নাম ডিন: দ্বিতীয়ার্ধে উজ্জীবিত ফুটবল খেলেও ফিফা ক্রমতালিকায় ১১৬ নম্বরে থাকা ভিয়েতনামকে হারাতে পারল না দশ ধাপ নীচে থাকা ভারত (India vs Vietnam)। শেষ পর্যন্ত নাম ডিনে প্রীতি ম্যাচ ১-১ ড্র হল শনিবার। ঘরের মাঠে ৩৮ মিনিটের মাথায় ভিয়েতনামকে এগিয়ে দেন বুই ভি হাও। এর কুড়ি মিনিট পরে ফারুখ চৌধুরির গোলে সমতা আনে ভারত। তবে এর বেশি এগোতে পারেনি তারা। 


ভারত সব বিভাগেই এ দিন ভাল পারফরম্যান্স দেখালেও মানোলো মার্কেজের প্রশিক্ষণে প্রথম জয় তুলে নিতে পারেনি তারা। গত বছর নভেম্বরে কুয়েতকে হারানোর পর থেকে গত এগারোটি ম্যাচে জয়হীন থাকল ভারত। এ দিন উল্লেখযোগ্য পারফরম্যান্স দেখার ভারতের অভিজ্ঞ গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু। ২৭ মিনিটে তিনি পেনাল্টি না বাঁচালে ভারত তখনই পিছিয়ে পড়ত।    


ঘরের মাঠে এ দিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিল ভিয়েতনাম। ভারতের গোল এলাকায় দ্রুত ছোট ছোট পাস খেলে প্রতিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে তারা। তাদের আক্রমণ বিভাগের দুই প্রধান ভরসা ভ্যান তোয়ান ও হোয়াং ডাক নিজেদের মধ্যে দুর্দান্ত বোঝাপড়া গড়ে তুলে বারবার আক্রমণে ওঠেন।


অন্যদিকে, ভারত পাঁচ ডিফেন্ডারে খেললেও প্রায়ই প্রতি-আক্রমণে ওঠে তারা। এ রকমই এক আক্রমণে লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতের দেওয়া পাস পেয়ে বক্সের মাথা থেকে গোলে শট নেন ফারুখ। যা অনবদ্য দক্ষতায় বাঁচান ভিয়েতনামের গোলকিপার নগুয়েন ফিলিপ। 


কিন্তু ২৬ মিনিটের মাথায় যে ভুল করে ফেলেন রাহুল ভেকে, তার বড়সড় খেসারত দিতে হত ভারতকে, যদি না সে যাত্রায় দলকে বাঁচাতেন গুরপ্রীত। হাওকে নিজেদের বক্সে ফাউল করেন ভেকে। যার জেরে পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে দ্বিধা করেননি রেফারি। ভিয়েতনামের অধিনায়ক কে নগক হাই স্পট কিক নেন। কিন্তু তা অভিজ্ঞ গোলকিপারের হাতে আটকে যায়। 


ওই পেনাল্টির পরই প্রতি আক্রমণ থেকে দুর্দান্ত এক গোলের সুযোগ পেয়ে যান ফারুখ। নগক হাইয়ের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজের সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন তিনি। সামনে ছিলেন শুধু গোলকিপার ফিলিপ। কিন্তু ফারুখের গোলমুখী শটে হাত লাগিয়ে বলের গতিপথ বদলে দেন তিনি। 


এমন সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করলেও ক্রমশ বলের দখল বাড়িয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা করে ভারত। কিন্তু প্রতিপক্ষের আক্রমণের চাপ সামলাতে না পেরে ৩৮ মিনিটের মাথায় গোল খায় তারা। কর্নার থেকে ক্লিয়ার হওয়া বল ভি হাওয়ের পায়ে গিয়ে পড়ে। তিনি সোজা গোলের উদ্দেশ্যে একটি ভলি মারেন, যা গুরপ্রীতের সবল হাতে ধাক্কা খেলেও শেষ পর্যন্ত তা মাটিতে ছিটকে পড়ে ও গোললাইন পেরিয়ে যায়। 


কোচের পরামর্শে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ শানায় ভারতীয় দল এবং বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করে এবং ৫৮ মিনিটের মাথায় সমতা এনে ফেলে তারা। সুরেশের একটি হাওয়ায় ভাসানো এরিয়াল থ্রুয়ে বল পান ফারুখ এবং প্রতিপক্ষের অধিনায়ককে ধোঁকা দিয়ে গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে গোলের দিকে চিপ করেন তিনি। ফাঁকা গোলে বল জালে জড়িয়ে যায়।


সমতা আনার পর ভারতীয় দল জয়ের গোল পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এবং দুই উইং দিয়ে সমানে আক্রমণে উঠতে শুরু করে। এই সময় ফারুখ দ্বিতীয় গোলের সুবর্ণ সুযোগ পান, যখন প্রতিপক্ষের রক্ষণের ওপর দিয়ে তাঁকে গোলের বল সরবরাহ করেন ছাঙতে। এগিয়ে আসা গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে ফের গোলের উদ্দেশে চিপ করেন ফারুখ। কিন্তু এ বার কয়েক ইঞ্চির জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হন। 


ম্যাচের শেষ দিকে এডমন্ড লালরিন্ডিকা, লিস্টন কোলাসো ও বিক্রম প্রতাপ সিংকে নামান কোচ মার্কেজ। তুলে নেন আক্রমণের তিন ভরসা ফারুখ, ফার্নান্ডেজ ও ছাঙতেকে। কিন্তু তাতে তেমন কোনও লাভ হয়নি। ম্যাচের শেষ দিকে বরং ফের আগ্রাসী হয়ে ওঠে ভিয়েতনাম এবং বেশ কয়েকটি শট গোলে রাখে তারা। কিন্তু গুরপ্রীতের দক্ষতা এবং আনোয়ার আলির একটি গোললাইন সেভ তাদের বাঁচিয়ে দেয়। (সৌ: আইএসএল মিডিয়া)


আরও পড়ুন: আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালস ছাড়ছেন ঋষভ পন্থ? কেন এমন পোস্ট করলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।