দোহা: দুই দশক আগে শেষবার তারকাখচিত ব্রাজিলিয়ান দল পরপর দুই বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠার কৃতিত্ব অর্জন করেছিল। গত বারের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সও সেই কৃতিত্বই গড়ল। সেমিফাইনালে মরক্কোকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট বুক করেন কিলিয়ান এমবাপেরা। আগামী ১৮ তারিখ, রবিবার লিওনেল মেসির (Lionel Messi) আর্জেন্তাইন দলের বিরুদ্ধে জয় ছিনিয়ে নিতে পারলেই টানা দ্বিতীয়বার বিশ্বজয় করবে ফ্রান্স। তবে দুরন্ত ছন্দে থাকা মেসি কিন্তু সমস্ত হিসেব নিকেশ একাই বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।


গ্রিজম্যানের সতর্কবার্তা


মেসির দক্ষতা কারুরই অজানা নয়। তাই ফাইনালে পৌঁছলেও আগেভাগেই দলের সতীর্থদের কিন্তু সতর্কবার্তা দিয়ে রাখছেন মেসির প্রাক্তন সতীর্থ আঁতোয়াঁ গ্রিজম্যান (Antoine Griezmann)। ৩১ বছর বয়সি গ্রিজম্যান কোনওরকম রাখঢাক না করেই স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছেন যে দলে মেসি রয়েছেন, সেই দলের বিরুদ্ধে ম্যাটটা বাকি ম্যাচগুলির থেকে ভিন্ন। 'যে দলে মেসি থাকে, তার বিরুদ্ধে খেলাটা সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের একটা চ্যালেঞ্জ। অবশ্যই মেসি ছাড়াও দলে আরও খেলোয়াড় রয়েছে এবং ওদের দলটা বেশ মজবুত। ম্যাচে যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে, সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত। মাঠে ওদের প্রচুর সমর্থক থাকবে, এটা নিশ্চিত। আমরা কীভাবে ওদের আক্রমণভাগকে থামাব, সেই নিয়ে অনুশীলনে পরিকল্পনা করা হবে। আমরা সবরকম প্রস্তুতি সেরেই মাঠে নামব।' বলেন গ্রিজম্যান।


সেমিফাইনালে ফ্রান্সের জয় 


এবারের বিশ্বকাপে বারবার চমকে দিয়েছে মরক্কো। ফ্রান্সকে আটকে দেবে মরক্কো এমন আশায় ছিলেন অনেকেই। কিন্তু প্রথমার্ধে খেলার ৫ মিনিটের মধ্যেই থিও হার্নান্ডেজের গোলই সব হিসেব পাল্টে দেয়। এগিয়ে যায় ফ্রান্স। এরপর থেকে দুই দলই তাঁদের আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায়। খেলার ১১ মিনিটের মাথায় ওউনাহির দুরন্ত শট আটকে দেন উগো লরিস। এদিন কিছুটা আনফিট পরিস্থিতিতেই মাঠে নেমেছিলেন মরক্কোর অধিনায়ক রোমান সাইস। ম্যাচের গুরুত্ব বুঝে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারলেন না। ১৬ মিনিটের মাথায় তাঁকে বসিয়ে দেন মরক্কোর কোচ। 


গোল হজম করার পর বল পাস ও বল পজিশনে অনেকটা টেক্কা ফ্রান্সকে দিয়েছিল মরক্কো। একটা সময় ৫৭ শতাংশ বল পজিশন নিয়ে খেলছিল মরক্কো। ৪৩ শতাংশ বল পজিশন দেশঁর দলের। কিন্তু বারবার ডি বক্সে ঢুকেও গোলমুখ খুলতে পারেননি জিয়েখ, হাকিমিরা। দ্বিতীয়ার্ধে কিলিয়ান এমবাপে পরপর সুযোগ তৈরি করছিলেন। উল্টোদিকে মাঠের ডানদিক থেকে জুটি বেঁধে ফ্রান্সের বক্সে বারবার হানা দিচ্ছিলেন জিয়েখ ও হাকিমি। দেশঁ জিহুকে বসিয়ে মার্কাস থুরামকে নামান। অন্যদিকে দেম্বেলেকে বসিয়ে নামান কোলো মুয়ানিকে। এরপরই ৭৯ মিনিটের মাথায় দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় ফ্রান্স। থুরামের থেকে পাস নিয়ে মরক্কোর বক্সে ৩-৪ জনকে কাটিয়ে গোলে শট নেন এমবাপে। সেই শট থেকে বল মুয়ানির কাছে পৌঁছে যায়। কার্যত ফাঁকা গোল বল জড়াতে ভুল করেননি মুয়ানি। ম্যাচে আর কোনও গোল না হওয়ায় ২-০ ব্যবধানে জয় পায় ফ্রান্স। 


আরও পড়ুন: মরক্কোকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে আর্জেন্তিনার সামনে ফ্রান্স