বেঙ্গালুরু: ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ফাইনাল ৪ মে। কিন্তু তার আগে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আর এক অঘোষিত ফাইনাল হতে চলেছে আগামী সোমবার, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও মুম্বই সিটি এফসি-র মধ্যে। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে আইএসএলের ইতিহাসে তাদের সবচেয়ে বড় জয়টি অর্জন করে সেই ফাইনালেরই দামামা বাজিয়ে দিল সবুজ-মেরুন বাহিনী। 


রীতিমতো দাপুটে ফুটবল খেলে সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসি-কে ৪-০-য় হারিয়ে তাদের লিগ টেবলের দশ নম্বরে নামিয়ে দিল মোহনবাগান। সুনীল ছেত্রীর পেনাল্টি মিস করার মাশুল তাদের চরম ভাবে দিতে হয় এ দিন। মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে নামার আগে এই ম্যাচ থেকে প্রচুর আত্মবিশ্বাস জোগাড় করে নিল বাগান-বাহিনী এবং মুম্বইয়ের দলও বুঝে নিল, তাদের লিগ শিল্ড জয়ের রাস্তা বেশ কঠিন হয়ে উঠতে চলেছে। 


মোহনবাগানের সামনেও লড়াইটা বেশ কঠিন। কারণ, এই ম্যাচে হারলে শুধু যে লিগশিল্ড হাতছাড়া হবে, তা-ই নয়, এফসি গোয়া ও মুম্বই তাদের শেষ ম্যাচে জিতলে সেরা দুইয়েও থাকতে পারবে না তারা। কারণ, গোয়ার দলের সঙ্গে দুই মুখোমুখির পরিসংখ্যানে পিছিয়ে রয়েছে সবুজ-মেরুন বাহিনীই। 


এ দিন প্রচুর মোহনবাগান সমর্থকে ভরা কান্তিরাভায় প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র ন’মিনিটের মধ্যে তিন-তিনটি গোল করে লিগ শিল্ডের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল গতবারের নক আউট চ্যাম্পিয়নরা। ১৭ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলটি করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর ইউস্তে। দ্বিতীয়ার্ধে ৫১ থেকে ৫৯ মিনিটের মধ্যে পরপর তিন গোল করে দলের জয় সুনিশ্চিত করেন যথাক্রমে মনবীর সিং, অনিরুদ্ধ থাপা ও আরমান্দো সাদিকু। এক গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ৪০ মিনিটের মাথায় পাওয়া পেনাল্টি হাতছাড়া করেন বেঙ্গালুরু এফসি-র অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। এই ভুলের বড় মাশুল দিতে হয় সুনীলের দলকে। 


আইএসএলের ইতিহাসে তাদের সবচেয়ে বড় জয়ের ফলে ২১ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের দু’নম্বরে মোহনবাগান এসজি। একই সংখ্যক ম্যাচে ৪৭ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে মুম্বই সিটি এফসি। এ মরশুমে এর আগে মোহনবাগান দু’টি ম্যাচে চার গোল করলেও ক্লিন শিট রাখতে পারেনি। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এটিই সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় তাদের।  


অনিরুদ্ধ থাপা, আমনদীপ ভান ও আরমান্দো সাদিকুকে যথাক্রমে দীপক টাঙরি, আশিস রাই ও জেসন কামিংসের জায়গায় প্রথম এগারোয় রেখে দল নামায় মোহনবাগান এসজি। অন্যদিকে, বেঙ্গালুরুর হয়ে এ দিন শুরু থেকেই নামেন সুনীল ছেত্রী। লিগের শেষ ম্যাচ বলেই হয়তো এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি। 


শুরু থেকেই এ দিন উত্তেজনায় ভরপুর ছিল ম্যাচ। প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যেই তিনবার হলুদ কার্ড বের করতে হয় রেফারিকে। মোহনবাগানের তরুণ ডিফেন্ডার আমনদীপ, বেঙ্গালুরুর গোলকিপার গুরপ্রীত সান্ধু ও বেঙ্গালুরুর কোচ জেরার্ড জারাগোজাকে হলুদ কার্ড দেখানো হয় এই সময়ে। প্রথমার্ধে সব মিলিয়ে পাঁচবার হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। সারা ম্যাচে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় সাত।  


                      তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল মিডিয়া