বুদাপেস্ট ও মিউনিখ: পেনাল্টি থেকে জোড়া গোল করে ইউরো কাপ ও আন্তর্জাতিক ফুটবলের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড গড়লেন পর্তুগালের মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ইউরো কাপে তাঁর হয়ে গেল ১৩টি গোল এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের গোলসংখ্যা ১০৯। ইরানের আলি দাইয়ের সঙ্গে যুগ্মভাবে শীর্ষে রোনাল্ডো। আর একটি গোল করলেই নতুন রেকর্ড গড়বেন তিনি। তাঁর নজির গড়ার দিনে ফ্রান্সের সঙ্গে ২-২ ড্র করে ইউরো কাপের শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেল পর্তুগাল। গ্রুপ এফ-এর শীর্ষে থাকল ফ্রান্স। হাঙ্গেরির সঙ্গে ২-২ ড্র করে দ্বিতীয় স্থানে জার্মানি। পর্তুগাল গ্রুপের তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিল। 


এদিন শুরু থেকেই ফ্রান্স ও পর্তুগালের ম্যাচে উত্তেজনা ও প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। প্রথম গোল আসে ৩০ মিনিটে। ফ্রি-কিক থেকে বক্সে উড়ে আসা বলে হেড করতে যান পর্তুগালের মিডফিল্ডার ড্যানিলো। ফ্রান্সের গোলকিপার হুগো লরিস বলটি সেভ করতে যান। কিন্তু তাঁর পাঞ্চ লাগে ড্যানিলোর মুখে। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেননি। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রোনাল্ডো। 


এরপর প্রথমার্ধের শেষদিকে ফ্রান্স পেনাল্টি পায়। বক্সের মধ্যে কিলিয়ান এমবাপেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন পর্তুগালের ডিফেন্ডার সেমেদো। রেফারি সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টি দেন। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করে ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে। 


দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ফের গোল বেনজেমার। ৪৭ মিনিটে পল পোগবার থ্রু থেকে দুরন্ত শটে গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদের তারকা স্ট্রাইকার। সেই সময় গতবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নদের টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দলে যে আছেন বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা। ৫৮ মিনিটে রোনাল্ডোর জন্যই ফের পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। তাঁর ক্রস বক্সের মধ্যে পর্তুগালের ডিফেন্ডার কুন্দের হাতে লাগে। নিজেই ফের পেনাল্টি মারতে যান রোনাল্ডো এবং আলি দাইকে স্পর্শ করেন। 


এদিন পর্তুগালের তুলনায় ফ্রান্স অনেক ভাল খেলেছে। একাধিক সুযোগও তৈরি করেছিলেন পোগবা, আঁতোয়া গ্রিজম্যানরা। কিন্তু পর্তুগালের গোলকিপার প্যাট্রিসিও একাধিক নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দেন। তার ফলেই শেষ ষোলোয় জায়গা করে নিতে পারল পর্তুগাল। 


বিশ্ব ফুটবলে বহুদিন পর নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিলেও, খালি হাতেই এবারের ইউরো থেকে ফিরতে হল হাঙ্গেরিকে। তিনটি ম্যাচেই ভাল পারফরম্যান্স দেখালেও, জয় না পাওয়ায় গ্রুপে চতুর্থ স্থানে থাকল ফেরেঙ্ক পুসকাসের দেশ। 


জার্মানির বিরুদ্ধে এদিন প্রথম থেকেই অসাধারণ লড়াই করছিল হাঙ্গেরি। ১১ মিনিটে দুর্দান্ত হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হাঙ্গেরির অধিনায়ক অ্যাডাম জ়ালাই। প্রথমার্ধের শেষে এই এক গোলেই এগিয়েছিল হাঙ্গেরি। ৬৬ মিনিটে গোল শোধ করেন কাই হ্যাভার্ৎজ। তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার এগিয়ে যায় হাঙ্গেরি। ৬৮ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে গোল করেন আন্দ্রাস শাফার। সেই সময় মনে হচ্ছিল, জার্মানিকে ছিটকে দিয়ে হয়তো নক-আউটে পৌঁছে যাবে হাঙ্গেরি। কিন্তু ৮৪ মিনিটে ফের খেলায় সমতা ফেরান লিওন গোরেৎজকা। ফলে স্বপ্নভঙ্গ হল হাঙ্গেরির।