দোহা: কাল ভারতীয় সময় রাত সাড়ে বারোটায় বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল। মুখোমুখি আর্জেন্তিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া (Argentina vs Croatia)। যে ম্যাচকে লিওনেল মেসি (Lionel Messi) বনাম লুকা মদ্রিচ (Luka Modric) দ্বৈরথ হিসাবেও দেখছেন অনেকে।


আর্জেন্তিনা ও ক্রোয়েশিয়া, দুই দলই টাইব্রেকারে কোয়ার্টার ফাইনাল জিতে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। আর্জেন্তিনা নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে ২ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল। তার পরেও ২-২ ফলে শেষ হয় ৯০ মিনিট। অতিরিক্ত সময়ে কোনও দলই গোল পায়নি। টাইব্রেকারে বিপক্ষের ২টি শট রুখে দিয়ে নায়ক আর্জেন্তিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ।


অন্যদিকে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে অতিরিক্ত সময়ে নেমার দ্য সিলভা স্যান্তোস জুনিয়রের দুরন্ত গোলে পিছিয়ে পড়েছিল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু ইভান পেরিসিচ সমতায় ফেরান ক্রোটদের। তারপর টাইব্রেকারে জিতে শেষ চারে পৌঁছয় ক্রোয়েশিয়া।


আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখনও পর্যন্ত ৫ বার মুখোমুখি হয়েছে আর্জেন্তিনা ও ক্রোয়েশিয়া। রেকর্ড বলছে, টক্কর হয়েছে সেয়ানে সেয়ানে। দুই দলই দুটি করে ম্যাচ জিতেছে। একটি ম্যাচ শেষ হয়েছে অমীমাংসিতভাবে।


১৯৯৪ সালে দুই দেশের প্রথম ম্যাচ ড্র হয়েছিল। সেটি ছিল আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ। বিশ্বকাপে দুই দল দুবার মুখোমুখি হয়েছে। দুই দলই জিতেছে একটি করে ম্যাচ। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ১-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্তিনা। তবে গত বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে আর্জেন্তিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিলেন ক্রোটরা। গোল করেছিলেন মদ্রিচও।


এবার কী হবে? কেরিয়ারের শেষ বিশ্বকাপে কি মেসি ম্যাজিক দেখাবেন? নাকি শেষ হাসি হাসবেন মদ্রিচ? পঁয়ত্রিশের মেসি মাঠে ফুট ফোটাচ্ছেন। সাঁইত্রিশের মদ্রিচও গোটা মাঠ নিয়ন্ত্রণ করছেন। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে কখনও হারেনি আর্জেন্তিনা। সেই রেকর্ড কি অক্ষুণ্ণ থাকবে কাতারেও? অপেক্ষা আর একদিনের।


হাকিমের নজির


প্রথম আফ্রিকান দেশ হিসাবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে মরক্কো (Morocco Football Team)। সেই মরক্কো দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হলেন হাকিম জিয়েখ (Hakim Ziyech)। দলের তারকা ফরোয়ার্ডের পায়ে গোলমুখী পাস বাড়ানোর দক্ষতা থেকে বিশ্বমানের গোল করার কৃতিত্ব সবই আছে। চলতি বিশ্বকাপে ভাল ফর্মেও রয়েছেন তিনি। অবশ্য জিয়েখের ফুটবল দক্ষতার বিষয়ে ফুটবলপ্রেমীরা অবগত হলেও, তাঁর দেশপ্রেম নিয়ে কিন্তু খুব কম লোকই অবগত। খবর অনুযায়ী, ২০১৫ সাল থেকে দেশের হয়ে খেলার এক টাকাও পারিশ্রমিক নেননি জিয়েখ।


মরক্কোর এক বিখ্যাত সাংবাদিক খালিদ বেদৌন সম্প্রতি গোটা বিষয়টা প্রকাশ্যে আনেন। তিনি জানান জিয়েখ নিজের পারিশ্রমিক দলের সাপোর্ট স্টাফ এবং গরীবদের মধ্য়েই বিলিয়ে দেন। জিয়েখ বিগত সাত বছর ধরেই মরক্কো হয়ে খেলছেন। জিয়েখের জন্ম নেদারল্যান্ডসে। তিনি নেদারল্যান্ডসের অনুর্ধ্ব ১৯ থেকে অনুর্ধ্ব ২১ দলের হয়ে খেলেছেন। তবে শেষমেশ তাঁর বাবা মায়ের দেশ মরক্কোর জাতীয় দলের হয়েই খেলার সিদ্ধান্ত নেন জিয়েখ। অ্যাটলাস লায়ান্সের হয়ে জিয়েখ এখনও পর্যন্ত ৪৭ ম্যাচে ১৯টি গোল করেছেন। প্রসঙ্গত, এ বছর জানুয়ারিতেই তৎকালীন কোচের সঙ্গে ঝামেলার জেরে জাতীয় দল থেকে অবসর ঘোষণা করেছিলেন জিয়েখ। তবে সেই কোচের অপসারণের পর ফের বিশ্বকাপে মরক্কোর হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।  


আরও পড়ুন: ''তুমি আমার কাছে সর্বকালের সেরা...'' ক্রিশ্চিয়ানোকে আবেগঘন বার্তা বিরাটের