কলকাতা: সল্ট লেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসিকে (Messi) ঘিরে বেনজির বিশৃঙ্খলার রেশ এখনও কাটেনি। ঘরে-বাইরে মুখ পুড়েছে বাংলার। সমালোচনার ঝড় চলছে। দর্শকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৈরি হয়েছে বিশেষ তদন্তকারী কমিটি। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ক্রীড়ামন্ত্রীর পদ থেকে অব্যহতি নিয়েছেন অরূপ বিশ্বাস।
এবার যুবভারতী কাণ্ড নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ম্যান ইন কম্যান্ড বলা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরই জায়গা দেওয়া হয়। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ বলেছেন, 'যুবভারতীর ঘটনা অনভিপ্রেত। ঘটনার ১ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজকদের সঙ্গে পুলিশেরও গাফিলতি রয়েছে। যুবভারতীর ঘটনা নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করছেন তাঁরা আরও ছোট করছেন। অনেক কষ্টে মানুষ টিকিট কেটে এসেছিল। কিছু মানুষের উৎসাহে দর্শকরা বঞ্চিত হন।'
এরপরই অভিষেক বলেন, 'যে আশা, উৎসাহ নিয়ে মানুষ এসেছিলেন, কয়েকজনের ব্যবহার, আচার-আচরণ বা আদিখ্যেতায়... আমি এই শব্দটা এই কারণেই ব্যবহার করছি, বেশি উৎসাহ, আদিখ্যেতা দেখাতে গিয়ে, অনেক কষ্ট করে যাঁরা টিকিট কেটে এসেছিলেন, তাঁদের নিরাশ করেছে, তাদের জবাবদিহি করতে হবে।'
অভিষেক যোগ করেন, 'যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাদের সকলের বিরুদ্ধেই রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। সে পুলিশ প্রশাসনের প্রতিনিধি হোক, কিংবা যুবভারতীর সিইও হোক, বা মন্ত্রীসভার সদস্য। তদন্ত চলছে। আগামীদিনে যাদের গাফিলতি পাওয়া যাবে, তাদের সকলের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অনেক ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছে, কখনও রেলমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে দেখিনি। যুবভারতীর ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি স্বীকার করে ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী।'
রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকেও আক্রমণ করেছেন অভিষেক। বলেছেন, "রাজ্যপালকে জিজ্ঞাসা করুন। ওঁর এই বিবেক কোথায় ছিল যখন বালেশ্বরে ট্রেন দুর্ঘটনা হয়েছিল, যখন পহেলগাঁওয়ের ঘটনা ঘটেছিল, দিল্লিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। আজ ক্রীড়ামন্ত্রীর বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ উঠছে, মেসির সঙ্গে ছবি তোলার জন্য ইস্তফা দিতে হয়েছে...এটা যদি জনতার দাবি হয়, তাহলে সেইমতো উনি ইস্তফা দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তা গ্রহণও করেছেন। বাংলা একমাত্র রাজ্যে যেখানে জবাবদিহি হয়। বিজেপিকে জিজ্ঞাসা করুন, বলেছিল, নোটবন্দি করে কালো টাকা ফেরত দেব...দেশের প্রধানমন্ত্রীই তো বলেছিলেন। আজ ৪ হাজার দিন হয়ে গেল। রাজ্যপালের এটুকু বোঝা উচিত, জবাব যাকে দিতে হবে তিনি চুপ করে বসে আছেন। আর জবাব যার দেওয়ার দরকার নেই, সেই মুখ্যমন্ত্রী ১৩০ কোটি মানুষের সামনে মাথা ঝুঁকিয়ে একটা ছোট দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এটাই বিজেপি ও তৃণমূলের পার্থক্য।"