিন্তু বল যে কোথায়, তা ব্রুক, ক্যারি বা ক্লোজ ইন ফিল্ডাররা কেউই দেখতে পাননি। তারপরই বলটি ব্রুকের ঠিক পিছনে এবং উইকেটের সামনে পড়ে আর স্পিন করে স্টাম্পে লেগে বেল ফেলে দেয়। বোল্ড হয়ে যান ব্রুক। ৩৭ বলে ৩২ রান করে।
ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের কার্যত সবাই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন। এজবাস্টনে টস জিতে প্রথম ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংরেজ অধিনায়ক বেন স্টোকস। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করেন দুই ইংরেজ ওপেনার জ্যাক ক্রলি ও বেন ডাকেট। তবে ১০ বলে ১২ রান করে জশ হ্যাজলউডের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে যান ডাকেট। ক্রলি ৭৩ বলে ৬১ রান করেন। ৪৪ বলে ৩১ রান করেন অলি পোপ। ৩৭ বলে ৩২ রান করেন ব্রুক। স্টোকস রান পাননি। মাত্র ১ রান করে ফেরেন। তবে পাল্টা আগ্রাসী ব্যাটিং করে ৭৮ বলে ৭৮ রান করেন জনি বেয়ারস্টো। ১৭ বলে ১৮ রান করেন মঈন আলি।