দুবাই: গত এক বছর ধরে দুরন্ত ফর্মে রয়েছেন পাকিস্তানি ওপেনার ফকর জামান। সাদা কোকাবুরা বলের বিরুদ্ধে গত এক বছরে ১৯ ইনিংসে ৭২ গড়ে রান করেছেন তিনি। বর্তমানে দুরন্ত ছন্দে রয়েছে পাকিস্তান দল। আর ফকর জামানের নাম ভারতীয় দলের সমর্থকদের মনের গভীরে চারিয়ে গিয়েছে। বিশেষ করে, গত বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের পর থেকেই। ইংল্যান্ডে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচ ভুলবেন না ভারতের বোলার জসপ্রিত বুমরাহ।
ওই ম্যাচে বুমরার সেই নো-বল তো ভারত-পাক লড়াইয়ের লোককথায় পরিণত হয়ে গিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে বুমরাহর বলে মাত্র তিন রানে আউট হয়ে গিয়েছিলেন ফকর। কিন্তু বুমরার ওই বলটি নো হওয়ায় জীবন ফিরে পেয়ে ১০৬ বলে ১১৪ রানের দাপুটে ইনিংস খেলেন ফকর। ওই ইনিংসের হাত ধরেই ভারতকে হারানোর চিত্রনাট্য তৈরি করে ফেলেছিল পাকিস্তান।
ফাইনালে হারের পর ওই নো-বলের জন্য তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন বুমরাহ। এমনকি ট্রাফিক পুলিশের সতর্কতামূলক প্রচারেও ওঠে এসেছিল ওই নো-বলের প্রসঙ্গ।
বুমরাহ অবশ্য সেই অধ্যায় পিছনে ফেলে অনেকটাই এগিয়ে এসেছেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিশ্বের অন্যতম সেরা বোলার এখন তিনি। এ শুধু কথার কথা নয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর বুমরাহর পরিসংখ্যানের দিকে চোখ বোলালেই তা মালুম হবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ২১ টি একদিনের ম্যাচে ৩৮ উইকেট নিয়েছেন তিনি। গড় ১৯.৮১, যা নিঃসন্দেহে সমীহ জাগানোর মতো। ইকোনমি ৪.৪২।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটের পাশাপাশি লাল বলেও বুমরাহর ধারাবাহিতা নজর কেড়েছে। গতকাল এশিয়া কাপে ভারতের প্রথম ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল বুমরাহকে।
আজ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ। আর এই ম্যাচ বুমরাহ বনাম ফকরের লড়াইও বটে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের পুনরাবৃত্তি সেই বল বা ফলাফলে চাইবে না কোনও ভারতীয় সমর্থকই।
বুমরাহর মতোই ফকরও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর নিজেকে মেলে ধরেছেন। গত ১৫ ম্যাচে একটি দ্বিশতরান সহ ৮৩৭ রান করেছেন তিনি। পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সাফল্যের পিছনে রয়েছে তাঁর অবদান। ব্যাট হাতে ফকরের ভূমিকার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন পাক অধিনায়ক সরফরাজ আহমেদ। তিনি বলেছেন, ফকর অনেকটাই উন্নতি করেছে। দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস এসেছে ওর ব্যাট থেকে। ও মিডল অর্ডারের বড় রান করার ভিত তৈরি করে দিয়েছে। এখানেও ও ভালো খেলবে বলে আমি নিশ্চিত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এখন অতীত। ওই জয় ছিল স্মরণীয় এবং খেলোয়াড়দের মনে সেই জয়ের স্মৃতি উজ্জ্বল। আমরা দেখেছি, ভারতের বিরুদ্ধে ভালো খেললেই নায়কের মর্যাদা পাওয়া যায়। এটা একটা বাড়তি অনুপ্রেরণা সঞ্চার করে।
অন্যদিকে, ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ভালোমতোই জানেন, পাকিস্তান যথেষ্টই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। আগের দিন খেলে পরের দিনই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামতে হচ্ছে ভারতকে। সীমিত বোলিং শক্তি ও নড়বড়ে মিডল অর্ডারই চিন্তার কারণ টিম ম্যানেজমেন্টের। রোহিত বলেছেন, প্রত্যেক দলই আলাদা এবং নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে হবে। একই জায়গায় খেলব। তবে পিচ বদলে যাবে, বিপক্ষ দলও। তাই আমাদের কৌশলও বদলাতে হবে। বোলিং পরিবর্তন, ব্যাটিং অর্ডারে রদবদল ঘটাতে হবে।
ভারতীয় দলে যে বোলিং দুর্বলতা রয়েছে, তা ঢেকে দিতে পারেন বুমরাহ। আর বুমরাহ এই ম্যাচের জন্য কঠোর অনুশীলন করেছেন। দুবাইয়ে নেটে তাঁকে একটা স্ট্যাম্প রেখে নাগাড়ে ইয়র্কার অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছে।
সাধারণত, ভারত-পাক ম্যাচ মানে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে পাক বোলারদের লড়াই। এবার কিন্তু লড়াইটা ভারতের এক বোলারের সঙ্গে এক পাক ব্যাটসম্যানেরও।