নয়াদিল্লি: যে কোনও ফুটবল দলের হৃদয় ও ইঞ্জিন আসলে এই মিডফিল্ডাররা। যে কোনও ম্যাচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তারা পালন করে তাদের পারফরম্যান্সের মাধ্যমে। ফরোয়ার্ড লাইনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট করা কিংবা নিজেদের ডিফেন্স লাইনকে রক্ষা করা—দলের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে মিডফিল্ডারদের ভূমিকা বিভিন্ন রকমের ও গুরুত্বপূর্ণ। 

মাঠের মাঝখানে থাকা এই খেলোয়াড়রাই খেলার গতি ও ছন্দ নির্ধারণ করে তাদের বহুমুখিতানিখুঁত পাসিং এবং অনন্য দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ ২০২৪-২৫ (ISL 2024-25) মরশুমেও দেখা গিয়েছেকী ভাবে তারকা মিডফিল্ডাররা তাদের নিজ নিজ দলের ভাগ্য গঠনে এবং ম্যাচের ফল নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন

ভক্তদের ‘টিম অফ দ্য সিজন’ বাছাইয়ের ভোটে প্রথম ধাপ বুধবার শেষ হওয়ার পরএখন সময় এসেছে মিডফিল্ডারদের নির্বাচন করার। ৪-৩-৩ ফরমেশনে যে তিনজন মিডফিল্ডার থাকবেনতাদের বাছাইয়ের জন্য শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ। এই ধাপে ভক্তরা সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারলেফট সেন্ট্রাল ও রাইট সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার হিসেবে তাদের চূড়ান্ত পছন্দ নির্বাচন করতে পারবেন। দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ চলবে ৮ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত। এই প্রতিবেদনে ফ্যানদের বাছা মরশুমের সেরা দলের জন্য মনোনীত মিডফিল্ডারদের নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

সেন্টার মিডফিল্ডার:

নিখিল প্রভু (পাঞ্জাব এফসি) এ মরশুমে নিখিল প্রভু ছিলেন পাঞ্জাব এফসির মাঝমাঠে নিঃশব্দ নায়ক। তাঁর দুর্দান্ত গেম রিডিংকৌশলগত সচেতনতা এবং স্মার্ট অ্যান্টিসিপেশন দক্ষতা তাঁকে শেরদের মাঝাঠের কমান্ডারে পরিত করে। তিনি ১১০টি ডুয়েল জিতেছেন৮৪টি রিকভারি করেছেন৫৬টি ইন্টারসেপশন ও ৩৭টি ক্লিয়ারেন্স করেছেন।

ইয়োল ফান নিফ (মুম্বই সিটি এফসি) এই মরশুমে সর্বাধিক ১৫৬ বার বল পুনরুদ্ধার করেছেন ইয়োল ফান নিফ। প্রতি ম্যাচে গড়ে ৯.৭ বার ফাইনাল থার্ডে বল প্রবেশ করিয়েছেনযা আউটফিল্ড খেলোয়াড়দের মধ্যে চতুর্থ সেরা। মুম্বই সিটি এফসির হয়ে এটি তাঁর দ্বিতীয় মরশুম, যেখানে তিনি ২০০+ ফাইনাল থার্ড এন্ট্রি করেছেন।

মহম্মদ আলি বেমামের (নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি) নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসির প্লে-অফে যোাগ্যতা অর্জনে বড় ভূমিকা ছিল এই মরক্কান মিডফিল্ডারের। গড়ে ৩৯টি পাস২৩টি গোলের সুযোগ তৈরি৯৭টি ডুয়েল জয় ও ১৩৭টি রিকভারি করেছেন তিনি।

লালেংমাউইয়া রালতে আপুইয়া (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট) অপুইয়া নামে পরিচিত এই মিজো মিডফিল্ডার দলটির মাঝমাঠে শক্তি সঞ্চার করেছেন। প্রতিপক্ষের আক্রমণ ভেস্তে দেওয়ার পাশাপাশি ট্রানজিশনে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি গড়ে ৪৬টি পাস১১৮টি ডুয়েল জয় ও ১৩৩টি রিকভারি করেছেন।

রাইট সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার:

কোনর শিল্ডস (চেন্নাইন এফসি) ২০২৪-২৫ মরশুমে সর্বোচ্চ ৭৬টি চান্স তৈরি করেছেন শিল্ডস। এর মধ্যে ৮টি অ্যাসিস্ট করেছেনযা লিগে এই মরশুমে সর্বোচ্চ। ২১৮টি ক্রস করে লিগের ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, যিনি এক মরশুমে ২০০+ ক্রস করেছেন।

গ্রেগ স্টুয়ার্ট (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট) মেরিনার্সদের জোড়া আইএসএল খেতাব জয়ে মুখ্য ভূমিকা ছিল এই স্কটিশ প্লেমেকারের। ৮টি গোল অবদান ও ৩৯টি সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি

ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ (এফসি গোয়া)এই উদীয়মান তরুণ মিডফিল্ডার এই মরশুমে দুর্দান্ত পারফর্ম করে মরশুমের সেরা উদীয়মান ফুটবলারের খেতাব জিতেছেন। ৭টি গোল ও ২টি অ্যাসিস্ট করেছেন২৭টি সুযোগও তৈরি করেছেন তিনি

বোরহা হেরেরা (এফসি গোয়া) আরেকজন গুরুত্বপূর্ণ মিডফিল্ডারযিনি গোয়ার আক্রমণে গতি এনেছেন। দলের ১০টি গোলে তাঁর অবদান রয়েছে।

লেফট সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার:

হাভিয়ে হার্নান্দেজ (জামশেদপুর এফসি) ৯টি গোল ও ৩টি অ্যাসিস্ট-সহ মোট ১২টি গোল অবদান রেখেছেন হাভি। ১৪৮ বার বল পুনরুদ্ধার করেছেনযা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

হুগো বুমৌস (ওডিশা এফসি) ৭টি অ্যাসিস্ট দিয়ে লিগে ওডিশা এফসির ইতিহাসে একক মরশুমে সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টের নজির গড়েছেন। এছাড়াও ১৫৯টি প্রগ্রেসিভ ক্যারি রয়েছে তাঁর। 

এজেকিয়েল ভিদাল (পাঞ্জাব এফসি) এই আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ৭টি গোল ও ৩টি অ্যাসিস্ট করেছেন এবং শেরদের আক্রমণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

আলবার্তো নগুয়েরা (বেঙ্গালুরু এফসি) ৭৭টি ফ্রি কিক আদায় করে এবং ১৭৬টি গ্রাউন্ড ডুয়েল জিতে লিগ ইতিহাসে একক মরশুমে সর্বোচ্চ রেকর্ড করেছেন।

(তথ্য: আইএসএল মিডিয়া)