দীপ্তি শর্মা, স্মৃতি মন্ধনা, প্রতীকা রাওয়াল ও হরমনপ্রীত কৌরদের অনবদ্য পরাফরমেন্সের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে ২০২৫-এর মহিলা বিশ্বকাপ। দলগত চেষ্টায় একদিনের ক্রিকেটে প্রথমবার বিশ্বকাপ জিতে নিয়েছে ভারতের মেয়েরা। নভি মুম্বইয়ে ডিওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে দীর্ঘদিনের অপূরণীয় স্বপ্ন পূরণ করেছে ভারতের মহিলা ক্রিকেট দল। আর এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে এক একজন ক্রিকেটারের অসাধারণ কৃতিত্ব। এই যেমন- আমনজ্যোৎ কৌর। বিশেষ করে ফাইনাল ম্যাচে। দীপ্তি শর্মার বলে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ তালুবন্দি করেন আমনজ্যোৎ। যা কার্যত গেম-চেঞ্জিং মুহূর্ত হয়ে ওঠে। নিজের শতরান পূরণ করে ফিরে যান দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা উলভারদত (Laura Wolvaardt)। বিশ্বকাপজুড়ে নিজেকে মেলে ধরতে সফল এই অলরাউন্ডার। ৬ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ১৪৬ রান করেন তিনি।
যদিও আমনজ্যোতের একটা বিষয় সে অর্থে প্রকাশ্যে আসেনি। টুর্নামেন্টে তিনি যখন নিজের সেরাটা উজার করে চলেছেন, সেইসময় তাঁর পরিবারে চলছে তীব্র সঙ্কট। তাঁর পরিবার অবশ্য সেই সঙ্কটের কথা তাঁকে আঁচও পেতে দেয়নি। যাতে বিশ্বকাপ থেকে তাঁর ফোকাস না নড়ে যায়। সম্প্রতি হার্ট অ্যাটাক হয় আমনজ্যোতের ঠাকুমার। তাঁর পরিবার ক্রমাগত হাসপাতালে আটকে। কিন্তু, এই কঠিন পরিস্থিতির আঁচ আমনজ্যোতের ওপর আসতে দেয়নি তাঁর পরিবার। তাঁর পরিবার চেয়েছে মেয়ে বিশ্বকাপে ফোকাস করুক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকার আমনজ্যোতের বাবা ভূপিন্দর সিং বলেন, "মোহালিতে আমাদের ফেজ ৫-এর বাসভবনের বাইরে রাস্তায় এবং পার্কে ক্রিকেট খেলা শুরু করার দিন থেকেই আমার মা ভগবন্তী আমানজোতের শক্তির স্তম্ভ। আমি যখন বালোঙ্গিতে আমার কাঠমিস্ত্রির দোকানে থাকতাম, তখন মা বাড়ির বাইরে বা পার্কে বসে ছেলেদের পাশাপাশি অন্যান্য মেয়েদের সঙ্গে আমনজ্যোতের খেলা দেখাশোনা করত। গত মাসে মা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর, আমরা আমনজ্যোতকে এ সম্পর্কে বলিনি। গত কয়েকদিন ধরে আমরা তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে সময় কাটাচ্ছি। এই সময়ে বিশ্বকাপ জয় অবশ্যই আমাদের জন্য মলম হিসেবে এসেছে।"
প্রতিবেশী ছেলেদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা শুরু করেছিলেন আমনজ্যোৎ। তাঁর খেলার সবথেকে বড় সমর্থক ছিলেন ঠাকুমা। ক্রমাগত তাঁকে উৎসাহিত করে গেছেন। তাই তো ফাইনালে হরমনপ্রীত কৌর শেষ ক্যাচ ধরার সঙ্গে সঙ্গে পুরো ভারতীয় দলের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে কাঁদলেন আমনজ্যোৎও। Amanjot Kaur