কলকাতা: পরপর দুটো হারে তারা ধাক্কা তো খেয়েছেই। কিন্তু এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার ভাবনাও রয়েছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট শিবিরে। বুধবার এ বছরের শেষ ম্যাচে খেলতে নামছে তারা। জানুয়ারিতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের খেলা না থাকলেও কলিঙ্গ সুপার কাপে অংশ নেবে তারা। সেই টুর্নামেন্টের পর ফেব্রুয়ারিতে ফের যখন আইএসএল শুরু হবে, তখন যাতে শক্তিশালী দল নিয়ে ফিরে আসতে পারেন তাঁরা, এখন সেই ভাবনা চিন্তাই চলছে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসদের শিবিরে। 


চোট-আঘাতে জর্জরিত মোহনবাগান শিবির। আশিক কুরুনিয়ান, আনোয়ার আলিদের চোট তো আগেই ছিল। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সহাল আব্দুল সামাদও সম্প্রতি চোট পেয়ে মাঠের বাইরে রয়েছেন। অনিরুদ্ধ থাপা, মনবীর সিং ও দিমিত্রিয়স পেট্রাটস চোট সারিয়ে সদ্য মাঠে ফিরেছেন। গত ম্যাচে আবার অস্ট্রেলীয় স্টপার ব্রেন্ডান হ্যামিলও হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যায় পড়েছেন। চোট গ্ল্যান মার্টিন্সেরও। এই অবস্থাতেও জেতার কথা বলছেন ফেরান্দো। 


মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “আমার কাছে দলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দল এখন খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এখন নিজের কথা না ভেবে দলের কথা ভাবতে হবে। এই পরিস্থিতির মধ্যেও কী করে একটা ভাল দল গড়া যায়, সেই নিয়ে ভাবছি। কারা কাল খেলার জন্য তৈরি ও সুস্থ, সেটাই দেখছি। মোদ্দা ব্যাপার হল, কাল তিন পয়েন্ট পেতে হবে। দলের ওপর কতটা চাপ রয়েছে, তা নিয়ে ভাবছি না”। 


মুম্বইয়ে তাঁর দলের একসঙ্গে তিন খেলোয়াড় লাল কার্ড দেখেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন এই ম্যাচে মাঠে ফিরছেন। কারা তাঁরা? এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “দলের অবস্থা একই রকম। শুধু আশিস রাই ও হেক্টর ইউস্তে সাসপেনশন কাটিয়ে দলে ফিরছে। তবে চোট-আঘাতের অবস্থা একই রকম। ব্র্যান্ডন হ্যামিলের চোট। গত ম্যাচে ওর হ্যামস্ট্রিংয়ের সমস্যা হয়েছে। ও খেলতে পারবে না। সহাল ও গ্ল্যানেরও চোট রয়েছে। ওদেরও এখন মাঠে নামা কঠিন”। 


গত দুই ম্যাচে জিতে আসা কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে যে এই ম্যাচ বেশ কঠিন হতে চলেছে, তা স্বীকার করে নিয়ে স্প্যানিশ কোচ বলেন, “শুধু এই ম্যাচ নয়, সব ম্যাচই কঠিন। তবে এই পরিস্থিতিতে প্রতিপক্ষের চেয়ে নিজেদের দল নিয়েই বেশি ভাবছি। কেরালা খুবই ভাল পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে। মনস্তাত্বিক ভাবে ওরা অবশ্যই এগিয়ে রয়েছে। কারণ, ওরা শেষ দুই ম্যাচেই জিতেছে। তবে আমার কাছে আমার দলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দলকে পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত করাই বেশি জরুরি। প্রতিপক্ষ তো আমাদের হাতে নেই। আমার দলই আমার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই নিজেদের নিয়ে বেশি ভাবাই ভাল”। 


গত ম্যাচে এফসি গোয়ার কাছে চার গোল খেয়েছে তারা। এর পর বুধবারের ম্যাচে গোল না খাওয়ার ওপরই বেশি জোর দেবেন কি না, জানতে চাওয়ায় ফেরান্দো বলেন, “জেতার ওপরই বেশি জোর দিতে চাই আমরা।  এক গোল খেলে আমাদের দু’গোল করতে হবে বা দু’গোল খেলে তিন গোল করতে হবে, তা তো জানাই। আমরা মাঠে নামি জেতার জন্য। সে জন্য গোল দরকার। আক্রমণের শেষ পর্বে জায়গা তৈরি করা, গোলের সুযোগ তৈরি করা, এগুলোই বেশি জরুরি। 


আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে রক্ষণের দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন। কিন্তু যদি শুধু রক্ষণের দিকেই নজর থাকে, তা হলে তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। কারণ, গোল খেয়ে গেলে পুরো পরিকল্পনা বদলাতে হয়। আমরা গোল খাচ্ছি, এটা ঠিকই। কিন্তু গোল খাচ্ছি, যখন ৯-১০জন হয়ে যাচ্ছি, পেনাল্টি থেকে বা ছোট ভুলের জন্য। এগুলো সবই ফুটবলের অঙ্গ। কিন্তু আমাদের একই ভাবে খেলে যেতে হবে, পরিশ্রম করে যেতে হবে, জিততে হবে”।