সেন্ট পিটার্সবার্গ: ইউরো কাপে সুইৎজ়ারল্যান্ড আর নাটকীয়তা যেন সমার্থক হয়ে গিয়েছে। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ে ৩-১ পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচে প্রথমে সমতা ফিরিয়েছিলেন সুইসরা। তারপর টাইব্রেকারে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ছিটকে দিয়েছিলেন টুর্নামেন্ট থেকে।


কোয়ার্টার ফাইনালেও যেন সেই চিত্রনাট্যের পুনরাবৃত্তি হয়ে যাচ্ছিল। স্পেনের বিরুদ্ধে প্রথমে ম্যাচের ৮ মিনিটের মাথায় আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়া। তারপর স্পেনের রক্ষণভাগের ভুলে গোল করে ম্যাচে সমতায় ফেরা। ফের সুইৎজ়ারল্যান্ডের রক্ষাকর্তা হয়ে ওঠেন জার্দান শাকিরি। তিনিই গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।


অতিরিক্ত সময়ের দুই অর্ধে কোনও দলই কোনও গোল করতে পারেনি। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। তবে এবার আর সুইসদের ভাগ্য প্রসন্ন হয়নি। এমনকী, স্পেনের সের্জিও বুস্কেতস পেনাল্টি শ্যুট আউটের প্রথম শটই গোলপোস্টে মারলেও শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে সুইৎজ়ারল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছে গেলেন আলভারো মোরাতা-কোকে'রা।


গোল, আত্মঘাতী গোল, লাল কার্ড, চোট পেয়ে সুইৎজ়ারল্যান্ডের সেরা খেলোয়াড়ের বেরিয়ে যাওয়া, টাইব্রেকার, সেখানে গোলপোস্টে লেগে শট প্রতিহত হওয়া, গোলকিপারের গোল রুখে দেওয়া, ইউরো কাপের মতো বিশ্বমানের টুর্নামেন্টের নক আউট পর্বের ম্যাচে হাজির ছিল যাবতীয় সমস্তরকম রোমাঞ্চের উপকরণ। ম্যাচের রাশও পেণ্ডুলামের মতো কখনও গিয়েছে স্পেনের দিকে, কখনও সুইসদের দিকে।


ম্যাচের ৮ মিনিটে গোল পেয়ে যায় স্পেন। তবে আত্মঘাতী। কর্নার থেকে আলাবা বাঁ পায়ে জোরাল শট মেরেছিলেন। সেই শট সুইস ফুটবলার জ়াকারিয়ার পায়ে লেগে সুইৎজ়ারল্যান্ডের গোলে ঢুকে যায়। প্রথমার্ধে স্পেন ১ গোলে এগিয়েই ছিল।


ম্যাচের ৬৮ মিনিটে স্পেনের ডিফেন্সের ভুলে বল পেয়ে যান শাকিরি। সেখান থেকে গোল করতে ভুল করেননি তিনি। তবে ৭৭ মিনিটের মাথায় জোরাল ধাক্কা খায় সুইৎজ়ারল্যান্ড। লাল কার্ড দেখে মাঠ থেকে বেরিয়ে যান রেমো ফ্রিউলার। তার চার মিনিটের মাথায় শাকিরিকে তুলে নেওয়া হয়। পরে দেখা যায়, তিনি হাঁটুতে বরফ বেঁধে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে রয়েছেন। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ ছিল ১-১। অতিরিক্ত সময়ে আর কোনও গোল হয়নি।


টাইব্রেকারে স্পেনের প্রথম শটই পোস্টে মারেন বুস্কেতস। গাভরানোভিচ গোল করে সুইসদের এগিয়ে দেন। অলমোর শটে সমতায় ফেরে স্পেন। এরপর সুইৎজ়ারল্যান্ডের স্কার ও স্পেনের রদ্রির শট দুই গোলকিপার আটকে দেন। পরের শটে স্পেনের জেরার মোরেনো গোল করলেও সুইসরা পরপর দুটো শট নষ্ট করেন। ওয়ারজ়াবাল গোল করতেই স্পেন ৩-১ শটে জিতে পৌঁছে যায় শেষ চারে।