কোপেনহাগেন: ফুটবল কি শুধুই খেলা? নাকি খেলার মাঠ থেকে জীবনের জয়গান। বৃহস্পতিবারের কোপেনহাগেন অন্তত দ্বিতীয়টিরই সাক্ষী থাকলয। যেখানে সমস্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভুলে এক সুরে প্রার্থনা করল দুই দল। ডেনমার্ক ও বেলজিয়াম। ড্যানিশ তারকা ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের আরোগ্য কামনায়।ডেনমার্কের সেরা তারকা এরিকসেন। ঐতিহ্যবাহী ১০ নম্বর জার্সি পরে মাঠে নামতেন। ইউরো কাপে ডেনমার্কের প্রথম ম্যাচে ফিনল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলা চলাকালীন আচমকা সংজ্ঞা হারান তিনি। দ্রুত চিকিৎসায় তাঁর প্রাণরক্ষা পায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন এরিকসেন। তবে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন ডেনমার্কের তারকা। তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন যে, তিনি সুস্থ হয়ে ওঠার পথে।
অভিশপ্ত সেই মাঠেই বৃহস্পতিবার ডেনমার্ক মুখোমুখি হয়েছিল বেলজিয়ামের। তবে ম্যাচের শুরুতেই দেখা গেল বিরল দৃশ্য। যেখানে গোটা স্টেডিয়াম এবং যুযুধান দুই দল এরিকসেনের আরোগ্য কামনা করল। হাততালি দিতে দেখা গেল রেফারিদেরও।
ম্যাচে অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনও খামতি ছিল না। ৯৯ সেকেন্ডে গোল করে ডেনমার্ককে এগিয়ে দিয়েছিলেন ইউসুফ পলসেন। ইউরো কাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম গোল। গ্যালারির দর্শক ভালভাবে থিতু হওয়ার আগেই ফেভারিট বেলজিয়াম গোল খেয়ে যায়।
তবে হাল ছাড়েনি বেলজিয়াম। ফিফার ক্রমপর্যায়ে বিশ্বের এক নম্বর দল। প্রথমার্ধে ডেনমার্কই এগিয়ে ছিল ১-০ ব্যবধানে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে তেড়েফুঁড়ে খেলতে শুরু করে বেলজিয়াম। তাতেই চাপে পড়ে যায় এক সময় ফুটবল বিশ্বে সাড়া ফেলে দেওয়া লাউড্রপ ভাইদের ডেনমার্ক। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে রোমেলু লুকাকুর সঙ্গে পাস খেলে ডেনমার্ক বক্সে উঠে আসেন কেভিন দে ব্রুইন। তাঁর বাড়ানো পাস ধরে গোল করে বেলজিয়ামকে সমতায় ফেরান থরগান অ্যাজার।
কেভিন দে ব্রুইন দ্বিতীয়ার্ধে ছিলেন ছন্দে। একের পর এক নিখুঁত পাস বাড়াতে থাকেন তিনি। বেলজিয়ামও দর্শনীয় ফুটবল খেলতে শুরু করে। ম্যাচের ৭০ মিনিটে বক্সের কোণ থেকে বাঁ পায়ের জোরাল শটে ডেনমার্কের গোলকিপার ক্যাসপার স্কেমিশেলকে পরাস্ত করেন দে ব্রুইন। এগিয়ে যায় বেলজিয়াম। শেষ পর্যন্ত ওই ব্যবধানই বজায় থাকে।
এই জয়ের ফলে এই গ্রুপ থেকে ইউরো কাপের শেষ ষোলোয় জায়গা পাকা করে ফেলল বেলজিয়াম।