কলকাতা: লিগ টেবলের শীর্ষে টিকে থাকার লড়াই জমে উঠেছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও বেঙ্গালুরু এফসি-র মধ্যে। একদিন মোহনবাগানকে এক নম্বরে দেখা যাচ্ছে তো অন্য দিন দেখা যাচ্ছে বেঙ্গালুরুকে। এই অবস্থায় এই দুই দলের কেউ যদি একটা ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করে, তা হলে সে অবধারিত ভাবে শীর্ষে থাকার লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়বে। এ দিকে ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে নর্থইস্ট ইউনাইটেড, পাঞ্জাব এফসি। তাই এই সময়ে ড্র করলেও তা হারের সমান হয়ে উঠতে পারে। তাই শনিবার ঘরের মাঠে চেন্নাইন এফসি-র বিরুদ্ধে জয় ছাড়া কিছু ভাবছেই না সবুজ-মেরুন বাহিনী।
গত পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে চারটিতেই জিতেছে গতবারের লিগশিল্ড জয়ীরা। একটিতে ড্র করেছে তারা। অর্থাৎ, গত পাঁচ ম্যাচে তাদের কেউ হারাতে পারেনি। চলতি মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসি ছাড়া আর কেউই হারাতে পারেনি মোহনবাগানকে। মুম্বই সিটি এফসি এবং ওডিশা এফসি ড্র করেছে তাদের বিরুদ্ধে। বাকি পাঁচটি ম্যাচেই জিতেছে হোসে মোলিনার দল। গোলপার্থক্যেও (৮) শীর্ষস্থানীয় দুই দল একই জায়গায়। তাই এক নম্বর জায়গাটা ধরে রাখতে মোহনবাগানের সামনে জয় ছাড়া আর কোনও রাস্তা নেই।
শনিবার ঘরের মাঠে যাদের বিরুদ্ধে নামছে বাগান-বাহিনী, সেই চেন্নাইন এফসি-র সামনেও সেরা ছয়ে ঢোকার তাগিদ। তাদের সঙ্গে আবার ওডিশা এফসি-র জোর লড়াই। দুই দলেরই সংগ্রহ নয় ম্যাচে ১২। গোলপার্থক্যে এগিয়ে থাকায় (৫-১) ওডিশা ছয় নম্বরে এবং চেন্নাইন সাতে। শনিবার হারলে এই দৌড়ে বেশ খানিকটা পিছিয়ে যাবে ওয়েন কোইলের দল। তাই শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তাদেরও জয় চাই।
মোহনবাগান শিবিরের চোট-সমস্যা অনেকটাই মিটে গিয়েছে। জাতীয় শিবিরে গিয়ে চোট পাওয়া আশিস রাই এবং স্কটিশ মিডফিল্ডার গ্রেগ স্টুয়ার্ট দু’জনেই ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় চলে এসেছেন। কোচ হোসে মোলিনা নিজেই এই খবর জানিয়ে দেন শুক্রবার। নিয়মিত অনুশীলনও করছেন তাঁরা। গত ম্যাচে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে আশিসের জায়গায় খেলা দীপেন্দু বিশ্বাসকে শনিবারের ম্যাচে দেখা যাবে কি না, সেটাই প্রশ্ন। গত ম্যাচে যথেষ্ট ভাল খেলেছেন দীপেন্দু। রক্ষণের এই কম্বিনেশনে কোনও গোলও খায়নি দল। তাই তাঁকে শুরু থেকে কোচ নামালেও নামাতে পারেন।
গ্রেগ স্টুয়ার্ট ম্যাচফিট থাকলে তিনিই যে ফের জেমি ম্যাকলারেনের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রতিপক্ষের এলাকায় আক্রমণে ঝড় তুলবেন, এমন সম্ভাবনাই বেশি। গত ম্যাচে স্টুয়ার্টের জায়গায় দিমিত্রিয়স পেট্রাটস খেললেও কোনও গোল বা অ্যাসিস্ট করতে পারেননি। অবশ্য পাঁচটি গোলের সুযোগ তৈরি করেছেন এবং ১১টি ক্রস দিয়েছেন। তাঁর ৯১ শতাংশ পাস নিখুঁত ছিল। কিন্তু দল তিন-তিনটি গোল করলেও একটিতেও তাঁর অবদান না থাকায় তাঁকে ফের রিজার্ভ বেঞ্চে ফিরে যেতে হতে পারে।
গত শনিবার সারা ম্যাচে দাপুটে ফুটবল খেলে প্রতিবেশী রাজ্যের দল জামশেদপুর এফসি-কে কার্যত কোণঠাসা করে রাখে মোহনবাগান এসজি। সারা ম্যাচে যেখানে আটটি শট গোলে রাখে সবুজ-মেরুন বাহিনী, সেখানে দু’টির বেশি শট লক্ষ্যে রাখতে পারেনি ইস্পাতনগরীর দল। ৬৪ শতাংশ বল তাদেরই দখলে ছিল। ডিফেন্ডার টম অলড্রেড, উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো ও অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড ম্যাকলারেনের গোলে জেতে তারা।
আইএসএলে দুই দল মুখোমুখি হয়েছে আটবার। তিনটিতে জিতেছে কলকাতার দল। দু’টিতে চেন্নাইন এফসি। বাকি তিনটি ড্র হয়েছে। দুই দলের মধ্যে ম্যাচে মোট ১৬টি গোল হয়েছে। ন’টি দিয়েছে কলকাতার দল ও সাতটি চেন্নাইন এফসি। তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল