দোহা: রাশিয়া বিশ্বকাপের মধুর প্রতিশোধ নিল আর্জেন্তিনা। চার বছর আগের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে আর্জেন্তিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া (Argentina vs Croatia)। কাতারে সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে সেই ৩-০ গোলেই চূর্ণ করল আর্জেন্তিনা। পৌঁছে গেল ফাইনালে। ফ্রান্স-মরক্কো ম্যাচের বিজয়ীর সঙ্গে খেলবেন লিওনেল মেসিরা (Lionel Messi)।


গোটা ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন মেসি। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের (Fifa World Cup 2022) সেমিফাইনালের প্রথমার্ধেই গোল করলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। সেই সঙ্গে গড়ে ফেললেন নতুন এক নজির। গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার রেকর্ড ভেঙে দিলেন মেসি। বিশ্বকাপে এতদিন আর্জেন্তিনার জার্সিতে সবচেয়ে বেশি গোল করার নজির ছিল বাতিস্তুতার। আর্জেন্তিনার হয়ে বিশ্বকাপে ১০ গোল ছিল বাতিস্তুতার। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে গোল করে সেই রেকর্ড স্পর্শ করেছিলেন মেসি। মঙ্গলবার ভারতীয় সময় মধ্যরাতের ম্যাচে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন আর্জেন্তিনার অধিনায়ক। বিশ্বকাপে ১১টি গোল হয়ে গেল মেসির। তিনিই এখন আর্জেন্তিনার হয়ে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলের মালিক।


সেই সঙ্গে কিলিয়ান এমবাপেকেও ধরে ফেললেন মেসি। ফ্রান্সের তারকা চলতি বিশ্বকাপে ৫ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। মেসি তাঁর চেয়ে এক গোলে পিছিয়ে ছিলেন। ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে গোল করে এমবাপেকেও গোলসংখ্যায় ধরে ফেললেন মেসি। চলতি বিশ্বকাপে তাঁরও ৫ গোল হয়ে গেল।                                                                                                            


ম্যাচের বয়স তখন ৩২ মিনিট। দ্রুত গতিতে ক্রোয়েশিয়া বক্সে ঢুকে পড়া হুয়ান আলভারেজকে ফাউল করেন গোলকিপার লিভাকোভিচ। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত রেফারির। পেনাল্টি থেকে গোল করেন মেসি। আর্জেন্তিনা এগিয়ে গেল ১-০ গোলে। যদিও সেই পেনাল্টি নিয়ে কোনও কোনও মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আলভারেজ শট নেওয়ার পরে তাঁকে ফাউল করেন গোলকিপার। তাই পেনাল্টি এড়ানোও যেতে পারত। রেফারি অবশ্য তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন।


এর ৬ মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল। ফের আলভারেজ ম্যাজিক। প্রায় ৪০ গজ দৌড়ে ক্রোয়েশিয়া বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। তারপর পায়ের ছোট্ট টোকায় ২-০ করেন। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-০ ব্যবধানেই।


এদিন কিংবদন্তি পেলেকে স্পর্শ করার সুযোগ ছিল আলভারেজের সামনে। আর একটি গোল করলেই ফুটবল সম্রাটের নজির স্পর্শ করতেন। বিশ্বকাপের ইতিহাসে একমাত্র পেলেরই সেমিফাইনালে হ্যাটট্রিক রয়েছে। তবে ম্যাচ জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে যেতে আলভারেজকে তুলে নেন লিওনেল স্কালোনি। তরুণ ফুটবলারকে নিয়ে কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি আর্জেন্তিনার কোচ। যাতে তাঁকে তরতাজা অবস্থায় ফাইনালে পাওয়া যায়।


দ্বিতিয়ার্ধে ক্রোয়েশিয়া বক্সে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনে আর্জেন্তিনা। ফলও হয়। ম্যাচের বয়স তখন ৬৯ মিনিট। কার্যত একক কৃতিত্বে মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে ক্রোয়েশিয়া বক্সে ঢুকে পড়েন মেসি। তাঁর গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে ব্যর্থ ক্রোটরা। বক্সের ডানদিকে গিয়ে চকিত টার্ন করে ডিফেন্ডারদের বোকা বানান মেসি। ক্রোয়েশিয়ার চারজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অবিশ্বাস্য পাস বাড়ান তিনি। গোল করতে ভুল করেননি আলভারেজ। আর্জেন্তিনা এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে।


গোটা ম্যাচে সেই ব্যবধান আর কমাতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। ফাইনালে ওঠার স্বপ্নভঙ্গ হল লুকা মদ্রিচ-ইভান পেরিসিচদের।


আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশকে ১৯৮ রানে শেষ করেও চাপে বাংলা, ক্ষোভ অভিষেকের বিতর্কিত আউট নিয়ে