কলকাতা: কলকাতা শহরের দুই শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব, যাদের অনায়াসে প্রতিবেশী বলা যায়, তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও যে বহুকালের, তা বলাই বাহুল্য। ১৮৮৯-এ মোহনবাগান ক্লাবের প্রতিষ্ঠার দু’বছর পর ১৮৯১-এ শুরু মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পথচলা। কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনে প্রথম ১৯৩৩-এ অংশ নেওয়ার এক বছর পরই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় মহমেডান এসসি, যে পালক মোহনবাগানের মুকুটেও তখন ছিল না। সেই সময় থেকেই মোহনবাগানের সঙ্গে তাদের ফুটবল দ্বৈরথ। যা জাতীয় স্তরের ফুটবলে গত কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর ফের শুরু হতে চলেছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে। শনিবার, বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সেই ফুটবল-যুদ্ধ, যা আর এক কলকাতা ডার্বি।
পিছিয়ে সবুজ-মেরুন বাহিনী!
জয়, ড্র, হার ও পয়েন্টের দিক থেকে দুই দলই একই জায়গায় থাকলেও গোল পার্থক্যে ময়দানের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবকে পিছনে ফেলে দিয়েছে মহামেডান এসসি। তিন ম্যাচে তারা যেখানে দু’গোল দিয়ে দু’গোল খেয়েছে, সেখানে সবুজ-মেরুন বাহিনী পাঁচ গোল দিলেও খেয়েছে সাতটি গোল। চলতি লিগে এত গোল আর কোনও দলই এখন পর্যন্ত হজম করেনি। লিগ তালিকার শেষে থাকা ইস্টবেঙ্গল যেখানে ছ’গোল খেয়েছে, ১২ নম্বরে থাকা হায়দরাবাদ এফসি যেখানে পাঁচ গোল খেয়েছে, সেখানে মোহনবাগানের এই সাত গোল খাওয়াটা বেশ অপ্রত্যাশিত।
রক্ষণ, আক্রমণে দুর্বলতা
এই অন্ধকার থেকে নিজেদের বের করে আনতে গেলে মোহনবাগানের সামনে এখন জয় ছাড়া কোনও সোজা রাস্তা নেই। কিন্তু গত ম্যাচে যে ভাবে বেঙ্গালুরু এফসি-র কাছে ০-৩-এ হেরেছে তারা, তা গতবারের শিল্ড চ্যাম্পিয়নদের পক্ষে বেশ আশঙ্কাজনক। দলের মধ্যে যে এখনও সঠিক বোঝাপড়া গড়ে ওঠেনি, তা সে দিনের ম্যাচের পারফরম্যান্স দেখেই বোঝা গিয়েছে। রক্ষণ, মাঝমাঠ, আক্রমণ—কোনও বিভাগেই চেনা ছন্দে পাওয়া যাচ্ছে না মোলিনার মোহনবাগানকে। এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে ৩০টি গোলের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছেন সবুজ-মেরুন শিবিরের ফুটবলাররা। গোলের সর্বোচ্চ সুযোগ তৈরি করেছে যে দলগুলি, তাদের তালিকায় মোলিনার দল রয়েছে সাত নম্বরে। এর মধ্যে গোল হয়েছে মাত্র পাঁচটি থেকে। সবচেয়ে বেশি গোল করেছে যারা, সেই বেঙ্গালুরু এফসি চারটি ম্যাচে ৩১টি গোলের সুযোগ তৈরি করে সাতটি গোল করেছে। মোহনবাগানের পক্ষে এই পরিসংখ্যান বেশ বেমানান। আইএসএলে এর আগে প্রথম তিন ম্যাচের পর তাদের গোল-পার্থক্য কখনও নেতিবাচক থাকেনি। এ বার সেটাই দেখা যাচ্ছে।
পরিসংখ্যান বলছে
আইএসএলে মোহনবাগান হেড কোচ হোসে মোলিনা মোট যতগুলি ম্যাচে দল নামিয়েছেন, তার ৫৫ শতাংশই ড্র হয়েছে (২০ ম্যাচে ৬টি জয়, ১১টি ড্র, ৩টি হার)। আইএসএলে আর কোনও কোচের দলের এত বেশি ড্রয়ের রেকর্ড নেই। প্রথম কোনও দলের মুখোমুখি হয়ে তাঁর দল আটটির মধ্যে মাত্র দু’টিতে হেরেছে, তিনটি করে জিতেছে ও ড্র করেছে।
ম্যাচ- মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট বনাম মহমেডান এসসি
ভেনু- বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, কলকাতা
কিক অফ- ৫ অক্টোবর, ২০২৪, সন্ধ্যা ৭.৩০
সরাসরি সম্প্রচার ও স্ট্রিমিং
স্পোর্টস ১৮-৩- বাংলা, স্পোর্টস ১৮ খেল ও স্পোর্টস তথ্য সংগ্রহ: আইএসএল