কলকাতা: রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে জেসন কামিংস ও সহাল আব্দুল সামাদের গোলে জিতে ফাইনালের টিকিট জিতে নেয় গতবারের কাপ চ্যাম্পিয়নরা। বেঙ্গালুরু এফসি-র পর এই প্রথম কোনও দল পরপর দু’বার ফাইনালে উঠল। বেঙ্গালুরু ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ মরশুমে ফাইনালে উঠেছিল। প্রথমবার তারা চেন্নাইন এফসি-র কাছে হেরে গেলেও পরের বার জিতে চ্যাম্পিয়ন হয়। কিন্তু মোহনবাগানের সামনে পরপর দু’বার কাপ জিতে অনন্য নজির গড়ার সুযোগ।

এই নিয়ে আইএসএলের চারটি মরশুমের মধ্যে তিনটিতেই ফাইনালে উঠল মোহনবাগান। প্রথমবারই আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের প্রশিক্ষণে ফাইনালে উঠে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হেরে যায় তারা। কিন্তু গত মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসি-কে হারিয়ে কাপ জিতে নেয় কলকাতার ঐতিহ্যবাহী দল। এ বার ফের কাপ জয়ের সুযোগ তাদের সামনে। এই সাফল্য নিয়ে আশাবাদী তো বটেই আত্মবিশ্বাসীও সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলাররা।

রবিবারের ম্যাচের প্রথম গোলদাতা জেসন কামিংস indiansuperleague.com কে বলেন, ''আমাদের বিশ্বাস, আমরা আইএসএল কাপ জিততে পারি। আমাদের এই মরশুমটা ভাল যাচ্ছে। ত্রিমুকুট জয়ের জন্য অবশ্যই চেষ্টা করব। শিবিরের প্রত্যেকের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। আমাদের অনুশীলনে ফিরতে হবে, ফাইনালের জন্য প্রস্তুত হতে হবে এবং নিজেদের উজাড় করে দিতে হবে।''


রবিবার দেড় মাস পর মাঠে নেমে বাড়তি সময়ে গোল করে যিনি দলকে ফাইনালে উঠতে সাহায্য করেন, সেই সহাল আব্দুল সামাদ তাঁর গোলটি উৎসর্গ করেন তাঁর স্ত্রী-কে। বলেন, ''আজকের গোলটা আমার স্ত্রীকে উৎসর্গ করতে চাই। অনেক দিন পরে মাঠে ফিরলাম। এত দিন ধরে সমানে ও আমার পাশে ছিল। ওকে ধন্যবাদ। গোল করতে পারলে যে কোনও ফুটবলারই আত্মবিশ্বাস পায়। বিশেষ করে আমার মতো ফুটবলার। মাঠে ফিরে এ ভাবে দলকে সাহায্য করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।''


আইএসএলের প্লে অফে সহালের এটি দ্বিতীয় গোল। প্রথমটি করেছিলেন ২০২২-এর মার্চে জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে, যখন তিনি কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়ে খেলতেন। সমর্থকদের প্রশংসা শোনা যায় তাঁর মুখেও। বলেন, ''এই জয়টা আমাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তুলবে। সমর্থকেরা অবিশ্বাস্য সমর্থন করেছে। প্রথম মিনিট থেকে ওরা আমাদের পাশে ছিল। তার প্রতিদানে এর চেয়ে ভাল উপহার আর কীই বা হতে পারে? আর একটা ম্যাচ বাকি এবং এটাই সবচেয়ে কঠিন হতে চলেছে। জানি না বিপক্ষে কারা থাকবে। তবে আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করার জন্য তৈরি।''


দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্ট্রাইকার ও প্লেমেকার দিমিত্রিয়স পেত্রাতস বলছেন, ''ট্রফিটা আমাদের চাই। এর জন্যই তো এত লড়াই করছি। আজ ওডিশাকে হারিয়েছি। আর একটা ম্যাচ বাকি। রিকভারির পর আমাদের ফোকাস একটা জিনিসেই থাকবে, পরের ম্যাচে জেতা।''


সেমিফাইনালের প্রথম লেগে হেরে যাওয়ার পরেও দ্বিতীয় লেগে যে ভাবে ঘুরে দাঁড়াল মোহনবাগান এসজি, সে জন্য গর্বিত তাদের অধিনায়ক শুভাশিস বোস। বলেন, ''এই ঘুরে দাঁড়ানোটা দুর্দান্ত হয়েছে আমাদের। কঠিন সময়ে মোহনবাগান সব সময়ই ঘুরে দাঁড়ায়। সতীর্থদের ধন্যবাদ। এ বার ফাইনালে জিততে হবে আমাদের। খুব চেষ্টা করব। ভুবনেশ্বরে আগের ম্যাচের পরও বলেছিলাম আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আছে এবং আমরা তা করে দেখিয়েছি। অধিনায়ক হিসেবে এই দলের জন্য আমি গর্বিত।''                                                                           তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল