সন্দীপ সরকার, কলকাতা: পিচে সবুজের আভা। সকালে স্যাঁতস্যাঁতে ভাব। বল স্যুইং করছে। লাফাচ্ছে। পেসারদের জন্য আদর্শ পরিস্থিতি।


আর সেই পিচে উত্তরপ্রদেশকে ১৯৮ রানে অল আউট করে দিল বাংলা (Bengal vs UP)। অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwari) ম্যাচের আগের দিনই জানিয়েছিলেন যে, টস জিতলে প্রথমে ফিল্ডিং করবেন। চার পেসার খেলিয়ে পরীক্ষা নেবেন উত্তরপ্রদেশের। ভাগ্য বাংলার সঙ্গেই ছিল। টস জেতেন মনোজ। পরিকল্পনা মতো প্রতিপক্ষকে ব্যাট করতে পাঠান। ৬৩.৫ ওভারে মাত্র ১৯৮ রানে শেষ হয়ে যায় উত্তরপ্রদেশ। ৫ উইকেট ঈশান পোড়েলের। ৩ উইকেট প্রীতম চক্রবর্তীর।


কিন্তু তার পরেও ঘরের মাঠে রঞ্জি ট্রফির প্রথম দিনের শেষে স্বস্তিতে নেই বাংলা। বরং বেশ কোণঠাসাই। কারণ, মাত্র ২৯ রানে ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের দুই পেসার অঙ্কিত রাজপুত ও শিবম মাভি রীতিমতো থরহরিকম্প ফেলে দেন বাংলা শিবিরে। ঘটনাচক্রে, দুজনই কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাক্তনী। এবং ইডেন গার্ডেন্সকে (Eden Gardens) চেনেন হাতের তালুর মতো। তিন উইকেট নিয়েছেন শিবম। অঙ্কিতের ঝুলিতে এক উইকেট। ব্যাট হাতেও বাংলার বিরুদ্ধে সেরা ইনিংসটা খেললেন এক কেকেআর তারকাই। রিঙ্কু সিংহ। ৭৯ রান করলেন তিনি। প্রিয়ম গর্গ করেন ৫৩ রান।


বাংলার কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল অবশ্য হাল ছাড়তে নারাজ। দল কিছুটা চাপে আছে মেনে নিয়েও বলছেন, 'ওদের আরও কম রানে বেঁধে রাখা যেত। প্রথম সেশনে আরও ভাল বল করা উচিত ছিল। ৪ উইকেট পড়ে গিয়েছে। তবে ম্যাচ এখনও অনেক বাকি। সবে প্রথম দিনের খেলা শেষ হল। বাকি তিনদিন আমাদের ভাল ক্রিকেট খেলতে হবে। এখান থেকেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।'


নিজে ক্রিকেট খেলার সময় চাপের মুখে বারবার পারফর্ম করেছেন। দিনের খেলার শেষে শিবিরকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কী বললেন? এবিপি লাইভকে লক্ষ্মীরতন বলছিলেন, '৪ উইকেট হারিয়ে বসার পর ছেলেরা জানে কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কাউকে আলাদা করে কিছু বলার দরকার নেই। ওরা জানে কী করতে হবে। তবে সবাই তো আর একসঙ্গে রান পাবে না।'


ইডেন ছেড়ে বেরনোর সময় অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারির মুখেও একই সুর। বলছিলেন, 'আমি আর লক্ষ্মীদা ঠিক করে নিই, আজ আর ছেলেদের কিছু বলা হবে না। কাল খেলা শুরুর আগে যা বলার বলব।'


ক্রিজে রয়েছেন সায়নশেখর মণ্ডল ও নৈশপ্রহরী প্রীতম চক্রবর্তী। মনোজের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে বাংলা। মনোজ বলছেন, 'কাল আমাদের ৪ ব্যাটার যদি ৩০ রান করেও করতে পারি, লড়াই করার মতো জায়গা থাকবে। প্রথম ঘণ্টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।'


তবে বাংলা শিবিরে আম্পায়ারিং নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। শিবম মাভির বলে কট বিহাইন্ড হন অভিষেক দাস। ইনিংস ওপেন করতে নেমে ৮ রান করেন তিনি। জানা গেল, বল তাঁর ব্যাটেই লাগেনি। বাংলা শিবির থেকে দাবি করা হল, বল অভিষেকের কাঁধ ছুঁয়ে গিয়েছে। এমনকী, তাঁর জার্সিতেও বলের দাগ লেগে রয়েছে। তিনি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের শিকার না হলে দিনের শেষে এতটা চাপ তৈরি হতো না, দাবি বাংলা শিবিরের।


ম্যাচে কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন মনোজ-শাহবাজ আমেদরা?


আরও পড়ুন: দেশ ও সমর্থকদের জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দেব, সেমিফাইনালের আগে শপথ দি পলের